নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহী গোদাগাড়ী উপজেলা প্রেমতলী শ্রী পাঠ খেতুরি ধামের খামারি মন্দিরে প্রোণোদনার টাকাসহ বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে ম্যানেজার গোবিন্দ পালের বিরুদ্ধে।এরই প্রতিবাদে এলাকাবাসি ও মন্দিরের শুভকাঙ্খিরা মানববন্ধন করেছেন। শুক্রবার সকালে প্রেমতলী শ্রী পাঠ খেতুরি ধামের খামারি মন্দিরে সামনে এই মানবন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানবন্ধনে সাবেক এরিয়া ম্যনেজার গোপালচন্দ্র ঘোষ বলেন, ম্যানেজার গোবিন্দ পাল মন্দিরের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে একের পর এক দুর্নীতি করেই চলেছে। মন্দিরে আগত ভক্তদের বিশ্রামের জন্য মন্দিরে মধ্যে অনেক বড় বড় গাছ ছিলো। কিন্তু কিছুদিন আগে মন্দিরে বড় বড় ১৮-২২ গাছ কোন কেটে ফেলেছে। গাচ কাটার পূর্বে কোন প্রকার সভা বা রেজুলেশন করা হয়নি।
তিনি আরো বলেন, এই মন্দিরে ভক্তদের জন্য তেমন কোন সুবিধা ছিলোনা। না ছিলো সুপেয় পানির উৎস এবং স্বাস্থ্যসম্মত টয়লেট। এর দাবিতে তিনি ২০০৪ সালে এই গেটের সানে তিনি মানববন্ধন করেন এবং এগুলো তৈরী করার দাবী জানান। পরে এখানে পানির ব্যবস্থা এবং কোন রকম ৩৭ টি টয়লেট তৈরী করা হয়েছে।
এছাড়াও মন্দিরে ভোক্তদের জন্য যে প্রতিদিন কেজি ২০০গ্রাম করে চাল ভোগনের জন্য বরাদ্ধ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তা ভোক্তদের মধ্যে সুষ্ঠু বন্টন করা হয়না। ভোগের সামগ্রী বিক্রি করা হয়। এছাড়া এখানে কেউ রাত্রী যাপন করলে তার নিকট আবাসিক হোটেলের ন্যায় ভাড়া নেয়া হয়। শুধু তাইনয় গত বিগত ঈদ উল ফিতরের পরে ২০ হাজার টাকা প্রণোদনা হিসেবে দান করেন খামারি ট্রাস্ট প্রকল্প। সে টাকাও ম্যানেজার গোবিন্দ পাল আত্মসাৎ করার চেষ্টা করেন বলে তিনি উল্লেখ করেন ।
তিনি আরো বলেন, শুধু তাই নয় বাংলাদেশ ও বিদেশ থেকে এই মন্দিরের জন্য সব সময় বিকাশে টাকা আসে। সে টাকাগুলোর কোন হদিস নাই বলে তিনি উল্লেখ করেন। আর তার এসব অপকর্মের সহযোগীতা করে যাছেন মন্দির পরিচালনা কমিটির কার্যকরী সদস্য সহদর দুইভাই শ্রী রতন কুমার দাশ ও কানাই দাশ। একই পরিবারের দুইজন একই কমিটিতে রয়েছে এটা একটি চরম অনিয়ম।
তাদের এসব অনিয়মের প্রতিবাদ করতে গেলে তাকে এরিয়া ম্যানেজার পদ থেকে তাকে কিছু না জানিয়ে নিয়ম বহির্ভূতভাবে বহিস্কার করেন। তার চাকরী ফেরত নয়, দুর্নীবাজ ম্যনেজার গোবিন্দ পালের সকল দুর্নীতি রুখতে এবং এর সাথে যারা জড়িত আছে তাদের আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তির জন্য আইন শৃংখলা বাহিনী ও সরকারের হস্তক্ষপে কামানা করেন গোপালচন্দ্র ঘোষ।
এদিকে মানববন্ধনে উপস্থিত মন্দিরের আরেক হিতাকাঙখি সজল ঘোষ বলেন, তিনি মন্দিরে কোন চাকরী করেন না। কিন্তু তিনি এলাকার লোক এবং মন্দির ভক্ত। এই মন্দিরে পুকবুর চুরি হয়। বছরে যে টাকা অনুদান হিসেবে আসে তা দিয়ে এই মন্দিরের বহু উন্নয়ন করা সম্ভব। এছাড়াও জমি তেকে যে টাকা আসে তা প্রতি বছরে ব্যাংকে জমা থাকার কথা।
এতো কিছুর পরেও মন্দিরে কোন উন্নয়ন নাই। সেইসাথে কমিটির কিছু সদস্যর সাথে আঁতাত করে গোবিন্দ লুটপাটের রাজ্য তৈরী করেছে। এমনকি আজকের মানববন্ধনে লোকজন আসতে বাধা দিয়েছে। এছাড়াও মন্দিদের কিছু নেতারা তাকে প্রান নাশের হুমকী দিচ্ছে বলে জানান সজল ঘোষ।
এদিকে স্থানীয়রা জানান, ঠাকুরেরা ধর্ম নিয়ে ব্যস্ত। আর ম্যানেজার টাকা নিয়ে ব্যস্ত। বাংলাদেশের এই খেতুরী ধামে ৫০ টির বেশী দেশের লোক আসে। মন্দিরের জায়গা জমি অনেক। প্রণোদনার টাকা ছাড়াও বিদেশি ভক্তরাও সঁপে দেন প্রণামী। মেলার সময় অনেক টাকা চাঁদা উঠানো হয়। পুকুর আর ফসল থেকেও টাকা আসে। আসলে টাকা কোথায় জমা হয়, তারাও জানেন না।
তারা আরো বলেন, মহিলা টয়লেট নষ্ট ম্যানেজার ঠিক করে না। বৃষ্টির পানিতে মন্দিরের অনেক জায়গায় শ্যাওলা জমে পিচ্ছিল হয়ে গেছে, দেখার কেউ নেই। মন্দিরের পেছনে প্রাচীরের সংস্কার করা প্রয়োজন। পুরাতন হয়ে পরায় প্রাচীরে ফাটল ধরেছে। রান্নাঘর ভালো নাই। এতবড় একটা মন্দির যেখানে মৃত ব্যক্তির দেহ সৎকারের কোন করার ব্যবস্থা নেই বলে জানান তারা।
অভিযোগ বিষয়ে ম্যানেজার গোবিন্দ পাল এর নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন, তার বিরুদ্ধে যারা এসব কুৎসা রটিয়ে বেড়াচ্ছে তারা বিশেষ এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য এসব করছে হয়তো। তার বিরুদ্ধে আনিত সকল অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন বলে দাবী করেন গোবিন্দ।