নিজস্ব প্রতিবেদক: মুজিব শতবর্ষ উপলেক্ষ প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার উপহার হিসেবে রাজশাহীরা পবায় আজ রোববার গৃহহীন ৫০টি পরিবারে মধ্যে একালিন সম্পূর্ণ বিনামূল্যে ঘর ও জমি প্রদানের লক্ষে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র হস্তান্তর করা হয়। পবা উপজেলা হলরুমে আয়োজিত হস্তান্তর ও ঘর প্রদান কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন পবা উপজেলা নির্বাহী অফিসার শিমুল আকতার। প্রধান অতিথি ছিলেন পবা-মোহপুর আসনের সংসদ সদস্য আয়েন উদ্দীন।
পবা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) শেখ এসান উদ্দীন এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন পাব উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান ওয়াদে আলী, নারী ভাইস চেয়ারম্যান আর্জিয়া বেগম, দর্শনপাড়া ইউনিয়র পরিষদ চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফা ও বড়গাছী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সোহেল রানা। এছাড়াও পবা উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ উপস্থিত ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গভবন থেকে দেশব্যাপি ৫৪,৩৪০ পরিবারের মধ্যে ঘর প্রদানের উদ্বোধন করেন। তাঁর উদ্বোধনের পরেই পবা উপজেলায় ৫০টি ঘর প্রদানের উদ্বোধন ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে হস্তান্তর করেন সংসদ সদস্য আয়েন উদ্দিন। পবায় ৫০টি ঘরের মধ্যে দর্শনপাড়া ইউনিয়নে ১৭টি এরমধ্যে ১৫টি আদিবাসী, বড়গাছী ইউনিয়নে ১৮টি এবং হড়গ্রাম ইউনিয়নে ১৩টি পরিবারের মধ্যে এই গৃহ প্রদান করা হয়। গৃহে ২ টি শয়ন কক্ষ, ১ টি টয়লেট, রান্নাঘর, কমনস্পেস ও ১ টি বারান্দা রয়েছে।
এ সময়ে প্রধান অতিথি বলেন, বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পরে কোন সরকার এই ধরনের মহতী উদ্যোগ নেয়নি।
যা বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা নিয়েছেন। তিনি সারাদেশে অসহায় গৃহহীন পরিবারের মধ্যে এককালিন ৫৪,৩৪০ টি গৃহ প্রদান করলেন। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী মুজিব শতবর্ষে গৃহহীন সবাইকে গৃহ দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু মহামারী করোনার কারনে সম্ভব হয়ে উঠেনি। তবে পর্যায়ক্রমে প্রধানমন্ত্রী সব গৃহহীনকে ঘর প্রদান করবেন বলে বক্তব্যে উল্লেখ করেন তিনি।
আগামীতে দেশের উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে এবং সকলের জন্য গৃহ এই স্লোগান সম্পূর্ণরুপে বাস্তবায়ন করতে যতদিন পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বেঁচে থাকবেন ততদিন পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী থাকবেন বলে জানান তিনি। সেইসাথে উন্নয়নের স্বার্থে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে ভোট প্রদান করার জন্য জনগনের প্রতি অনুরোধ করেন সংসদ সদস্য আয়েন উদ্দিন।
ঘরপ্রাপ্ত আলমগীর হোসেন বলেন, তিনি রেললাইনের ধারে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করতেন। অনেক সময় রেল কর্তৃপক্ষ উচ্ছেদ করে দিতো। তখন পরিবারের সদস্যদের নিয়ে তিনি বিপদে পড়তেন। এখন তিনি হড়গ্রাম ইউনিয়নের আদাড়ীপাড়ায় প্রধানমন্ত্রীর ঘর পেলেন। এতে তিনি অত্যন্ত খুশি বলে জানান। সেইসাথে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দীর্ঘ্যায়ু কামনা করেন এবং আগামীতেও ভোট প্রদান করে তাঁকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আবার রাখার জন্য জনগণকে অনুরোধ করেন তিনি।
আরেকজন গৃহপ্রাপ্ত লুৎফা বেগম বলেন, তিনি দীর্ঘদিন যাবৎ খাস জমিতে বসবাস করছেন। সব সময় উচ্ছেদ আতঙ্কে দিন কাটাতেন। কিন্তু আজকে থেকে আর তাকে কেউ উচ্ছেদ করতে পারবেনা। কারন প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা তাকে এক কালিন ঘর ও জমি দিয়েছেন বলে উল্লেখ করেন তিনি। তিনি প্রধানমন্ত্রীর দীর্ঘ্যায়ু কামনা করেন।
সভাপতির বক্তব্যে পাবা উপজেলা নির্বাহী অফিসার শিমুল আকতার বলেন, পবায় ভাল মানের ঘর তৈরী করতে সর্বাদা সহযোগিতা করেছেন সংসদ সদস্য আয়েন উদ্দিন। তাঁর নির্দেশনা অনুযায়ী সকল ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। সরকারের সাথে কথা বলে পবায় এতোগুলো ঘর নির্মানে সহযোগিতা করায় এমপিকে তিনি ধন্যবাদ জানান।
সেইসাথে উপজেলা সহকারী কমিশনার(ভূমি) তাঁর টিম নিয়ে রাতদিন পরিশ্রম করে খাস জমির সন্ধান ও উদ্ধার এবং সেই স্থানে ঘর স্থাপনের সকল ব্যবস্থা করেছেন। শুধু তাইনয় জমির দলিল তৈরী, রেজিস্ট্রিকরণ ও নামজারী তিনিই করেছেন। এরজন্য এসিল্যান্ডকেও ধন্যবাদ জানান সভাপতি। আগামীতে পবা উপজেলায় যত খাস জমি আছে সেগুলো উদ্ধার করে ভূমিহীনদের মধ্যে প্রদান এবং সেখানে ঘর নির্মানের ব্যবস্থা করা হবে বলে আশ্বাস প্রদান করেন তিনি।