পরকীয়ার জেরে কুষ্টিয়া শহরে প্রকাশ্যে স্ত্রী আসমা খাতুন, সৎ ছেলে রবিন ও যুবক শাকিল খানকে গুলি করে হত্যা করে এএসআই সৌমেন রায়। নিহত আসমা মুসলিম এবং সৌমেন ছিলেন হিন্দু সম্প্রদায়ের। মুসলিম বিধান মতে আসমাকে বিয়ে করেন সৌমেন রায়। সে সময় নিজেকে মো. সুমন হোসেন বলে পরিচয় দেন তিনি। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ট্রিপল মার্ডারের ঘটনায় নিহত আসমার মা হাসিনা বেগম।
নিহত আসমা খাতুনের মা হাসিনা বেগম বলেন, কুমারখালী থানায় চাকরিরত থাকার সময় এএসআই সৌমেনের সঙ্গে একটি মামলাকে কেন্দ্র করে আসমার পরিচয় হয়। তারপর আমার পরিবারের সঙ্গে সৌমেনের গভীর সম্পর্ক হয়। সৌমেন-আসমা প্রেমের সম্পর্কে জড়ান। সে সময় সৌমেন তার নাম মো. সুমন হোসেন রাখেন এবং সুমন নামেই মুসলিম বিধান মতে আসমাকে বিয়ে করেন। বিয়ের পর থেকেই কুষ্টিয়ার আড়ুয়াপাড়ায় একটি ভাড়া বাসায় তারা বসবাস করছিল।
এদিকে ট্রিপল মার্ডার মামলায় দণ্ডবিধির ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন অভিযুক্ত এএসআই সৌমেন কুমার রায়। সোমবার (১৪ জুন) বিকেলে কুষ্টিয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. এনামুল হকের আদালতে তিনি এ স্বীকারোক্তি দেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কুষ্টিয়া মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) নিশিকান্ত সরকার বলেন, নিহত আসমা খাতুনের মা হাসিনা খাতুন বাদী হয়ে রোববার হত্যা মামলা করেছেন। আসামি সৌমেনকে দুপুরে আদালতে নেওয়া হয়। তাকে ১০ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করা হয়েছিল। কিন্তু আদালত রিমান্ড নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার খায়রুল আলম বলেন, ঘটনা জানার পর সৌমেন রায়কে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এরপর তদন্ত শেষে তার বিরুদ্ধে সর্বশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নিহতদের পারিবারিক সূত্র জানায়, সোমবার বাদ জোহর নিহত আসমা খাতুন ও তার ছেলে রবিনের জানাজা শেষে নিজ গ্রাম কুমারখালীর বাগুলাট ইউনিয়নের নাতুড়িয়া কবরস্থানে দাফন সম্পন্ন করা হয়। অন্যদিকে নিহত শাকিল খানের নিজ গ্রাম কুমারখালী উপজেলার চাপড়া ইউনিয়নের সাঁওতা কারিগরপাড়া গ্রামের মেছের উদ্দিন দারুল উলুম কওমি মাদরাসায় বাদ জোহর জানাজা শেষে সাঁওতা কারিগরপাড়া গোরস্থানে দাফন করা হয়।