নিজস্ব প্রতিবেদক: কোভিড-১৯, করোনা ভাইরাসে যখন মানুষ ভয়ে বাড়ি থেকে বের হচ্ছে না। করোনায় আক্রান্ত আপনজন ও আত্মীয়স্বজননদের পাশে কেউ দাঁড়াচ্ছেনা। মরে গেলে লাশ দাফনের লোক পাওয়া যাচ্ছেনা। করোনায় আক্রান্ত সদস্যদের যখন আপনজনরা রাস্তায় ফেলে চলে যাচ্ছে। এ অবস্থায় বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা সার্বক্ষনিক মানুষের পাশে থেকে সেবা করে যাচ্ছেন। শুধু তাই নয় পুলিশ তাদের তুলে নিয়ে গিয়ে নিজ উদ্যোগে চিকিৎসা সেবা প্রদান অব্যাহত রেখেছেন।
রাজশাহী মেট্রোপলিন পুলিশও এর ব্যাতিক্রম নয়। বর্তমান পুলিশ কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিক এর দৃঢ় নেতৃত্বে এই করোনায় পুলিশ সদস্যরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। তারা প্রাণের মায়া বিসর্জন দিয়ে চব্বিশ ঘন্টা জনগণকে সেবা করে যাচ্ছেন। আজকে আবার সেবার আরেকটি মাত্রা যুক্ত হলো। তা হলো করোনায় আক্রান্তদের জন্য বিনামূলে অক্সিজেন সেবা। এ উপলক্ষে আরএমপিতে একটি অক্সিজেন ব্যাংক গঠন করা হয়। আজ মঙ্গলবার দুপুরে আরএমপি বর্তমান সদর দপ্তরে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এর শুভ উদ্বোধন করেন মানবতার সেবক রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিক।
এ সময়ে কমিশনার বলেন, সাধারণ জনগণ এবং দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যসহ বিভিন্ন পেশাজীবি কোভিড আক্রান্ত রোগীদের আরএমপি’র পক্ষ থেকে বিনা মূল্যে অক্সিজেন দেওয়ার লক্ষে আরএমপিতে ৫০(পঞ্চাশ)টি অক্সিজেন সিলিল্ডার দিয়ে গঠন করা হলো “পুলিশ কোভিড অক্সিজেন ব্যাংক”। অচিরেই এ সংখ্যা ১০০-তে উন্নীত হবে।
তিনি বলেন, হাসপাতালে অক্সিজেন অবকাঠামোগত প্রতিবন্ধকতার কারণে অনেক সময় অক্সিজেনের স্বল্পতা দেখা দেয়। এর পাশাপাশি অনেকের বাসা বাড়ীতে অক্সিজেনের প্রয়োজন হয়। বিভিন্ন কারণে তারা অক্সিজেন সংগ্রহ করতে পারে না। এ সব দিক বিবেচনায় মানবিক চিন্তাধারা প্রসূত পদক্ষেপের অংশ হিসেবে আরএমপি এ উদ্যোগ গ্রহণ করেছে বলে উদ্বোধনী বক্তব্যে তিনি উল্লেখ করেন। ।
উদ্বোধনীতে সাংবাদিকদের উদ্দেশ্য করে তিনি আরো বলেন, স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞগণের মতে করোনার সেকেন্ড ওয়েভ-এ আক্রান্ত রোগীদের প্রথম থেকেই শ্বাস কষ্টে অক্সিজেনের অভাব দেখা দেয়। এ সংকট থেকে সাধারণ জনগণ এবং দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যসহ বিভিন্ন পেশাজীবি কোভিড আক্রান্ত রোগীদের আরএমপি’র পক্ষ থেকে বিনা মূল্যে অক্সিজেন দেওয়ার লক্ষে আরএমপিতে পঞ্চাশটি অক্সিজেন সিলিল্ডার দিয়ে এ কার্যক্রমের যাত্রা শুরু হলো। দুই-এক দিনের মধ্যেই এ সংখ্যা ১০০-তে উন্নীত করা হবে। পর্যায়ক্রমে প্রয়োজন অনুসারে আরো অক্সিজেন সিলিন্ডার সংযোজন করা হবে উল্লেখ করেন তিনি।
তিনি বলেন, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাপসাতাল ব্যতীত রাজশাহী’র অন্যান্য হাসপাতাল ও ক্লিনিকসমূহে সেন্ট্রাল অক্সিজেন নেই। হাসপাতালে অক্সিজেন সিস্টেম চালু করতে সময় লাগবে অন্তত পক্ষে ২ থেকে ৩ মাস।
তবে এ নিয়ে আর দুশ্চিন্তা নয় কোভিড আক্রান্ত হয়ে শ্বাসকষ্টে কেউ ভুগছেন এমন সংবাদ আরএমপি’র কন্ট্রোল রুম মোবাঃ নং-০১৩২০-০৬৩৯৯৮-এ জানালে আরএমপি‘র পক্ষ থেকে বাড়ীতে গিয়ে অক্সিজেন সিলিন্ডারসহ উপস্থিত হয়ে স্বেচ্ছা প্রণোদিতভাবে এ সেবা সম্পূর্নরূপে বিনা মূল্যে প্রদান করা হবে বলে জানান এই মানবতার সেবক পুলিশ কমিশনার। তিনি আরো বলেন, কনস্ট্রেবল, এএসআই, এসআই ও ইন্সপেক্টর পদের ১০ জনকে প্রাথমিক পর্যায়ে এ অক্সিজেন সিলিন্ডার ব্যবহার, সিলিন্ডার স্পিড মাত্রা নির্ধারণ, রিফিল ইত্যাদি রপ্ত করানো হয়েছে। তাদের সংখ্যা বাড়ানো হবে। তাদের প্রশিক্ষণ দেয়া হবে। যেকোন স্বেচ্ছাসেবক প্রতিষ্ঠানের সদস্যগণও আরএমপি’র এই প্রশিক্ষণ বিনা মূল্যে গ্রহণ করতে পারবেন বলে জানান কমিশানর।
এসময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (প্রশাসন) সুজায়েত ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম এন্ড অপারেশন) মজিদ আলী বিপিএম, উপ-পুলিশ কমিশনার (সদর) রশীদুল হাসান পিপিএম ও উপ-পুলিশ কমিশনার (বোয়ালিয়া) সাজিদ হোসেনসহ আরএমপি’র সকল থানার অফিসার ইনচার্জগণ ও উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ।