নিজস্ব প্রতিবেদক: মেরিনা হাঁসদা, একজন সংগ্রামী নারীর নাম। তিনি একজন সামান্য গৃহীনি থেকে আজ পুরোপুরি সমাজসেবক হিসেবে নিজেকে মেলে ধরেছেন। তিনি রাজশাহী জেলার, পবা উপজেলার, নতুন মধুপুর গ্রামে জন্মগ্রহ করেন। চার ভাই বোনের মধ্যে তিনিই ছিলেন কনিষ্ঠ। পিতা অন্দ্রিয়াস হাঁসদা ও মাতা শান্তিনা মার্ডি মাত্র সতেরো বছর বয়সে বিয়ে দিয়ে দেন তাঁর। বিয়ের পর এস.এস.সি পাস করার সুযোগ হয়নি। বিয়ের তিন বছরের মধ্যে দুটি সন্তানের জন্ম হয়। বিয়ের পাঁচ বছর পর এস এস সি পাস করেন বলে জানান মেরিনা হাঁসদা।
সেই সময়েই জাতিস্বত্তা ভিত্তিক সংগঠনের সাথে যুক্ত হন এবং বিভিন্ন উন্নয়ন সংস্থার উপকার ভোগী হিসেবে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। তিনি রাজশাহীর পবা উপজেলার দামকুড়া হাট এলাকায় স্বামীর সাথে বসবাস করতেন। সেইসাথে স্বামীর প্রতিষ্ঠিত মাসাউস নামে এনজির হয়ে বিভিন্ন অফিসে স্বামীর সঙ্গে যাতায়াত এবং সভা সেমিনারে উপস্থিত হতেন। সেখান থেকেই শুরু হয় তাঁর সমাজ সেবার হাতে খড়ি। তিনি বলেন এ অবস্থায় হঠাৎ করে স্বামীর মৃত্যু হলে তিনি হতভম্ব ও সন্তানদের নিয়ে অসহায় হয়ে পরেন। বছল খানেব এভাবে চলে যাওয়ার পরে তিনি স্বামীর প্রতিষ্ঠাকৃত উন্নয়নমূলক সংস্থা মাসাউস এর হাল ধরে সেটাকে অবলম্বন ঘুড়ে দাঁড়ান। সেইসাথে আবার নতুন করে পড়াশোনা আরম্ভ করেন। সংস্থার নির্বাহী পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেই প্রথমে কিছু উন্নয়নমূলক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করার পদক্ষেপ হাতে নেন বরে জানান মেরিনা।
এক সময়ে তিনি দাতা সংস্থা একশন এইডের অনুদানে যুবদের সামাজিক দায়বদ্ধতা নিয়ে একটি স্বল্পমেয়াদী প্রকল্প বাস্তবায়ন করেন। মেনোনাইট সেন্ট্রাল কমিটি (এমসিসি) থেকে বরাদ্দের বদলে একটি প্রকল্প আহবান করেন এবং আরো একটি প্রকল্প হাতে নেন। তিনি প্রকল্পের মাধ্যমে “মাতৃভাষায় শিক্ষা কার্যক্রম” এবং অন্যটি “আন্তর্জাতিক জাতী স্বত্ত্বামূলক শান্তি বিনির্মান” কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে চলেছেন। সিপিআরডি এর অংশীদারিত্বে স্বল্পমেয়াদী “লস এন্ড ড্যামেজ” প্রকল্প বাস্তবায়ন করছেন। তার দুটি প্রকল্পে মোট ৫ জন কর্মকর্তা এবং ১০ জন স্কুল শিক্ষিকার কর্মসংস্থান হয়েছে যারা সমাজ উন্নয়নে নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছেন বলে তিনি উল্লেখ করেন।
মেরিনা বলেন, এ সকল অবদানের জন্য পবা উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা তাঁকে ডেকে পাঠান এবং জয়িতা পুরস্কারের জন্য আবদেন করতে উদ্বুদ্ধ করেন। সেইসাথে তিনি অনেক সহযোগিতা করেন বলেন জানান তিনি। এই আবেদনের প্রেক্ষিতে যাচাই বাছাই করে রাজশাহী মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর তাঁকে জয়িতা খেতাবে মনোনীত করেন এবং অকল্পনীয় সম্মানে ভূষিত করেন।
তিনি বলেন, জয়িতা পুরস্কার পাবেন তিনি এটা আশা করেননি। এই পুরস্কার মাহলে সম্প্রদায়ের জনগণসহ তাঁকে হতদরিদ্র জনগণেল হয়ে কাজ করার আরো বেশী দায়িত্ব বাড়িয়ে দিয়েছে। আগামীতেও তিনি এই যেন এই ধরনের সমাজসেবা করে যেতে পারেন তার জন্য সকলের দোয়া ও সহযোগিতা প্রার্থনা করেন মেরিনা হাঁসদা।