বুধবার, ২১ মে ২০২৫, ০২:৪২ পূর্বাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ
রাজশাহীতে বিশ্ব মেট্রোলজি দিবস পালন পবায় বিশ্ব মৌ-পতঙ্গ সুরক্ষার দাবিতে কৃষকবন্ধন রাজশাহী জেলা বিএনপি’র সদস্য মুন্টুকে কমিটি গঠনের সদস্য পদ থেকে অপসারনের দাবী গোদাগাড়ীর কাঁকনহাট হাট-বাজার টাকা পরিশোধ ছাড়াই ইজারা দেয়ার অভিযোগ রাজশাহী মহানগীর ১৯নং ওয়ার্ড(উত্তর-দক্ষিণ) যুবদলের কর্মী সভা মোহনপুরে বিএনপি নেতা ইউনুচ আলীর মায়ের ইন্তেকাল রাজশাহীর দুইটি ফেরীঘাটে ইজারা ছাড়াই চলছে পারাপার রাজশাহীর পবায় গভীর নলকূপ জোরপূর্বক দখলে রাখার অভিযোগ আওয়ামীলীগের দোসর মুকুলের বালিঘাট ইজারার বাতিলে ৪৮ঘন্টা আল্টিমেটাম প্রধান বিচারপতির ১২ দফা নির্দেশনা বাস্তবায়নে প্রয়োজন সৎ, দক্ষ, কর্তব্যপরায়ণ ও দেশপ্রেমিক বিচারক

শিশুদের প্রতিদিন খিচুড়ি খাওয়ানো যাবে না

  • প্রকাশ সময় শুক্রবার, ১৮ জুন, ২০২১
  • ৪১১ বার দেখা হয়েছে

এস. আর. ডেস্ক: আমার সন্তান খায় না, তাকে কোনোভাবেই খাওয়াতে পারি না। অনেক সময় জোর করেও শিশুদের খাওয়াতে যায় না। সন্তানকে খাওয়াতে কয়েক ঘন্টা লেগে যায়। টেলিভিশন বা মোবাইল ফোনে ভিডিও না দেখালে দেখে সন্তান খাবার খায় না। অধিকাংশ বাবা মায়ের কাছেই সন্তানকে খাওয়ানো নিয়ে এমন অভিযোগ শোনা যায়। বিশেষ করে শিশুকে খাওয়ানো নিয়ে মায়েদের দুশ্চিন্তার শেষ নেই।

বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক রকিবুল ইসলাম বলেন, শিশুদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশের জন্য এবং শিশুর সঠিক পুষ্টির জন্য খাবার অত্যন্ত জরুরি। এবং শিশুদের খাবার অবশ্যই পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ হতে হবে।

তবে শিশুকে কখনোই খাবার নিয়ে জোরাজুরি করা যাবে না। এতে খাবারের প্রতি শিশুর অনীহা তৈরি হবে। জোর করে বা ধমক দিয়ে খাওয়ালে কিংবা শিশুরা অনেক কান্নার পরও জোর করে খাওয়ালে শিশুর খাবারের প্রতি ভীতিও তৈরি হবে। শিশুদের সময় মতো খাবার খাওয়ানোর অভ্যাস করাতে বাবা মাকে সময় দিতে হবে। নির্দিষ্ট সময় পর পর খাবার দিতে হবে। বেশি ঘনঘন খাবার দিতে চাইলে শিশুরা খেতে চাইবে না। শিশুর ক্ষুধা তৈরি হয়েছে কিনা সেটার দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।

শিশুদের খাবারের প্রতি অরুচি হয় কেন:

• শিশুদের জ্বর বা ঠাণ্ডা লাগার ভাব থাকলে খাবারে অরুচি থাকে।

• শিশুদের কৃমির সমস্যা থাকলে খাবারে অরুচি হয়।

• দিনে এবং রাতে ঘুম পর্যাপ্ত না হলে রুচি কমে যায়।

• রক্তশূন্যতা হলে রুচি কমে যায়, রক্তশূন্যতা থাকলে শিশুরা দুর্বল ও ক্লান্ত থাকে, খাবারের প্রতি অনীহা প্রকাশ করে।

• প্রতিদিন একই খাবার দিলে খাবারে প্রতি অনীহা তৈরি হয়।

• প্রতিদিন খিচুড়ি খাওয়ালেও খাবারে অরুচি আসে।

• যে সব শিশু একেবারে ছোট থেকে মিষ্টি জাতীয় খাবার বা বাজারের প্যাকেটজাত ফর্মুলা খাবার খায় অনেক সময় তাদের অন্য খাবারের প্রতি আগ্রহ কমে যায়।

• যে সব শিশু খেলাধুলা কম করে, শারীরিক অ্যাক্টিটিভিটি কম থাকে তাদের খাবারের প্রতি আগ্রহ কম থাকে।

• বিস্কুট চানাচুর চিপস বা বাজারের প্যাকেটজাত নানা ধরনের মুখরোচক খাবার বেশি খেলে শিশুদের ভাত বা অন্য খাবারের রুচি কমে যায়। এবং ক্ষুধা মন্দা দেখা দেয়।

অধ্যাপক ডা: রকিবুল ইসলাম শিশুর সঠিক খাদ্যাভ্যাস তৈরি করতে এবং খাবারের প্রতি অনীহা দূর করতে কিছু পরামর্শ দিয়েছেন।

সেগুলো হলো শিশুর ৬ মাস বয়স থেকে দুধের পাশাপাশি বাড়তি খাবার দিতে হবে। প্রথম দিকে চাল ডাল সবজি দিয়ে খিচুরি খাওয়াতে হবে, কারণ খিচুড়িতে অনেক পুষ্টিগুণ রয়েছে। সেই সঙ্গে, সুজি বা পায়েস জাতীয় খাবার খাওয়াতে হবে, তাতে খাবারের স্বাদে ভিন্নতা আসবে।

তবে প্রতিদিন খিচুড়ি খাওয়ানো যাবে না। প্রতিদিন খিচুড়ি দিলে শিশুদের খাবারের প্রতি অনীহা তৈরি হয়। বড়দের যেমন প্রতিদিন এক খাবার ভালো লাগে না শিশুদের ক্ষেত্রেও তাই হয়।

সেক্ষেত্রে খিচুড়ির পরিবর্তে নরম ভাত, ভাতের সাথে মিষ্টি কুমড়া, পেঁপে, আলু এ ধরনের সবজি দেয়া যেতে পারে। ভাতের সাথে ডাল দিয়ে খাওয়ালেও অনেক উপকার। খিচুড়ির বদলে নরম করে আটার রুটি এবং সাথে সবজি দিতে পারেন।

শিশুদের জোর করে খাওয়ানো যাবে না। বিশেষ করে ২ থেকে ৭/৮ বছরের বাচ্চাদের একটা নির্দিষ্ট সময় দিতে হবে। এ সময় তাদের খেলাধুলার ব্যবস্থা করতে হবে। তাহলে তার ক্ষুধা বাড়বে। শিশুদের একই খাবার প্রতিদিন খাওয়াবেন না।

সপ্তাহে সাতদিন শিশুর খাবারের রেসিপি তৈরি করুন। শিশুরা পছন্দ করে এমন খাবার খেতে দিন। প্রতিদিন খিচুড়ি না দিয়ে ভাতের সাথে বিভিন্ন রকম সবজি দিন। তাতে খাবারে ভিন্নতা তৈরি হবে। শিশুড় বয়স ২ বছর পার হলে তাকে বাড়ির অন্যান্য সদস্যদের খাবারের মতো খাবার খাওয়াতে অভ্যাস করতে হবে।

শিশুকে ভাত, ডাল, সবজি, মাছ, মাংস সবই দিতে হবে। ভারী খাবারে পাশাপাশি শিশুদের ফলমূলে খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে। ঘরে তৈরি খাবারে ভিন্নতা আনতে হবে।

টেলিভিশন, মোবাইলে কার্টুন দেখিয়ে খাওয়ানো যাবে না। এতে শিশুরা খাবারে প্রতি মনোযোগী হয় না। এবং কী খাবারের রং স্বাদ এবং কী ধরনের খাবার খাচ্ছে সেটা সম্পর্কে জানে না।

মোবাইল ফোনে কার্টুন দেখিয়ে খাবার খাওয়ালে অনেক সময় শিশুরা বেশি পরিমাণ খাবার খেয়ে ফেলে সেক্ষেত্রে বয়সের তুলনায় ওজন বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা থাকে।

কোনো অবস্থায়ই শিশুকে জোর করে বেশি পরিমাণ খাবার দেয়া ঠিক নয়। এতে করে ওজন বেড়ে যায়।

ঘরে তৈরি খাবার এবং যা সহজে হজম হয় সেগুলো শিশুকে দিতে হবে। পুডিং, সিদ্ধ নুডলস, নরম ভাত, মাছ, মুরগির মাংস, নরম সুজি, ঘরে তৈরি ফলের জুস ইত্যাদি খাওয়াতে পারলে উপকার হবে।

ডিম শিশুর শরীরের জন্য অনেক উপকারী। আধা সেদ্ধ ডিম, সবজির স্যুপ বা ছোট মুরগির স্যুপও শিশুর জন্য ভালো।

নরম ভাতের সঙ্গে ডাল, সবজি, মাছ বা মাংস ভালোভাবে মিশিয়ে খেতে দিতে পারেন।

অনেক সময় শিশুরা ভাত বা খিচুরি খেতে চায় না সেক্ষেত্রে আলু, নুডুলস বা সবজির স্যুপ দিতে পারেন। সবজি দিয়েও ভিন্ন রকম খাবার তৈরি করে দিতে পারেন।

২ বছরের বেশি বয়সী শিশুদের ফাস্টফুড খাবার বেশি দেয়া যাবে না। কারণ রেস্টুরেন্টে তৈরি ফাস্ট ফুড খাবারে অভ্যস্ত হয়ে গেলে তখন ঘরে তৈরি খাবারে প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলে শিশুরা।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো নিউজ দেখুন
© All rights reserved © 2021 dailysuprovatrajshahi.com
Developed by: MUN IT-01737779710
Tuhin