নিজস্ব প্রতিবেদক : বেশি দামের আশায় রাজশাহীর কৃষকরা বছর জুড়ে বিভিন্ন উন্নত জাতের শীতকালীন শাক-সবজি চাষ করছেন। চাষিরা বাজারে ভালো দামে বিক্রি করে লাভবান হচ্ছেন বলে অনেক চাষিরা জানিয়েছেন। তাই কৃষকরা নতুন নতুন পদ্ধতি প্রয়োগ করে শীতকালীন শাক-সবজি চাষাবাদ করছেন বছর জুড়ে।
লাভ ভাল পাওয়ায় দিনে দিনে শাীতকালীন সবজি চাষে আগ্রহী হচ্ছে এ এলাকার অনেক চাষি। রাজশাহীর ৯টি উপজেলার মধ্যে সবচেয়ে অধিক সবজি চাষ হয় মোহনপুর, দূর্গাপুর, পবা এবং বাগমারা উপজেলার কিছু এলাকায়। এ অঞ্চলের উৎপাদিত সবজি স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় পাইকারী সরবরাহ করা হয়।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, কৃষিকে বছরে তিন ভাগে বিভক্ত করে সবজি চাষ করা হয়ে থাকে। ১৬ অক্টোবর থেকে ১৫ মার্চ পর্যন্ত রবি মৌসুম, ১৬ মার্চ থেকে ১৫ জুলাই পর্যন্ত খরিপ-১, ১৬ জুলাই থেকে ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত খরিপ-২। পূর্বে ১৬ অক্টোর থেকে ১৫ মার্চ পর্যন্ত শীতকালীন সবজি চাষ করা হলেও বর্তমানে অধিক মুনাফার আশায় নতুন জাতের সবজি চাষ করা হয়। ফলে বছর জুড়ে শীতকালীন সবজি বাজারে পাওয়া যাচ্ছে। সারা বছর শীতের সবজি চোখে মেলে সিম, বাঁধাকপি, ফুলকপি, লালশাক, ধনিয়া পাতা ।
রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলার সবজি প্রধান ঘাসিগ্রাম ও ধুরইল ইউনিয়নে। ঘাসিগ্রাম এলকার কৃষক মোস্তফা আলী জানান, আমি দেড় বিঘা জমিতে বাঁধাকপি রোপন করেছি তার বয়স প্রায় ১ মাসের মত হবে। এবং কিছু দিনের মধ্যেই ফুল কপি রোপন করবে। গত বছর মোটামুট লাভ হয়েছে। তিনি আরো বলেন, অসময়ে অনেক খরচ কম হয়। বাগমারা উপজেলার ফুলপুর গ্রামের সবজি চাষি নারায়ন চন্দ্র বলেন, শীতকালীন সবজি পাতাকপি, লাল শাক করেছি। আর মুলা চাষের জন্য জমি প্রস্তুত করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, আর এক মাসের মধ্যে পাতাকপি বাজারে বিক্রি করতে পারবো। পবা উপজেলার বড়গাছি এলাকার বেলাল উদ্দিন বলেন, আমি লাল শাক চাষ করে লাভবান হয়েছি। বীজ রোপণের পর মাত্র ২০-৩০ দিনের মধ্যে শাক বিক্রি শুরু হয়। ফলে অল্প সময়ে এখন অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হওয়া যায়।
দুর্গাপুর উপজেলার সুখানদিঘি গ্রামের চাষি আক্কাস আলী জানান, জমি প্রস্তুত, পানিসেচ, সার প্রয়োগ, শ্রমিক মুজুরি খরচসহ ১ বিঘা জমিতে মোট হয় ৮-১০ হাজার টাকা।
অল্প সময়ে লাল শাক বিক্রি হয় ১৫-১৬ হাজার টাকা। তবে মাঝে মাঝে দাম বাড়লে আরও বেশি দামে বিক্রি করা হয়ে থাকে। কিন্তু মাত্র ১ মাসেই এই শাক বিক্রি করতে পারা যায়। রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক কে জে এম আব্দুল আউয়াল জানান, কৃষকরা বাজারে ভাল দাম পাওয়ার জন্য এখন শীতকালীন বিভিন্ন সবজি সারা বছর চাষাবাদ করছে।
কৃষকরা বেশি দামের আশায় অক্লান্ত পরিশ্রম করে বিভিন্ন সবজি উৎপাদন করছেন। অসময়ে ফলন একটু কম হচ্ছে। তবে স্বাস্থ্যের জন্য এটা খারাপ না। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে কৃষকদের বিভিন্ন পরামর্শ ও সহযোগিতা করা হচ্ছে।