নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহীতে করোনায় সংক্রম ও মৃত্যুর মিছিল বাড়তেই আছে। কোনভাবেই থামছেনা। কিন্তু জনগণ এখনো করোনাকে আমলে নিচ্ছেনা। রাজশাহীতে করোনা বৃদ্ধি পাওয়ায় জেলা প্রশাসন, পুলিশ বিভাগ, রাসিক ও বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয় যৌথভাবে রাজশাহী তৃতীয় দফায় লকডাউন দিয়েছে। জনগণকে বিভিন্নভাবে সচেতন করার চেষ্টা করছেন তারা।
এছাড়াও মাস্ক পড়া এবং অপ্রয়োজনে বাড়ির বাহিরে না আসার আহবানসহ নানা প্রকার কর্মসূচী তারা পালন করে যাচ্ছেন। আজ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাজশাহী জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে রাজশাহী জেলায় যাকাতের সংগ্রহীত অর্থ আবেদনকারীদের মধ্যে বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাজশাহী জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিল এই কথা বলেন।
তিনি বলেন, পুলিশ ও প্রশাসনের সাথে চোরপুলিশ খেলে কোন লাভ নেই। এতে নিজের ক্ষতি নিজেই করছে জনগণ। তিনি আবারও জনগণকে সরকারী নির্দেশনা মেনে চলার আহবান জানান। অর্থ গ্রহনকারীদের উদ্দেশ্যে জেলা প্রশাসক বলেন, শুধু উপরে উপরে লোক দেখানো ধমীয় কাজ করলে কখনো সৃষ্টিকর্তার সন্তুষ্টি লাভ করা যায়না। তাঁর করুনা ও দয়া পেতে হলে নির্দেশ পালন করতে হয়। প্রকৃত ইমানদারও হতে হয়। তেমনি করে এই করোনা মহামারী থেকে ধর্মীয় অনুশাসন ও সরকারী আদেশ মানতে আবারও সবার প্রতি অনুরোধ করেন তিনি। অর্থ প্রাপ্তদের উদ্যেশ্য করে তিনি বলেন, যেসব প্রতিশ্রতি দিয়ে আপনারা এই অর্থ নিয়েছেন, সে কাজেই এই টাকা ব্যবহার করবেন আপনারা। ভবিষ্যতে যেন আর যাকাতের টাকা নিতে না হয়।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি শাহীন আকতার রেনী বলেন, যাকাত ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের মধ্যে একটি গুরুত্ব পূর্ণ স্তম্ভ। যাকাত প্রদানে সামর্থ কোন ব্যক্তি যাকাত প্রদান না করলে গুনাহ হয়। অতএব কোন প্রকার ছলনা না করে বিত্তবানদের যাকাত প্রদান করার আহবান জানান তিনি। সেইসাথে আসছে ঈদে মার্কেটে ভীর না করে বাড়িতে থাকার পরামর্শ দেন তিনি। করোনা থেকে মুক্তি পেতে অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার এবং সরকারী নির্দেশনা মেন চলার আহবান জানান তিনি।
বক্তব্য শেষে প্রধান অতিথিসহ উপস্থিত অতিথিবৃন্দ মহানগরের মোট ৫৪ জনের মধ্যে ২,৪৭,২০৮/- টাকার চেক প্রদান করেন। এরমধ্যে আঠারো জনের মধ্যে পাঁচ হাজার পাঁচশত টাকা করে এবং অবশিষ্টদের মধ্যে চার হাজার একশত টাকা করে প্রতিজনকে চেক প্রদান করেন।
এছাড়াও উপজেলা পর্যায়ে নির্বাহী অফিসারের মাধ্যমে বাগামারা উপজেলায় মোট ২৪ জনের মধ্যে ১,৪৩,৫০০/-টাকা, গোদাগাড়ীতে ১০ জনের মধ্যে ৫২,৫০০/-টাকা, পবা উপজেলায় ৯ জনের মধ্যে ৪৫,৯২০/- টাকা, তানোর উপজেলায় ১৭ জনের মধ্যে ২৮,৪২০/-টাকা, মোহনপুর উপজেলায় ৭ জনের মধ্যে ২১,১৪০/- টাকা। পুঠিয়া উপজেলায় ৫ জনের মধ্যে ১৫,৪০০/-টাকা, চারঘাট উপজেলায় ৭জনের মধ্যে ৯,১০০/-টাকা, দূর্গাপুর উপজেলায় ১ জনের মধ্যে সাতশত টাকাসহ সর্বমোট ১৩৪ জনের মধ্যে মোট ৫,৬৩,৮৮৫/- টাকা প্রদান করা হবে বলে জানা ইসলামী ফাউন্ডেশন কর্তপক্ষ। এর মধ্যে বাঘা উপজোয় কোন অনুদান দেয়া হয়নি। এই টাকা সরকারী যাকাত ফান্ড হিসেবে ২০২০-২০২১ অর্থ বছরের রাজশাহী জেলার মহানগর ও উপজেলা সমুহে আদায়ের উপর নির্ভর করে আবেদনের প্রেক্ষিতে বিতরণ করা হয়।
বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিল। বিশেষ অতিথি ছিলেন ইসলামী ফাউন্ডেশন রাজশাহী এর পরিচালক মুহাম্মদ জালাল আহমদ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) নজরুল ইসলাম। সভাপতিত্ব ও অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মুহাম্মদ শরিফুল হক। এছাড়াও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট অভিজিত সরকারসহ জেলা প্রশাসনের অন্যান্য কর্মকর্তাও ইসলামী ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
যাকাতের অর্থ বিতরণ শেষে জেলা প্রশাসক তাঁর তহবিল হতে হেরিটেজ বাংলাদেশকে বই প্রকাশ করার জন্য পঞ্চাশ হাজার টাকার এবং দুইজন ভিক্ষুককে পঁয়ত্রিশ হাজার টাকা করে মোট সত্তর হাজার টাকা প্রদান করেন।