নিজস্ব প্রতিবেদক: ঐতিহ্যবাহী “ডালভাত ঝিঙ্গাইং তরকারী, জিতিয়া পরবোভারি” স্লোগানকে সামনে রেখে ঐতিহ্যবাহী আচার, অনুষ্ঠান, আলোচনা সভা ও নাচ ও গানের মাধ্যমে জাকজমকপূর্ণ ভাবে সারাদিন ব্যাপী ঐতিহ্যবাহী জিতিয়া পার্বণ অনুষ্ঠিত হয়। গোদাগাড়ী উপজেলার কাকনহাট পৌরসভা অডিটরিয়ামে শুক্রবার জিতিয়া উদযাপন কমিটির আয়োজনে এবং রাজশাহী ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর কালচারাল একাডেমী, সিসিবিভিও সংস্থা, কারিতাস বাংলাদেশ, ইউসেপ বাংলাদেশ ও রক্ষাগোলা সমন্বয় কমিটির সহযোগিতায় জিতিয়া পার্বনের শুরুতে বর্নাঢ্য র্যালী অনুষ্ঠিত হয়।
র্যালি শেষে জিতিয়ার ঠাকুরকে বরণের মধ্য দিয়ে এই পার্বনের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। জিতিয়া ঠাকুর আচার রীতি ও পিঠা আর্শিবাদ ও পিঠা বিতরণ এবং জিতিয়ার সংক্ষিপ্ত ইতিহাস বর্ণনা করেন। পরিশেষে বিশেষ প্রার্থনার মধ্য দিয়ে প্রথম পর্বের আনুষ্ঠানিকতা শেষ করেন। এরপর শুরু হয় আলোচনা সভা। আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের চিকিৎসক, সমাজসেবী ও মাহালে আদিবাসী ওয়েলফেয়ার সোসাইটি’র সভাপতি লক্ষীরাম মাহালী।
জিতিয়া উদযাপন কমিটির সভাপতি সিষ্টি বারে’র সভপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ভারতের কল্যাণী বিশ^বিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের সহাকারী অধ্যাপক ও মাহলে আদিবাসী ওয়েলফেয়ার সোসাইটি’র সাধারণ সম্পাদক কালাচাঁন মাহালী, মাহলে ল্যাঙ্গুয়েজ এন্ড ডেভলপমেন্টকমিটি (এমএলডিসি)-এর সভানেত্রী ও বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা মাসাউস’র নির্বাহী পরিচালক মেরিনা হাঁসদা, রাজশাহী ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর কালচারাল একডেমীর গবেষণা কর্মকর্তা বেনজামিন টুডু, বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা সিসিবিভিও’র উর্দ্ধতন মাঠ কর্মকর্তা ও ইনচার্জ নিরাবুল ইসলাম।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন রক্ষাগোলা সমন্বয় কমিটির সভাপতি সরল এক্কা, মেনোনাইট সেন্ট্রাল কমিটি, বাংলাদেশ (এমসিসিবি)-এর প্রতিনিধি চাদ স্টুয়ার্ট, সহকারী অধ্যাপক জগেন্দ্রনাথ সরেন, সমাজকর্মী শেলী প্রিসিল্লা বিশ^াস ও মাহালী মুন্ডুমালা মাহালী গ্রামের মাঞ্জি হাড়াম যোহন মুরমুসহ মাহালে সমাজের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ ও সাধারণ জনগণ।
সিষ্টিবারে প্রাণঢালা শুভেচ্ছা ও জিতিয়া গড়াক্ -এর মাধ্যমে সকলকে শুভেচ্ছো জানিয়ে আলোচনা সভার সূচনা ঘোষণা করেন। আলোচনায় সভায় প্রধান অতিথি লক্ষীরাম মাহালী বলেন, “আজকে মাহালীদের বাঁচিয়ে রাখার এত উদ্যোগ যার হাত ধওে, সেই যাকারিয়াস ডুমরীকে তিনি শ্রদ্ধা সহকারে স্মরণ করেন বলেন, তাঁরা বাংলাদেশে এসেছেন কিন্তুতিনি তাদের সাথে নেই। সবাই মিলে তাঁর চিন্তাধারা বাঁচিয়ে রাখতে হবে। তিনি বলেন, ভারতে তাদের সংগঠন মাহালী আদিবাসী ওয়েলফেয়ার সোসাইটি কাজ করে যাচ্ছে। সামনে যৌথভাবে মাহালী জাতির জন্য একসাথে তারা কাজ করতে পারবেন বলে উল্লেখ করেন।
অতিথিদের বক্তব্য শেষে রাজশাহীর সকল মাহালী গ্রাম থেকে আগত সাংস্কৃতিক দলগুলো তাদের ঐতিহ্যবাহী নৃত্য পরিবেশন করে। সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা শেষে বিজয়ীদের মধ্যে পুরষ্কার বিতরণ করা হয়।