নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহীতে করোনাকালিন প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ আর্থিক সহায়তা থেকে রাজশাহীর প্রকৃত অসচ্ছল সাংবাদিকরা বঞ্চিত হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে । এ নিয়ে ব্যাপক অসন্তুষ্টিতে ভুগছেন রাজশাহীর প্রকৃত অসচ্ছল সাংবাদিকরা। বিষয়টি উল্লেখ করে রাজশাহীর চারটি সাংবাদিক সংগঠণ, একটি প্রেসক্লাব ও একটি স্থানীয় পত্রিকার সম্পাদক স্বাক্ষরিত স্মারকলিপি রাজশাহীর জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে তথ্যমন্ত্রী বরাবর পাঠানো হয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর ২.৩০ টায় রাজশাহীর জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিলের হাতে এ স্মারকলিপি তুলে দেয়া হয়। এ সময় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) শরীফুল হক ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) নজরুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রীর দেয়া আর্থিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত প্রকৃত অসচ্ছল সাংবাদিকদের পক্ষে স্মারকলিপি প্রদান করেন দৈনিক রাজশাহীর আলো সম্পাদক আজিবার রহমান, রাজশাহী মডেল প্রেসক্লাব সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম চপল, মানবাধিকার সাংবাদিক সংগঠণ আইএইচসিআরএফ সভাপতি মিজানুর রহমান পাইলট, রাজশাহী জেলা বিএমএসএফ সভাপতি আবু কাওসার মাখন, সাধারণ সম্পাদক শামসুল ইসলাম, রাজশাহী জেলা আরজেএফ সভাপতি শাহিনুর রহমান সোনা, সাধারণ সম্পাদক আল আমিন হোসেন, বাংলাদেশ তৃণমূল সাংবাদিক কল্যাণ সোসাইটির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক রেজাউল করিমসহ আরো অনেকে।
স্বারকলিপি সূত্রে জানা যায়, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের অধীনে বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টে দেয়া করোনাকালিন প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ আর্থিক সহায়তার (২য় ধাপ) ৬৬ জন সাংবাদিকের নাম তালিকায় স্থান পেয়েছে। ১ম ধাপে পাওয়া ৬ জন সাংবাদিকের নাম, আঞ্চলিক একটি পত্রিকার ৬ জন সাংবাদিকের নাম, অনিবন্ধিত একটি অনলাইন নিউজ পোর্টালের চার জন সাংবাদিকদের নাম, অনুমোদনহীন আইপি টিভির প্রতিনিধিসহ ডজন খানেক সচ্ছল সাংবাদিকের নাম রয়েছে।
এছাড়াও দুই বছর আগে মাদক সেবনের দায়ে বরখাস্ত হওয়া একজন টিভি সাংবদিকের নাম রয়েছে। অথচ নিবন্ধিত জাতীয় পত্রিকার প্রায় অর্ধশতাধিক প্রকৃত অসচ্ছল সাংবাদিকের নাম নেই। রাজশাহীতে বিভিন্ন ইলেকট্রনিক, প্রিন্ট, রেডিও ও অনলাইন পত্রিকার কর্মরত গণমাধ্যম কর্মীরা বিভিন্ন সময়ে সরকারী প্রণোদনা বা বিশেষ আর্থিক সহায়তা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। সেখানে জাতীয় পর্যায়ের চার টি সংগঠণ ও একটি স্থানীয় প্রেসক্লাব এবং স্থানীয় একটি পত্রিকার সাংবাদিকগণ প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ আর্থিক সহায়তা থেকে বঞ্চিত হয়েছে মর্মে জানানো হয়।
স্মারকলিপিতে আরো বলা হয়, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের অধিনে বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টে পাঠানো তালিকায় স্বজনপ্রীতি ও বিভাজনের বহিঃপ্রকাশ ঘটানো হয়েছে। অসুস্থ মানসিকতায় একটি অসৎ উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য তালিকা প্রদান করা হয়েছে। এতে করে বার বার প্রকৃত অসহায় সাংবাদিকরা এই বিশেষ প্রণোদনা বা সহায়তা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। উক্ত সংগঠন গুলো রাজশাহীতে দীর্ঘদিন থেকে দেখে আসছে সরকার বিরোধী একশ্রেণির মানুষ এই তালিকা তৈরিতে বৈষম্য সৃষ্টি করছেন।
স্মারকলিপিতে অভিযোগ আকারে বলা হয়েছে, রাজশাহীতে দু দফায় প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়। উক্ত সহায়তায় বারবার একই গোষ্ঠী আত্নীয় স্বজনসহ স্বচ্ছলরা এই সহায়তায় তালিকাভুক্ত হচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার এই সহায়তায় নানা অনিয়ম হয়েছে বলে বলা হয়েছে। এমনকি রাজশাহীতে সাংবাদিক বৈষম্য ও বিভেদ সৃষ্টির নানা কূটকৌশল অবলম্বন করা হচ্ছে মর্মে জানানো হয়।
বিষয়টি নিয় রাজশাহী জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিল বলেন, এই তালিকা তৈরিতে তাঁদের কোন করনীয় নাই। যা কিছু হয় ঢাকা থেকে হয়। তাঁকে শুধু এই প্রনোদনা প্রদান করার আদেশ দেওয়া হয়েছে। আপনার লিখিত স্বারকলিপি নিয়ে তিনি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলবেন এবং স্বারকলিপিটি মন্ত্রণালয়ে পঠানোর ব্যবস্থা করবেন বলে জানান জেলা প্রশাসক। তবে এবিষয়ে রাজশাহীতে কর্মরত সাংবাদিকরা দাবী করে বলেন, এই স্বজনপ্রীতি ও অনিয়ম রোধে জেলা প্রশাসকের দ্বায়িত্বে প্রকৃত সাংবাদিকদের তালিকা করার সুযোগ থাকতে হবে।