নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালে যারা মারা যাচ্ছেন তাদরে মধ্যে বেশীরভাগ ডেল্টা ভেরিয়েন্টে আক্রান্ত বলে মনে করছেন চিকিৎসকরা। আর করোনায় আক্রান্ত হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগিদের ৪০ ভাগ মানুষ গ্রামাঞ্চলের বলছেন হাসপাতাল পরিচালক। রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় মৃত্যুর হারও কমছে না বলে জানান হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
কারণ গ্রামের মানুষ করোনাকে কিছুই মনে করে না। না পড়ে তারা মাস্ক, না রাখে সামাজিক দুরত্ব। এছাড়াও সরকারীভাবে সভা-সমাবেশ ও জনসমাগম নিষিদ্ধ করা হলেও গ্রামাঞ্চলে অবাধে চলছে বিয়েসহ অন্যান্য সামাজিক অনুষ্ঠান। সেইসাথে চলে চায়ের স্টলে আড্ডা। এই বাস্তবতায় গ্রামাঞ্চলে সংক্রমণের হার প্রতিনিয়ত বেড়ে যাচ্ছে বলে জানান চিকিৎসকগণ।
এই সংক্রমনের বিস্তার ঠেকাতে শহরের পাশাপাশি গ্রামাঞ্চলেও বিধিনিষেধ আরোপের পরামর্শ দিয়েছেন তাঁরা। লকডাউনের সুফল পেতে ৭ দিন নয়, অন্তত ১৪ দিনের লকডাউনের পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎকরা। এদিকে গ্রামাঞ্চলে করোনার প্রকোপ ছড়িয়ে পড়ায় শঙ্কিত স্থানীয় প্রশাসনও। এই সংক্রমন ঠেকাতে বুধবার জরুরী বৈঠকের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেয়ার কথা বললেন জেলা প্রশাসক। লকডাউনের পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানানো হবে আজ বুধবার রাত সাড়ে ৮টায় নগরীর সার্কিট হাউজে আলোচনা মাধ্যমে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিল।
এদিকে হাসপাতাল কর্তপক্ষ জানাচ্ছেন, করোনা এখন শুধু শহরেই নয়, বিস্তার ঘটিয়েছে গ্রামাঞ্চলেও। তাই বাড়ছে আক্রান্তের হার, বাড়ছে রোগী ভর্তির সংখ্যাও। নতুন করে এই হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আরো ৫৮ জন। গতকাল মঙ্গলবার রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে করোনা ইউনিটে প্রাণ হারিয়েছেন ১২ জন। এদের মধ্যে ৭ জন পুরুষ ও ৫ জন নারী।
আজও রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে করোনা ইউনিটে ২৪ ঘণ্টায় আরও ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে আজ বুধবার সকাল ৮টা পর্যন্ত সময়ের মধ্যে তাঁরা মারা যান। রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী জানান, মৃত ১৩ জনের মধ্যে ৫ জন করোনা পজিটিভ ছিলেন। অন্য ৮জন মারা গেছেন করোনার উপসর্গ নিয়ে। করোনা পজিটিভ ৫ জনের মধ্যে রাজশাহীর ৩জন এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জের ২জন রোগী ছিলেন। উপসর্গ নিয়ে রাজশাহীর ৫জন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের ২জন এবং কুষ্টিয়ার একজন মারা গেছেন।
হাসপাতাল পরিচালক বলছেন, মৃতদের বেশিরভাগই ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা বেশি। কেননা বয়স্ক মানুষের সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে তরুণদের মৃত্যুর হারও। রোগীর চাপ সামলাতে হাসপাতালের আইসিইউ ইউনিটসহ মোট ১৩টি ওয়ার্ডে চলছে করোনা রোগীর চিকিৎসা। প্রস্তুত করা হচ্ছে আরো একটি ওয়ার্ড।
বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালকের কাছে চাওয়া হয়েছে আরও ১৫ জন চিকিৎসক। এই অবস্থা আর কিছু চললে চিকিৎসা প্রদান কষ্টকর হয়ে পড়বে। সেইসাথে ভারতের ন্যায় অবস্থাও হতে পারে। এখই কার্যকর ব্যবস্থা নেয়ার জন্য প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষন করেন তিনি।