নিজস্ব প্রতিবেদক: জমি কেনাবেচার সময় সরকারকে রাজস্ব ফাঁকি দিতে গিয়ে জমির মূল্য কম করে উল্লেখ করা হয় দলিলে। কিন্তু সেই জমিই যখন সরকার অধিগ্রহণ করে তখন দলিলের মূল্য অনুযায়ী জমির মালিক ক্ষতিগ্রস্ত হন। মনে রাখতে হবে, সরকার প্রয়োজন বোধে যে কোন সময় যে কোন জমি অধিগ্রহণ করতে পারে। ‘রাজস্ব ফাঁকি দিতে দলিলে কম মূল্য লেখা মানে নিজেকেই ফাঁকিতে ফেলা’।
আজ বৃহস্পতিবার (১০ জুন) সকাল ১১ টায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন বিভাগীয় কমিশনার ড. হুমায়ুন কবীর। ভূমি সেবা সপ্তাহ উপলক্ষে আনুষ্ঠানিকভাবে ১৫ জন জমিদাতাদের মাঝে ভূমি অধিগ্রহণের চেক বিতরণ করা হয়।এসময় তিনি জমিদাতাদের কাছে নিজ হাতে চেক ও ই-পর্চা হস্তান্তর করেন।
এছাড়াও তিনি আরও জানান, আমাদের দেশে আইন-শৃঙ্খলা ও ভূমি সেবা নিয়ে নানা সমালোচনা রয়েছে। তবে বর্তমান সরকারের নানামুখী উদ্যোগের ফলে ভূমি সেবার ক্ষেত্রে হয়রানি কমেছে অনেক গুণ। এরই অংশ হিসেবে আজকে ১৫ জন জমিদাতাদের মাঝে দুই কোটি ৮০ লাখ ৬৮ হাজার ২০৫ টাকার চেক বিতরণ করা হলো।
তিনি আরো বলেন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে সবাই যদি প্রতিবাদ করি, তাহলে দুর্নীতি থেমে যাবে। কিন্তু প্রতিবাদ না করে দুর্নীতি মেনে নেয়াটাও অন্যায় এবং সেক্ষেত্রে দুজনেই সমান দোষে দোষী। তাই এ ব্যাপারে সবাইকে সচেতন হবার আহ্বান জানান বিভাগীয় কমিশনার ড. হুমায়ুন কবীর।
জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিল বলেন, ভূমি অধিগ্রহণের টাকা অনেকদিন ধরেই আটকে ছিল। তিনি উদ্যোগী হয়ে চেকগুলো দ্রুত ছাড়ার ব্যবস্থা করেন। রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন, রাজশাহী ওয়াসা এবং রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (আরডিএ) উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য এই ১৫ জন ব্যক্তির জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছিল। তাদের চেক পাবার ক্ষেত্রে কারও কোন হয়রানি হয়নি। এ নিয়ে কেউ তাঁর কাছে অভিযোগ করেননি বলে জানান তিনি।
জেলা প্রশাসক আবদুল জলিল এর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (রাজস্ব) ড. আবদুল মান্নান। অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মুহাম্মদ শরিফুল হক, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আবু আসলাম ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) নজরুল ইসলাম প্রমুখ।
রাজশাহী নগরীর বাসিন্দা গণেশ চন্দ্র ঘোষের জমি সরকার অধিগ্রহণ করেছে সরকার। অধিগ্রহণের চেক নিতে গিয়ে গণেশ বলেন, পুলিশ লাইনের কাজের জন্য তাঁর জমি অধিগ্রহণ করেছে সরকার। টাকা পেতে কিছুটা দেরি হলেও তাঁর কোন ভোগান্তি হয়নি। কোথাও তাঁকে ঘুষও দিতে হয়নি। গণেশ পেয়েছেন ৯৮ লাখ ৫৫ হাজার ৪৫০ টাকা।
এছাড়াও নগরীর দড়িখড়বোনা এলাকার বাসিন্দা খোদেজা ইউনুস বললেন, তিনিও ঠিকঠাকমত চেক বুঝে পেলেন। চেকের জন্য তাঁকেও কোথাও ঘুষ দিতে হয়নি। খোদেজা পেয়েছেন ৪১ লাখ ২২ হাজার ৯১৩ টাকার চেক।