এস.আর. ডেস্ক: হঠাৎ আলোচনায় ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদ। চিত্রনায়িকা পরীমনিকে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলার প্রধান আসামি তিনি। ইতিমধ্যে তিনি ধরা পড়েছেন গোয়েন্দা পুলিশের জালে। পুলিশ বলছে, এই ব্যবসায়ী বিভিন্ন উঠতি বয়সী মেয়েদের রক্ষিতা হিসেবে রাখতেন। রাজধানীর উত্তরা ১ নম্বর সেক্টরে এই মামলার আরেক আসামি অমির বাসায় তিন রক্ষিতাসহ আত্মগোপনে ছিলেন। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে আজ সোমবার দুপুরে অভিযান চালিয়ে নাসিরকে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ।
অভিযান শেষে সংবাদ সম্মেলন এসব তথ্য জানান ডিবির যুগ্ম কমিশনার হারুন অর রশিদ। সেখানে তিনি নাসিরদের বিস্তারিত তুলে ধরেন। ঢাকা বোট ক্লাবে নায়িকা পরীমনিকে হত্যাচেষ্টা ও তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার অভিযোগে এর আগে সাভার থানায় একটি মামলা হয়। সে কথা জানিয়ে ডিবির যুগ্ম কমিশনার বলেন, ‘ওই মামলার ভিত্তিতে সাভার থানা আমাদের কাছে তদন্তের অনুরোধ জানায়। যেহেতু আসামিরা ঢাকা মহানগরে অবস্থান করছে, তাই তাদের গ্রেপ্তারের জন্য আমাদের অনুরোধ করে সাভার থানা। আমরা অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করেছি।’
অভিযানের একপর্যায়ে ডিবি পুলিশ গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে জানতে পারে উত্তরা ১ নম্বর রোডে ওই বাসায় ডিজে পার্টি হয়। হারুন অর রশিদ বলেন, ‘বাসাটায় আমরা অভিযান চালাই। সেখান থেকে সাভার থানায় দায়ের হওয়া মামলার দুই আসামিকে গ্রেপ্তারের পাশাপাশি আরো তিনজন নারীকে আটক করি। সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত পাঁচজন গ্রেপ্তার হয়েছে। উদ্ধার করা হয়েছে মাদক দ্রব্য।’ মাদক আইনে তাদের বিরুদ্ধে ডিএমপিতে মামলা করা হবে বলে জানান তিনি।
পরীমনি বাংলাদেশের একজন স্বনামখ্যাত নায়িকা। তাকে চলচ্চিত্রের অহংকার বলে অভিহিত করেন গোয়েন্দা পুলিশের এ কর্মকর্তা। তিনি বলেন, ‘পরীমনির ওপর নির্যাতনের অভিযোগ তদন্ত করা গোয়েন্দা কর্মকর্তা হিসেবে আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। তদন্ত করে আমরা তাদের গ্রেপ্তার করেছি। আমরা তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করব। প্রয়োজনে তাদের রিমান্ডে আনা হবে।’
নাসিরের বিরুদ্ধে পরীমনির অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে জানতে চাইলে যুগ্ম কমিশনার হারুন আর রশিদ বলেন, ‘আমরা পরীমনির সঙ্গে কথা বলব। আমরা তার অভিযোগও খতিয়ে দেখছি। যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাদের সঙ্গে আর কোনো রাঘববোয়াল আছে কি না, যারা রাতের অন্ধকারে বিভিন্ন উঠতি বয়সী তরুণীদের দিয়ে অসামাজিক কার্যক্রম চালায়, তদন্ত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আমাদের কমিশনারের নির্দেশ আছে। ঢাকার গুলশান-বানানীতে যেসব উঠতি বয়সী মেয়ে ডিজে পার্টির নামে ক্লাবে গিয়ে অনাচার করে, তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।
মাদক উদ্ধারের ঘটনায় বোট ক্লাবে অভিযান চালানো হবে কি না জানতে চাইলে যুগ্ম কমিশনার বলেন, ‘সাভার থানার মামলায় পাঁচজন গ্রেপ্তার হয়েছেন। এ ছাড়া মাদক উদ্ধার হয়েছে। মাদক মামলা তদন্তে বোড ক্লাবে অভিযান চালানো হবে। আরও যে আসামি আছে, তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে তারা মদের ব্যবসার সঙ্গে জড়িত বলে জানান ডিবির যুগ্ম কমিশনার। ‘নাসিরের বিরুদ্ধে অভিযোগ, মদের ব্যবসার পাশাপাশি তিনি বিভিন্ন ক্লাবে ছোট ছোট মেয়েদের রক্ষিতা রাখেন এবং ক্লাবে সে এই কাজগুলো করে। তাদের বিরুদ্ধে মৌখিকভাবে অনেক অভিযোগ আছে। এখন কেউ যদি আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ করেন সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে ডিবি।’