নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহীর আদালত চত্বরে হট্টগোলে জড়িয়ে ছিলো আওয়ামী লীগের দুই পক্ষ। রোববার সকাল থেকে দুপুর দুইটা পর্যন্ত আদালত এলাকায় রাজশাহী-৬ (বাঘা-চারঘাট) আসনের সংসদ সদস্য ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম এবং আক্কাস আলীর সমর্থকদের মধ্যে হট্টোগোল হয়। এসময়ে আক্কাস আলীর সাথে থাকা নেতৃবৃন্দ ও সমর্থকরা রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের পক্ষে স্লোগান দিতে থাকেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শাহরিয়ার আলমের নির্বাচনী এলাকার বাঘা পৌরসভার মেয়র আক্কাস আলীসহ আওয়ামী লীগ নেতারা আদালতে হাজিরা দিতে আসলে আদালত চত্বরে অবস্থান নেন শাহরিয়ার আলমের অনুসারীরা। দুপুর ১ টার দিকে হাজিরা দিয়ে বের হয়ে আক্কাস আলী সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। তখন পাশেই জেলা যুবলীগের সভাপতি প্রার্থী জোবায়ের হাসান রুবনের নেতৃত্বে নেতাকর্মীরা শাহরিয়ার আলমের পক্ষে স্লোগান শুরু করেন।
আক্কাস আলী সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলা শেষে সমর্থকদের নিয়ে আদালত চত্বরে ব্যানার নিয়ে মিছিল বের করেন। ‘নির্যাতিত আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীবৃন্দ’র ব্যানারে আয়োজিত ঐ মিছিলের ব্যানারে লেখা ছিল ‘বাঘা-চারঘাটের সংসদ সদস্য পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম কর্তৃক আর কত নির্যাতন সইব। এ সময় তারা মেয়র লিটনের পক্ষে শ্লোগান দেন। অন্যদিকে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর সমর্থকরাও পাল্টা শ্লোগান দেন। এ সময়ে আদালত চত্বর উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। তবে ব্যাপক পুলিশ থাকায় আদালত চত্বনে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।
এদিকে শাহরিয়ার আলমের সমর্থকদের দাবি সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের প্ররোচনায় একটি পক্ষ নৌকার প্রার্থীদের বিরোধিতা করছেন। আর আক্কাস সমর্থকদের দাবি পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম ক্ষমতা ধরে রাখতে দলের পুরোনো ও ত্যাগী নেতাকর্মীদের নামে একের পর এক মামলা দিয়ে কোনঠাসা করে রাখছেন।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বাঘা পৌরসভার মেয়র আক্কাস আলী বলেন, ২০২২ সালে ২১ মার্চ বাঘা শাহদৌলা ডিগ্রি কলেজে থানা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে নিজেদের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি হয়। সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে তাঁকেসহ আওয়ামী লীগের শতাধিক নেতাকর্মীদের নামে মামলা করা হয়। পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের নির্দেশে এই মামলাগুলো করা হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। তিনি অভিযোগ করে বলেন, দলের লেবাস পরে একটা রাষ্ট্রীয় দায়িত্বে থেকে নৌকার বিরুদ্ধে ভোট করে অন্য দলের মানুষকে তিনি জেতান, আর আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নামে মামলা দেন। এসব ঘটনা দলের লোক কীভাবে মেনে নেবে? মনে হয় না এই মানুষকে নৌকা প্রতীক দিলে কেউ ভোট দেবে বলে তিনি বক্তব্যে উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, ২০১৫ সালে নার্গিস, ২০১৬ সালে বাবলু চকরাজ পুর ইউনিয়নে এবং ১৭ ও ২১ সালে তিনি বাঘা পৌরসভায় নৌকা প্রতীকে ভোট করেন। এই নির্বাচনগুলোতে শাহরিয়ার আলম নৌকা প্রতীকের প্রার্থীদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেন এবং অন্য দলের প্রার্থীকে জেতাতে সহযোগিতা করেন। ফলে ঐ সব নির্বাচনে নৌকা প্রতীক পরাজিত হয়। আক্কাস আলী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে তাঁর নামে ৭টি মামলা হয়েছে। যেখানে আসামি করা হয়েছে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের একাধিক নেতাকর্মীকে।
শাহরিয়ার আলমের সমর্থক সরদহ ইউনিয় পরিষদের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা হাসানুজ্জামান মধু বলেন, বাঘা পৌরসভার মেয়র আক্কাস আলী আওয়ামী লীগ করলেও সব সময় দল ও স্থানীয় এমপি শাহরিয়ার আলমের বিরুদ্ধে অবস্থান নেন। নৌকার ও দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে কাজ করেন। অনুসারীদের নিয়ে তিনি দলের মধ্যে সর্বদাই বিশৃঙ্খলা করেন বলে দাবী করেন।