নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহী মহানগরীতে অবসর প্রাপ্ত এক স্কুল শিক্ষিকা হত্যা মামলার রহস্য ২৪ ঘন্টার মধ্যে উম্মোচন করে ১ ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে বোয়ালিয়া মডেল থানা পুলিশ। গ্রেফতারকৃত আসামীর নাম মিলন শেখ (২৪)। তিনি রাজশাহী মহানগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানার বড়কুঠি ক্যাম্পের মৃত কালু শেখের ছেলে। আসামী পেশায় রংমিস্ত্রী। আসামী মৃত মায়া রাণীর ছাত্র হওয়ার সুবাদে প্রায় বাসায় আসা যাওয়া করতো।
ঘটনা সূত্রে জানা যায়, রাজশাহী মহানগরীর মুন্নুজান সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা মায়া রাণী ঘোষ (৭০) কুমার পাড়াঘোসপাড়ার নিজ বাড়ীতে একাই বসবাস করতেন। নিঃসন্তান হওয়ায় তিনি পুতুল ঘোষ (২৮) নামের একজনকে লালন পালন করতেন। ২১ সেপ্টেম্বর ২০২১ দুপুর সাড়ে ১২ টায় মায়া রাণীর পালিত মেয়ে পুতুল ঘোষ একই মহল্লার শ্বশুরবাড়ি থেকে তাঁকে প্রতিদিনের ন্যায় রান্না করে দেওয়ার জন্য বাসায় আসেন।
বাসায় গিয়ে দেখেন, মায়া রাণী ঘোষের মৃত দেহ পড়ে আছে এবং গলায় একটি ওড়না প্যাঁচানো। এ অবস্থা দেখে সে চিৎকার করলে আশপাশের লোকজনসহ বোয়ালিয়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। এরপর বোয়ালিয়া থানা পুলিশ মৃত দেহের সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত করে লাশ ময়না তদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করেন।
মৃত মায়া রাণীর ছোট ভাই দেবাশিষ ঘোষ (৬২) জানান, তার বোন বাসায় একাকি থাকায় অজ্ঞাতনামা আসামী বা আসামীরা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যা করে তার হাতে, কানে ও গলায় থাকা ২,১০,০০০(দুই লক্ষ দশ হাজার) টাকা মূল্যের স্বর্ণালংকার ও তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন সেট নিয়ে যান। এর অভিযোগের প্রেক্ষিতে বোয়ালিয়া মডেল থানায় একটি নিয়মিত মামলা দায়ের করা হয়।
মামলা দায়েরের পরপরই রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের পুলিশ কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিক এর নির্দেশে হত্যাকান্ডের মূল রহস্য উদঘাটন সহ আসামী সনাক্ত ও গ্রেফতারে কাজ শুরু করে বোয়ালিয়া মডেল থানা পুলিশ।
এরপর অফিসার ইনচার্জ নিবারন চন্দ্র বর্মন পিপিএম এর নেতৃত্বে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই গোলাম মোস্তফা ও তার টিম সাইবার ক্রাইম ইউনিটের তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় এবং গোয়েন্দা তথ্য ব্যবহার করে আজ বুধবার (২২ সেপ্টেম্বর) রাত পৌনে ৩ টায় বোয়ালিয়া মডেল থানার কুমারপাড়া মুন্নুজান স্কুলের সামনে হতে আসামী মিলন শেখকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃত আসামীর দেওয়া তথ্যমতে মৃত মায়া রাণীর ব্যবহৃত স্বর্ণালংকার ও তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন সেট উদ্ধার হয়।
গ্রেফতারকৃত আসামীকে জিজ্ঞাসাবাদে এই হত্যাকান্ডের সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত থাকার কথা স্বীকার করেন। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি আরো জানান, আসামী বাসা ভাড়া নেয়ার মিডিয়া হিসেবে কাজ করার কৌশলে মৃত মায়া রাণীর হাতে, কানে ও গলায়থাকা স্বর্ণালংকার চুরি করে এবং পরিচয় গোপন রাখার জন্যই এই হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে। গ্রেফতারকৃত আসামীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে বলে প্রেস ব্রিফি্ ংএ জানান আইনশৃংখলা বাহিনী।