এস.আর.ডেস্ক: ‘ডাক্তার’ শব্দ ব্যবহার নিয়ে আইনি পদক্ষেপ নেবে হোমিওবোর্ড। ‘ডাক্তার’ শব্দ ব্যতীত হোমিওপ্যাথি ও ইউনানি ডিগ্রিধারীরা নামের সঙ্গে যেসব পদবি ব্যবহার করতে পারবেন বলে হাইকোর্ট যে রায় দিয়েছেন, সে রায়ের বিরুদ্ধেই তারা আইনি পদক্ষেপ নেবেন বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথি বোর্ড।
বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল (বিএমডিসি) এর নীতিমালা অনুযায়ী বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল অ্যাক্ট ২০১০ (২০ ডিসেম্বর, ২০১০-এ প্রকাশিত গেজেট) এর ধারা ২২(১) ও ২৯(১) এর আওতায় এমবিবিএস/বিডিএস বাদে অন্য চিকিৎসকদের নামের আগে ডা. (ডাক্তার) পদবি ও নামের পরে ডিগ্রি ব্যবহার অপরাধ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিএমডিসির অনুমোদন ছাড়াই হোমিওপ্যাথি ও ইউনানি ডিগ্রিধারীরা নামের আগে এতদিন ডা. শব্দ ব্যবহার করতো। এতদিন পর এ নিয়ে একটা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হলো। যদিও এতে জটিলতা রয়ে গেল বলে বলছেন তারা। এর আগে তাদেরকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় নামের আগে ডাক্তার ( ডা.) ব্যবহার করার অনুমতি দিয়েছিল। কিন্তু যেহেতু এবারে সর্বোচ্চ আদালত এ নিয়ে রায় প্রকাশ করেছে তাই এখন উচ্চ আদালতের রায়ের পর মন্ত্রণালয়ের আদেশ আর বলবত থাকবে না। তাই তারা আর এ পদবি ব্যবহার করতে পারবে না।
তবে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসকরা বলছেন, হাইকোর্টের এ রায়ের সঙ্গে তাদের আইন সাংঘর্ষিক। তাদের নিজস্ব যে আইন রয়েছে তাতে করে ডাক্তার লিখতে কোনও সমস্যা নেই। আর হাইকোর্টের এ রায়ের বিরুদ্ধে তারা আইনি পদক্ষেপে যাবেন।
আজ শনিবার ( ১৪ আগস্ট) হাইকোর্টের বিচারপতি আশরাফুল কামাল ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের নেতৃত্বাধীন রায়ে বলা হয়, প্রচলিত চিকিৎসা পদ্ধতির বাইরে হোমিও-ইউনানি প্রভৃতি চিকিৎসা ব্যবস্থাপনাকে ‘বিকল্প চিকিৎসা পদ্ধতি’ উল্লেখ করে আদালত তার রায়ের পর্যবেক্ষণে বলেছেন, ‘বিকল্পধারার চিকিৎসা পদ্ধতির পেশাধারীরা নামের পূর্বে ১) ইনটেগ্রেটেড ফিজিশিয়ান, ২) কমপ্লিমেন্টারি ফিজিশিয়ান, ৩) ইন্টেগ্রেটেড মেডিসিন প্রাকটিশনার এবং ৪) কমপ্লিমেন্টারি মেডিক্যাল প্রাকটিশনার পদবি ব্যবহার করতে পারেন। পাশের দেশ ভারতেও বিকল্পধারার চিকিৎসকরা (ডা.) লিখতে পারেন না।’
আমাদের আইনে রয়েছে আমরা নামের আগে ‘ডাক্তার’ লিখতে পারব। এখন হাইকোর্ট একতরফা কী রায় দিয়েছে, কে রিট করেছিলেন-এটাও আমরা জানি না মন্তব্য করে বাংলাদেশ হোমিপ্যাথি বোর্ডের চেয়ারম্যান দিলীপ রায় বলেন, রায়ের কপি তুলছি, এরপর সবকিছু বিশ্লেষণ করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তবে তিনি হোমিওপ্যাথি বোর্ডের চেয়ারম্যান হয়েও এ বিষয়ে কবে রিট হয়েছিল, শুনানি কবে হয় সে সর্ম্পকে তিনি কিছুই জানতেন না বলেও জানান। এমনকি হাইকোর্টে শুনানির সময়েও তাকে বা তাদেরকে ডাকা হয়নি, বলেন তিনি। তাদেরকে কিছু অবহিতও করা হয়নি বলে দাবি করেন দিলীপ রায়।
তিনি আরও বলেন, হাইকোর্ট আমাদের কাছে কিছু চাননি, আমরাও উপস্থিত করিনি। এই রায় আইনসঙ্গতভাবে হয়নি জানিয়ে দিলীপ রায় বলেন, এই রায় আইনসঙ্গত ভাবে হয়নি এবং অবশ্যই আমরা ডাক্তার লিখবো, এ বিষয়ে যত আইনি পদক্ষেপ রয়েছে সব নেওয়া হয়েছে।
তার মতে, বিদ্যমান এবং নতুন যে আইন হতে যাচ্ছে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসকরা নামের আগে ‘ডাক্তার’ লিখতে পারবে এটা স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে জানিয়ে দিলীপ রায় বলেন, তবে আমার বিশ্বাস, আমাদের আইনগত অধিকারগুলো স্পষ্ট করতে পারলে এ রায় বাতিল হবে।