নিজস্ব প্রতিবেদক: কোভিড-১৯ এর কারণে প্রায় দেড় বছর সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার পর আজ বোরবার হতে কলেজ, হাইস্কুল ও প্রাথমিক বিদ্যালয় খুলেছে। তবে পাঠদানে অনেক নিয়মনীতি সরকার বেঁধে দিয়েছে। সেইসাথে কঠোরভাবে সেগুলো মেনে চলার জন্য নির্দেশনা দিয়েছে শিক্ষামন্ত্রণালয়। এসব নির্দেশনা মাথায় নিয়ে সারা দেশেরন্যায় রাজশাহীতে উৎসবের আমেজে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এসেছে শিক্ষার্থীরা। দীর্ঘদিন পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলায় আনন্দ উচ্ছ¡াস জানিয়েছেন শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবগণ।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার সময়ের পূর্ব থেকে প্রতিষ্ঠানের প্রধান ফটকের সামনে শিক্ষার্থীদের বরণ করে নিতে মাস্ক, সাবান, হ্যান্ডওয়াশ, হ্যান্ডস্যানিটাইজার ও থার্মোমিটার নিয়ে অপেক্ষায় ছিলেন শিক্ষক কর্মচারীরা। তবে কোথাও কোথাও অভিভাকদের জটলা স্বাস্থ্যবিধি মানাতে কিছুটা ব্যাঘাত ঘটিয়েছে।
এদিকে দীর্ঘ ১৮ মাস অপেক্ষার পালা শেষে রাজশাহীর প্রাণহীন শিক্ষাঙ্গনে লেগেছে প্রাণের ছোঁয়া। সকাল ৯টায় জেলার ২ হাজারের অধিক প্রতিষ্ঠানে শুরু হয়েছে শিক্ষা কার্য্যক্রম। দীর্ঘ দিন পর একত্রিত হতে পেরে দারুণ উচ্ছসিত শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
শুরুর দিনে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থী এবং প্রাথমিকের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের প্রতিদিন ক্লাস অনুষ্ঠিত হচ্ছে। অন্যান্য শ্রেণির শিক্ষার্থীদের সপ্তাহে এক দিন করে ক্লাস হবে। মাধ্যমিক পর্যায়ে যেদিন যে শ্রেণির ক্লাস থাকবে, সেদিন ঐ শ্রেণির সর্বোচ্চ দুটি ক্লাস হবে। প্রাথমিকে হবে দিনে তিনটি করে ক্লাস। প্রতিষ্ঠান গুলো সরকারের নির্ধারিত ১৭টি নির্দেশনা মানছেন কি না সেটি তদারিক করছে শিক্ষা বিভাগ।
এদিকে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে নগরীর সরকারী ল্যাবরেটরী হাই স্কুল পরিদর্শনে আসেন রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার ডক্টর হুমায়ুন কবীর ও জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিল। সঙ্গে ছিলেন জেলা শিক্ষা অফিসার নাসির উদ্দিনসহ রাজশাহীর শিক্ষা অফিসারগণ। এ সময় তাঁরা স্কুলের পরিস্কার পরিচ্ছনতা পর্যবেক্ষণ করেন ও শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যবিধি মানার বিষয়ে দিকনির্দেশনা দেন।
বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসক শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের দিকনির্দেশনা মূলক বক্তব্য প্রদান করে। বিভাগীয় কমিশনার হুমায়ুন কবির বলেন, সরকারি ভাবে আজ রোববার থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খেলার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। দীর্ঘ ১৭ মাস পর শিক্ষার্থীরা সবাই স্কুলে এসে আনন্দিত। তাদের স্বাস্থ্যগত বিষয় গুলো সঠিক ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হবে। কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রকার গাফেলতি সহ্য করা হবে না বলে জানান তিনি।
এ বিষয়ে রাজশাহী জেলা শিক্ষা অফিসার নাসির উদ্দিন জানান, শহর বা গ্রামের স্কুল নয়, সব প্রতিষ্ঠানকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রতিষ্ঠান চালাতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। প্রথম দিনের কারণে অনেকে হয়তো সেটি বুঝে উঠতে পারেননি। এরপর থেকে সব ঠিক হয়ে যাবে। বিষয়টি মনিটরিংয়ে রাখা হয়েছে।
এদিকে রাজশাহী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আব্দুস সালাম বলেন, জেলার প্রতিটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে স্কুল পরিচালনার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। প্রথম দিনে উৎসবমূখর পরিবেশে র্পাঠদান হয়েছে। তিনি নগরীর বিভিন্ন স্কুল পরিদর্শন করেছেন। বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, শিক্ষক এবং আগত অভিভাবকগণ অত্যন্ত খুশি। এছাড়াও প্রতিটি স্কুল গেটে হাতধোয়ার ব্যবস্থা, হ্যান্ডস্যানিটাইজার ও মাস্ক এর ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেইসাথে এগুলো নিশ্চিতে শিক্ষক ও কর্মচারীরা কাজ করছেন বলে জানান তিনি। তবে সরকারী যে নির্দেশনা রয়েছে, সেগুলো কোন স্কুল অমান্য করলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান এই জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার।