নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রুটিন উপাচার্য অধ্যাপক সুলতান উল ইসলামকে শুভেচ্ছা জানাতে গিয়ে এডহকে নিয়োগপ্রাপ্ত ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের তোপের মুখে পড়েছেন জাতীয়তাবাদী অফিসার্স পরিষদের সদস্যরা। আজ সোমবার (২ আগস্ট) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কনফারেন্স রুমে এ ঘটনা ঘটে। এক পর্যায়ে ক্ষুব্ধ ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা ফুলের তোড়া পুড়িয়ে ফেলে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, দুপুর সোয়া ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতীয়তাবাদী অফিসার সমিতির আহ্বায়ক একেএম নজরুল ইসলাম শেলীর নেতৃত্বে ১৫ থেকে ২০ জন সদস্য ফুল নিয়ে রুটিন উপাচার্য অধ্যাপক সুলতান উল ইসলামের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে যান। বিষয়টি জানতে পেরে সাড়ে ১২টার দিকে সদ্য বিদায়ী উপাচার্য অধ্যাপক আব্দুস সোবহানের শেষ কর্মদিবসে এডহকে নিয়োগপ্রাপ্ত ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা প্রশাসন ভবনে প্রবেশ করেন। তাঁরা উপচার্যের কনফারেন্স কক্ষে বিএনপিপন্থি অফিসারদের শোকের মাসে ফুল নিয়ে শুভেচ্ছা দিতে আসার কারণ জানতে চান। সেখানে উচ্চবাচ্য শুরু করলে প্রক্টর লিয়াকত আলী এসে তাঁদের নিবৃত করার চেষ্টা করেন। এক পর্যায়ে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা ফুলের তোড়াটি নিয়ে প্রশাসন ভবনের সামনে পুড়িয়ে দেয়।
এডহকে নিয়োগপ্রাপ্ত রাবি ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি আতিকুর রহমান সুমন বলেন, এখন শোকের মাস চলছে। ঠিক এই মুহূর্তে বিএনপি-জামাতের সময় নিয়োগপ্রাপ্ত অফিসাররা রুটিন উপাচার্যকে ফুলেল শুভেচ্ছা দিতে গিয়েছিলেন। আমরা বিষয়টি দেখে আদর্শগত জায়গা থেকে তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ জানাই। উপাচার্যের কনফারেন্স রুমে গিয়ে আমরা ফুলেল শুভেচ্ছা বিনিময় থেকে বিরত থাকার অনুরোধ করি। পরে প্রক্টর স্যার আমাদের আশ্বাস দেন ফুলেল শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন না উপাচার্য।
তিনি আরও বলেন, রুটিন উপাচার্য দায়িত্ব পেয়েছেন আরও আগে। অথচ শোকের মাসে এসে বিএনপি-জামায়াতের অফিসারেরা ফুলেল শুভেচ্ছা দিতে আসা দুরভিসন্ধিমূলক।
তবে এ ব্যাপারে জাতীয়তাবাদী অফিসার্স পরিষদের আহ্বায়ক একেএম নজরুল ইসলাম শেলী বলেন, আমরা আগেই উপাচার্যের নিকট থেকে এ্যাপোয়েন্টমেন্ট নিয়েছিলাম। সাধারণত সৌজন্য সাক্ষাতে ফুলের তোড়া দিয়ে শুভেচ্ছা জানানো হয়। সে বিবেচনায় আমরা ফুল নিয়ে এসেছি। এখানে আসার পর উপাচার্য তাঁর সচিবের মাধ্যমে জানান, তিনি ফুলেল শুভেচ্ছা গ্রহণ করবেন না। তাই আমরা তো ফুলের তোড়া সরিয়ে রাখি।
তিনি আরও বলেন, সাধারণত গতানুগতিক ধারা হিসেবে আমরা ফুল নিয়ে গিয়েছি। তাছাড়া আগস্টের কোনো কর্মসূচি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নেওয়া হয়েছে বলে আমার জানা ছিল না। সর্বপোরি এটা উদ্দেশ্যমূলক ছিল না।
জানতে চাইলে রুটিন উপাচার্য অধ্যাপক সুলতান উল ইসলাম বলেন, কে বা কারা কী নিয়ে এল সেটা তো তাঁদের ব্যক্তিগত বিষয়। কিন্তু আমি কারো পক্ষ থেকে কী গ্রহণ করব সেটা আমার ওপর নির্ভর করে। আজকে বিএনপিপন্থী কিছু অফিসার আমার সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন। আমি তাঁদের সঙ্গে বৈঠক করেছি। কিন্তু ফুলের তোড়া গ্রহণ করার কোনো ঘটনা ঘটেনি।