নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহীর বাগমারা উপজেলায় এক শিক্ষককে মেরে হাত ভেঙেছে এসিল্যান্ড, এমন গুজব ছড়িয়ে অপপ্রচার করেছে একটি মহল। এটা এসিল্যান্ডের লাঠির আঘাতে নয় বরং পালাতে গিয়ে পা পিছলে পড়ে তার হাত ভেঙ্গেছে বলে প্রমান পাওয়া গেছে। এমন তথ্য পাওয়া গেছে। সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, গত ১জুলাই দেশ জুড়ে কঠোর লকডাউন বাস্তবায়নে উর্ধ্বতনের নির্দেশে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাহমুদুল হাসান, বাগমারা থানার অফিসার ইনচার্জসহ একটি টহল টিম নিয়ে বের হন। বিকেলে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেন এবং পরিদর্শন শেষে শিকদারী বাজারে পৌঁছান।
বাজারে লোকজন বলেন, পুলিশ বাজারে পৌঁছে বাঁশি বাজালে লোকজন বিভিন্ন দিকে পালাতে থাকে। ঐ শিক্ষকও সে সময়ে বাজারে বসে ছিলেন। কিন্তু মুখে মাক্স না থাকায় তিনিও দৌড়ে পালিয়ে সালেহা ইমারত গার্লস স্কুলের দিকে যাওয়ার সময় পাঁ পিছলে তিনি পড়ে যান। এতে তিনি হাতে আঘাত পান। কিন্তু তিনি বিষয়টি নিয়ে আব্দুল আজিজ শিক্ষা টিভির ভারচুয়াল মিটিং এ অভিযোগ করে বলেন, তিনি ডায়বেটিস এর রোগী। তাকে ইনসুলিন নিয়ে চলতে হয়। আর দুই বার হাটঁতে হয়।
এজন্য তিনি প্রতিদিনের ন্যায় ১ জুলাই বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে কিছু দুর হাঁটাহাঁটির পর বাড়ির গেটের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন। এ সময়ে এসিল্যান্ড পুলিশের নিকট হতে লাঠি নিয়ে তার হাতে বাড়ি মারলে হাতে প্রচন্ড আঘাত পান তিনি। পরে ভবানীগঞ্জ বাজারে গিয়ে এক্সরে করে জানতে পারেন তার হাতের হাড় ভেঙে গেছে। তিনি আরো বলেছেন যে, তিনি ২০ বছর ধরে শিক্ষকতা করেন। অথচ তিনি যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আছেন তা ২০১৩ সাথে স্থাপিত। ২০ বছর ধরে চাকুরী করেন সেটাও মিথ্যা। এ বিষয়ে জানতে চাইলে শিক্ষক আজিজ কোন কথা বলতে রাজি হননি।
ঘটনা সম্পর্কে জানতে চাইলে এসিল্যান্ড মাহমুদুল হাসান বলেন, যেখানে আমার পুলিশ ফোর্স সঙ্গে আছে, সেখানে আমার হাতে লাঠি! এটা কি বিশ্বাসযোগ্য? আমার কাছে অপরাধ যোগ্য কোন কাজ হলে আমি আইনিভাবে জরিমানা বা দন্ড দেব এটাই স্বাভাবিক। তবে আমি এখানে আসার পর থেকে সাদা কালো অনেক উদ্দেশ্য বন্ধ করেছি। উন্নয়ন মূলক কাজ করছি। এটাই হয়তো কেউ মানতে পারছে না। আমাকে হটানোর জন্য একটি মহল কাজ করছে বলে আমার মনে হয়।
তিনি আরো বলেন, তিনিতো কাউকে মারেন নি। সেখানে শিক্ষকের হাত ভাঙ্গার প্রশ্নই আসেনা। তিনি বলেন, শিক্ষকের হাঁড় ভেঙেছে এক জায়গায়। যার প্রমান এক্সরে রিপোর্ট এবং ফিল্ম। সেখানে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে একটি জায়গায় ভাঙ্গা। এখন প্রশ্ন হলো যদি লাঠির বারিতে ভাঙ্গে তাহলে ঐ জায়গায় কয়েকটি জায়গায় ভাঙ্গার কথা, অথচ একটি জায়গায় ভাঙ্গা কেন। তাহলে স্পষ্ট যে তার হাত লাঠির আঘাতে নয়, পড়ে গিয়ে ভেঙ্গেছে তার হাত।
এ বিষয়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অর্থোপেডিক্স ডাক্তার মুত্তালিব বলেন, কারো যখন ডাইবেটিকস হয় তখন অটোমটিক দেহের হাঁড় নরম বা কমজোরি হয়। আমি ঐ শিক্ষকের এক্সরে রিপোর্ট দেখেছি সেখানে একটি জায়গায় ভাঙ্গা। যদি লাঠির আঘাতে ভাঙ্গে তাহলে ঐ জায়গায় কুচি বা কয়েকটি জায়গায় ফ্যাকচার হওয়ার কথা। কিন্তু তা হয়নি। আমার মনে হচ্ছে পড়ে গিয়ে ভেঙ্গেছে। বিষয়টি নিয়ে সর্বশেষ বাগমারা থানার অফিসার ইনচার্জ মুস্তাক আহমেদ বলেন, ঘটনাস্থলে তিনি উপস্থিত ছিলেন। এই ধরনের কোন ঘটনা ঘটেনি। এ ঘটনা ঐ শিক্ষকের মনগরা ও উদ্দেশ্য প্রনোদিত বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।