নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রায় দেড় বছর চলছে মহামারী করোনা। এই করোনার কারনে ব্যবসা-বাণিজ্য, যানবাহন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, কলকারখানা ও অফিস আদালত প্রায় সব বন্ধ ছিলো। সংক্রমণ ঠেকাতে সরকার এ সবের পাশাপাশি বন্ধ করে দিয়েছিলো সকল প্রকার পর্যটন এবং বিনোদন কেন্দ্র। করোনা সংক্রম কমে আশায় দেশের অর্থনীতির চাকা সচল করতে এবং কর্মহীন মানুষের কর্মের ব্যবস্থা করতে সরকার শর্ত সাপেক্ষে লকডাউন শিথিল করেছে। এই শিথিলের মধ্যে আজ বৃহস্পতিবার থেকে শর্ত সাপেক্ষে খুলে দিয়েছে সকল বিনোদন কেন্দ্র।
এরই ধারাবাহিকতায় আজ থেকে খুলেছে রাজশাহীর শহীদ জিয়া শিশুপার্ক। দুপুরের দিকে পার্কের ভিতের গেলে কিছু বিনোদন প্রেমিদের আড্ডা দিতে দেখা যায়। কেউ ঘুরে বেড়াচ্ছেন আবার অনেককে বসে খোশ গল্প করতে দেখা যায়। আবার অনেকেই পরিবারের সদস্য নিয়ে এসেছেন পার্কে বেড়াতে। ছোট ছোট শিশুদের দেখা যায় পার্কে খেলা করতে। দেখে মনে হলো বন্দিদশা থেকে তারা দীর্ঘদিন পরে মুক্তি পেয়েছে। ফিরে পেয়েছে প্রাণের স্পন্দন।
বেড়াতে আসা আরমান আলী, শিলা, মমতা ও শিশু মিতু মনি বলেন, দীর্ঘদিন থেকে তারা কোথাও প্রাণ খুলে বেড়াতে পারেনি। আজ থেকে বিনোদন পার্কগুলো খুলে দেয়ায় তারা নিশ্চিন্তে বেড়াতে পারছেন। প্রাণ খুলে ফাঁকা স্থানে নিশ্বাস নিতে পারছেন। বিনোদন কেন্দ্র গুলো খুলে দেয়ায় সরকারকে ধন্যবাদ জানান তারা।
পার্কটি সিটি কর্পোরেশেনের অন্তর্গত হলেও বর্তমানে ভাড়ায় চলছে। প্রতিদিন ভাড়া দিতে হয় বলে জানান পার্কের তত্বাবধায়ক মাহবুব। তিনি বলেন, পার্কটি ঢাকার এক ব্যবসায়ী মামুন পারভেজ নামে এক ব্যক্তি লিজ নেন। কিন্তু বর্তমানে লিজের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। এছাড়াও মামুন পারভেজ মারা যাওয়ায় তাঁর স্ত্রী শামীমা পারভেজ এই পার্কটি বর্তমানে চালাচ্ছেন। তবে এখন এটা লিজ নয় ভাড়া পদ্ধতিতে চলছে বলে জানান মাহবুব।
তিনি আরো বলেন, এই করোনা কালে গত বছর ২০২০ সালে ছয় মাস এবং ২০২১ সালে মার্চ থেকে আগস্টের ১৮ তারিখ পর্যন্ত বন্ধ ছিলো। এতে অনেক ক্ষতি হয়েছে তাদের। তবে সিটি কর্পোরেশন এই সময়ে ভাড়া নিচ্ছেনা। এছাড়াও তাদের ভ্যাট মওকুফ করা হয়েছে। এতে মালিক পক্ষ অনেক বেঁচে গেছেন। তবে বিদ্যুৎ বিল তাদের নিয়োমিত দিতে হচ্ছে।
এছাড়াও পার্ক বন্ধ থাকায় এতদিন কোন কর্মচারী-কর্মকর্তা এই সময়ে বেতন পাননি বলে জানান তিনি। ফলে তারা মানবেতর জীবন যাপন করছেন। উপস্থিত কর্মচারীরা সরকারের নিকট প্রণোদনা প্রদানের দাবী জানান। সেইসাথে পার্ক আর বন্ধ না করার অনুরোধ করেন তারা। এছাড়া পার্কটি পূর্বের ন্যায় চলবে উল্লেখ করেন তিনি।
তিনি বলেন, পার্কে যথেষ্ট পরিমানে নিরাপত্তা ব্যবস্থা রয়েছে। এছাড়াও গতকাল থেকে ৫টি রাইডার নিয়ে চলছে পার্কের কার্যক্রম। রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এ.এইচ.এম খায়রুজ্জামান লিটন ও রাসিক ১৮নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শহিদুল ইসলামের নির্দেশনায় এবং তত্বাবধানে অন্যান্য রাইডার গুলো পরিস্কার, মেরামত এবকং সৌন্দর্য বর্ধনের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে। আগামী দুই থেকে তিন দিনের মধ্যে সব কাজ সম্পূর্ণ করা হবে বলে জানান তিনি।
এদিকে অন্যান্য কর্মচারী-কর্মকর্তারা বলেন, তারা সম্পূর্ণভাবে সরকারের দেয়া স্বাস্থ্যবিধি মেনে পার্ক পরিচালনা করবেন। তাদের এবং তাদের পরিবারের কথা ভেবে আগামীতে পার্ক বন্ধ না করার জন্য সরকারের প্রতি অনুরোধ করেন তারা।