নিজস্ব প্রতিবেদক: স্বাধীনতার ঘোষক ও গনতন্ত্রের প্রবক্তা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়ারউর রহমান ১৯৭৮ সালে বিএনপি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। মহানর স্বাধীনতা যুদ্ধে স্বাধীনতার ঘোষনা দিয়ে বাংলার মানুষকে জাগ্রত করেছিলেন। তাঁর ঘোষনার মধ্যে দিয়ে দিশেহারা জনগণ ধেকে স্বাধীন করতেহ যুদ্ধে ঝাপিয়ে পরেছিলেন। বিএনপি’র ৪৩ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে রাজশাহী মহানগর বিএনপি আজ বুধবার দিন ব্যাপি নানা কর্মসূচী পালনের উদ্বোধণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বেগম খালেদা জিয়ার অন্যতম উপদেষ্টা, সাবেক মেয়র ও সংসদ সদস্য মিজানুর রহমান মিনু এই কথাগুলো বলেন।
তিনি আরো বলেন, ৪৩ বছরের পথযাত্রায় শহীদ জিয়া, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও তাঁদের সুযোগ্য জেষ্ঠ্য পুত্র তারেক রহমান এই দলের নেতৃত্ব দিয়েছেন এবং এখনও দিচ্ছেন। নানা চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে বিএনপি তার রাজনৈতিক আদর্শ ‘বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ’ এর পতাকা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে । দেশ ও জাতির প্রতি অঙ্গিকারাবদ্ধ এই দল ৪৩ বছরে দেশবাসীর সমর্থন ও ভালবাসায় সিক্ত হয়ে বিএনপি বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ রাজনৈতিক দলে পরিণত হয়েছে।
মিনু বলেন, দল এবং দেশবাসী এখন খুব খারাপ সময় পার করছে। ইস্পাত কঠিন গণঐক্যের মাধ্যমে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব সুরক্ষা, বহুদলীয় গণতন্ত্র পুণরুদ্ধার, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা, মৌলিক অধিকার ও অর্থনৈতিক মুক্তির মাধ্যমে স্বনির্ভর, গণতান্ত্রিক ও মানবিক রাষ্ট্র গঠন করাই এখন অঙ্গীকার হতে হবে। এই কাজ করতে গিয়ে জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসীদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হয়েছে, চক্রান্ত হয়েছে, যার ধারাবাহিকতা এখনও চলছে বলে উল্লখ করেন তিনি।
তিনি বলেন, মহান স্বাধীনতার ঘোষক বিএনপি’র প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান নির্মমভাবে হয়েছেন । দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে চক্রান্তমূলক মিথ্যা মামলায় ফরমায়েসী রায় দিয়ে তাঁকে ২৫ মাস অন্যায়ভাবে কারারুদ্ধ করে রাখা হয়েছিল। এখনো নানা শর্তে তিনি বন্দি। দলের অগণিত নেতাকর্মীকে পোশাকি-অপোশাকি ঘাতকের গুলিতে প্রাণ দিতে হয়েছে। ৩৫ লক্ষ নেতাকর্মী মিথ্যা মামলায় জর্জরিত। পাঁচ শতাধিক নেতাকর্মীকে গুম করা হয়েছে। এত কিছুর পরেও বিএনপির নেতাকর্মীরা মনোবল হারান্নি। থেমে নেই বিএনপি’র অগ্রযাত্রা।
তিনি আরো বলেন, বর্তমানে চরম ফ্যাসিবাদী শাসন কায়েম করে গণতন্ত্র, আইনের শাসন এবং মৌলিক অধিকার হরণের মাধ্যমে রাজনীতির পথকেই কনঠাসা ও সংকুচিত করে ফেলা হয়েছে। দেশ পরিচালনায় আওয়ামী লীগ সরকারের ব্যর্থতা, দুর্নীতি, লুটপাট ও অনাচার আড়াল করতে একদিকে যেমন ফ্যাসিবাদ কায়েম করেছে, তেমনি অন্যদিকে মিথ্যাচার ও ইতিহাস বিকৃতির মাধ্যমে জনগণের দৃষ্টি অন্যদিকে ফেরাতে ব্যস্ত বর্তমান সরকার। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বীর উত্তমকে নিয়ে চলছে সীমাহিন মিথ্যার। এই মিথ্যাচার তাঁকে নিয়ে আওয়ামী লীগের এই জঘন্য ষড়যন্ত্র কোনভাবেই সফল হতে দেয়া যাবেনা বলে বক্তব্যে উল্লেখ করেন তিনি।
তিনি বলেন, দলের ৪৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে আজকে সবাইকে অঙ্গীকার হতে হবে- যেকোন পরিস্থিতি মোকাবেলায় অতীতের মতোই ঐক্যবদ্ধ ও দৃঢ় থেকে কাজ করতে হবে নিরলসভাবে। জনগণের সাথে আরো গভীরভাবে সম্পৃক্ত থেকে তাদেরকে সাথে নিয়ে লড়াই করতে হবে দুঃশাসনের বিরুদ্ধে। মহান স্বাধীনতার চেতনা বাস্তবায়ন করে বিএনপি দেশের সমৃদ্ধি, গণতন্ত্রায়ণ ও দেশগঠনে কাজ করছে।
বিএনপি সবসময় জনগণের পাশে ছিল, আজীবন থাকবে। আর লড়াইয়ে সবাইকে একসাথে রাজপথে নামার আহবান জানান তিনি। বক্তব্য শেষে জাতীয় ও পতাকা উত্তোলন, বেলুন ও ফেস্টুন এবং পায়রা উড়িয়ে দিনের কর্মসূচীর উদ্বোধন করেন তিনিসহ দলের অন্যান্য শীর্ষ নেতৃবৃন্দ। এছাড়ার নগরীর প্রতিটি দলীয় কার্যালয়ে দলীয় ও জাতীয় পতাকা উত্তোলণ করা হয়েছে। সেইসাথে আজ বিকেল সাড়ে ৪টায় বিএনপি মহানগর দলীয় কার্যালয়ে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক, রাজশাহী মহানগর বিএনপি’র সভাপতি ও রাসিক সাবেক মেয়র মোহাম্মদ মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল। বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপি কেন্দ্রীয় নেতা ও পুঠিয়া দূর্গাপুরের সাবেক সংসদ সদস্য এ্যাডভোকেট নাদিম মোস্তাফা, বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির ত্রাণ ও পুনর্বাসন বিষয়ক সহ-সম্পাদক ও রাজশাহী মহানগর বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট শফিকুল হক মিলন।
রাজশাহী মহানগর বিএনপি যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ওয়ালিউল হক রানার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মতিহার থানা বিএনপি’র সভাপতি আনসার আলী, শাহ্ মখ্দুম থানা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক দিলদার হোসেন, বিএনপি নেতা আনোয়ার হোসেন উজ্জল, মহানগর বিএনপি’র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বজলুল হক মন্টু, মহানগর কৃষক দলের আহবায়ক ওয়াদুদ হাসান পিন্টু, সদস্য সচিব গোলাম সাকলায়েন ইকো, মহানগর মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি নজরুল ইসলাম খোকা, ৩নং ওয়ার্ড বিএনপি’র সভাপতি ওয়াজির উজির, ৬নং ওয়ার্ড বিএনপি’র সভাপতি গোলাম নবী গোলাপ, ৭নং ওয়ার্ড বিএনপি’র সভাপতি বজুলর রহমান কচি, ১নং ওয়ার্ড বিএনপি’র সভাপতি শহিদ আলম ও সাধারণ সম্পাদক শামীম রেজা।
এছাড়াও যুবদল কেন্দ্রীয় কমিটির রাজশাহী বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ও রাজশাহী জেলা যুবদলের সভাপতি মোজাদ্দেদ জামানী সুমন, মহানগর যুবদলের সভাপতি আবুল কালাম আজাদ সুইট, সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান রিটন, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন বাবলু, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি জাকির হোসেন রিমন, সাধারণ সম্পাদক আবেদুর রেজা রিপন ও সাংগঠনিক সম্পাদক আনন্দ কুমার, মহানগর মহিলা দলের যুগ্ম আহবায়ক এ্যাডভোকেট রওশন আরা পপি, অধ্যাপিকা সখিনা খাতুন, সামসুন্নাহার ও জরিনা খাতুন।
আরো উপস্থিত ছিলেন ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের রাজশাহী বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ও মহানগর ছাত্রদলের মহানগর ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম রবি, সভাপতি আসাদুজ্জামান জনি, যুগ্মা সাধারণ সম্পাদক আকবার আলী জ্যাকি, সাংগঠনিক সম্পাদক মাকসুদুর রহমান সৌরভ, রাবি ছাত্রদলের আহবায়ক সুলতান আহম্মেদ রাহী ও সদস্য সচিব সামসুদ্দিন চৌধুরী সানিনসহ মহানগর বিএনপি’র সাংগঠনিক ৩৫ টি ওয়ার্ডের বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগি সংগঠনের নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। সব শেষে শহীদ জিয়া ও তাঁর পরিবারের মৃত সদস্য, মৃত ও নিহত বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগি সংগঠনের নেতাকর্মীর আত্মার মাগফেরাত, করোনা থেকে মুক্তি ও মুসলিম উম্মাহর শান্তি কামনায় দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।