নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশে জাতিতে জাতিতে ও মানুষে মানুষে কোন ভেদাভেদ নেই। এদেশে কেউ সংখ্যা লঘু বা সংখ্যা গুরু নয়। সবাই সমান। এ কিথাটি বাংলাদেশের স্থপতি জাতিরজনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যেমন বলে গেছেন, তেমনি তাঁর সুযোগ্য কন্যা বাংলাদেশের উন্নয়নের স্বপদ্রষ্ঠা জননেত্রী শেখ হাসিনা একই কথা বলেছেন। সেইসাথে কোন জাতিকে সংখ্যা লঘু বলতে নিষেধ করেছেন। সোমবার রাজশাহী বিভাগীয় ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠির কালচারাল একাডেমির আয়োজনে অত্র একাডেমির হলরুমে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠির সংস্কৃতি সংরক্ষণে করনীয় শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার জি এস এম জাফরউল্লাহ্ এনডিসি এই কথাগুলো বলেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের রোড়ম্যাপে রয়েছে। বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত করার ঘোষনা দিয়েছেন। সেই ঘোষনা অনুযায়ী তাঁরা সবাই কাজ করছেন। এর মধ্যে কোন জাতিকে ছোট করে দেখে পিছিয়ে রেখে কাংখিত লক্ষে পৌঁছাতে কষ্টকর হয়ে পড়বে বলে বক্তব্যে উল্লেখ করেন তিনি।
প্রধান অতিথি আরো বলেন, ছোট ছোট উন্নয়ন এক সময়ে বড় আকার ধারন করে। এজন্য ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠির জনগণকে হীনমন্যতায় না ভুগতে পরামর্শ দেন তিনি। সেইসাথে লেখাপড়া শিখে নিজের সম্প্রদায়কে বিশ্বের দরবারে তুলে ধরতে নতুন প্রজন্মকে আহ্বান জানান। তিনি যতদিন রাজশাহীতে থাকবেন এবং অন্যত্র বদলি হলেও সুযোগ পেলে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠির জনগণের জন্য কাজ করবেন বলে উল্লেখ করেন তিনি। এদিকে সেমিনারে উপস্থিত হওয়ার পূর্বে প্রধান অতিথি অত্র একাডেমির প্রধান ফটক ও সংস্কারকৃত হলরুমের উদ্বোধন করেন। শেষে তিনি ক্ষুদ্র নৃগোষ্টির শিল্পিদের পরিবেশনায় সাংস্কৃতিক পরিবেশনা নাচ ও গান উপভোগ করেন।
সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন রাজশাহী জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ও রাজশাহী বিভাগীয় ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠির কালচারাল একাডেমির উপপরিচালক কল্যাণ চৌধুরী। আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অত্র একাডেমির কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্য অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক বীর মুক্তিযোদ্ধা রুহুল আমীন প্রামানিক, যোগেন্দ্র নাথ সরেন ও চিত্তরঞ্জন সরদার।
ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠির সংস্কৃতি সংরক্ষণে করনীয় ও বাধা বিষয়বস্তুর উপরে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অত্র একাডেমির গবেষণা কর্মকর্তা বেনজামিন টুডু। এসময়ে আরো উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী বিভাগীয় ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠির কালচারাল একাডেমির কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্য সুসেন কুমার শ্যামদুয়ার ও কলেস্তিনা হাঁসদা, সংগীত প্রশিক্ষক মানুয়েল সরেন ও কবীর আহম্মেদ বিন্দু এবং সহকারী গবেষণা কর্মকর্তা মোহাম্মদ শাহজাহানসহ রাজশাহী বিভাগের বিভিন্ন জেলা, থানা ও উপজেলা থেকে আগত সঁওতাল, উরাও, মুন্ডা, মাহ্লে, মাহাতো কোল, কডা, গড়াইত ও বর্মনসহ অন্যান্য সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দ এবং বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আদিবাসী শিক্ষার্থীবৃন্দ। সব শেষে সেমিনারে উপস্থিত বিভিন্ন সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দ মূল প্রবন্ধের উপরে আলোচনায় অংশগ্রহন করেন।