নিজস্ব প্রতিবেদক: বিএনপির আগামী দিনের কর্মসূচি তুলে ধরে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, আগামী ১৩ ডিসেম্বর মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও মির্জা আব্বাসসহ সব নেতাকর্মীর গ্রেফতার ও হত্যার প্রতিবাদে ঢাকা মহানগরসহ দেশের সব মহানগরীতে গণবিক্ষোভ ও সমাবেশ এবং ২৪ ডিসেম্বর সারা দেশের মহানগর ও উপজেলা শহরে বিক্ষোভ কর্মসূচির করা হবে বলে কমলাপুরের গোলাপবাগ মাঠে বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশ হতে এই কর্মসূচী ঘোষনা করেন তিনি।
একই সঙ্গে সমাবেশে সরকার পতনের দশ দফা দাবি বাস্তবায়নে আগামী ২৪ ডিসেম্বর সারা দেশে মহানগর ও জেলা শহরে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হবে বলে জানান খন্দকার মোশাররফ হোসেন। এসব কর্মসূচিতে বিএনপির সঙ্গে আন্দোলনে যোগদানকারী দলগুলোও অংশগ্রহণ করবে বলে জানান তিনি। শনিবার রাজধানীর কমলাপুরের গোলাপবাগ মাঠে ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন।সেইসাথে খন্দকার মোশাররফ হোসেন বিএনপি’র ১০ দফা দাবি তুলে ধরেন।
দাবিগুলো হচ্ছে
১. বর্তমান জাতীয় সংসদ বিলুপ্ত করে ক্ষমতাসীন সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। ২. ১৯৯৬ সালে সংবিধানে সংযোজিত ধারা ৫৮-খ, গ ও ঘ-এর আলোকে একটি দল নিরপেক্ষ নির্বাচনকালীন সরকার/অন্তবর্তীকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন। ৩. নির্বাচনকালীন দল নিরপেক্ষ সরকার/ অন্তবর্তীকালীন তত্ত্ববধায়ক সরকার বর্তমান অবৈধ নির্বাচন কমিশন বাতিল করে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য একটি স্বাধীন ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন, উক্ত নির্বাচন কমিশন অবাধ নির্বাচনের অনিবার্য পূর্বশর্ত হিসাবে ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ নিশ্চিত করতে আরপিও সংশোধন, ইভিএম পদ্ধতি বাতিল ও পেপার ব্যালটের মাধ্যমে ভোটের ব্যবস্থা করা এবং স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলীয় প্রতীক ব্যবহার বাতিল করা।
৪. খালেদা জিয়াসহ সব বিরোধী দলীয় নেতাকর্মী, সাংবাদিক এবং আলেমদের সাজা বাতিল, সব মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও রাজনৈতিক কারা বন্দিদের অনতিবিলম্বে মুক্তি, দেশে সভা, সমাবেশ ও মত প্রকাশে কোনো বাধা সৃষ্টি না করা, সব দলকে স্বাধীনভাবে গণতান্ত্রিক ও শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালনে প্রশাসন ও সরকারি দলের কোনও ধরনের হস্তক্ষেপ বা বাধা সৃষ্টি না করা, স্বৈরাচারী কায়দায় বিরোধী কণ্ঠস্বরকে স্তব্ধ করার লক্ষ্যে নতুন কোনও মামলা ও বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার না করা।
৫. ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন-২০১৮ এবং বিশেষ ক্ষমতা আইন-১৯৭৪সহ মৌলিক মানবাধিকার হরণকারী সব কালা-কানুন বাতিল করা। ৬. বিদ্যুৎ, জ্বালানি, গ্যাস ও পানিসহ জনসেবা খাতের মূল্যবৃদ্ধির গণবিরোধী সরকারি সিদ্ধান্ত বাতিল। ৭. নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে আনা, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজারকে সিন্ডিকেট মুক্ত করা। ৮. গত ১৫ বছর ধরে বিদেশে অর্থপাচার, ব্যাংকিং ও আর্থিক খাত, বিদ্যুৎ-জ্বালানি খাত ও শেয়ার বাজারসহ রাষ্ট্রীয় সবক্ষেত্রে সংঘটিত দুর্নীতি চিহ্নিত করতে একটি কমিশন গঠন/দুর্নীতি চিহ্নিত করে অতি দ্রুত যথাযথ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ।
৯. গত ১৫ বছরে গুমের শিকার সব নাগরিককে উদ্ধার এবং বিচারবহির্ভূত হত্যা ও রাষ্ট্রীয় নির্যাতনের প্রতিটি ঘটনার দ্রুত বিচারের ব্যবস্থা করে যথাযথ শাস্তি নিশ্চিত, ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বাড়িঘর, উপাসনালয় ভাঙচুর এবং সম্পত্তি দখলের জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা করা। ১০. আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, প্রশাসন ও বিচার বিভাগকে সরকারি হস্তক্ষেপ পরিহার করে স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ দেওয়া।