নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলা কাঁকনহাটে তিনদিনব্যাপি সাঁওতাল সম্প্রদায়ের সম্মেলন উদ্বোধন করা হয়। বৃহস্পতিবার এই সম্মেলন শুরু হলেও উদ্বোধন করা হয় শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে। প্রধান অতিথি ও তানোর উপজেলা পারগানা সরেশ টুডুসহ অন্যান্য অতিথিবৃন্দ মিলে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্যে দিয়ে তিনদিনের সম্মেলন উদ্বোধন করেন। এর পূর্বে প্রধান অতিথি গোদাগাড়ী উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম পৌরসভার পৌঁছালে তাঁকে সাঁওতাল সম্প্রদায়ের রীতি অনুযায়ী পা ধুয়ে দেয়া হয়। এরপর তিনিসহ অন্যান্য অতিথি মাঝিথান পরিদর্শন করেন।
বাংলাদেশ সাঁওতাল সম্মেলন আয়োজক কমিটির আয়োজনে কাঁকনহাট পৌর অডিটরিয়ামে শুরু হয় সম্মেলন। সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গোদাগাড়ী উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম। গোদাগাড়ী উপজেলা পারগানা রবিন হেম্ব্রমের সভাপতিত্বে সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তানোর উপজেলা চেয়ারম্যান লুৎফর রহমান ময়না, কাঁকনহাটের লালদিঘীপাড়ার মৗঞ্জহী বাবা গনেশ মার্ডি, ভারতে সিধো-কানহো-বিরসা বিশ^বিদ্যালয়ের সাঁওতালী ভাষা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক শ্রীপতি টুডু, কাঁকনহাট পৌর আওয়ামী লীগ সভাপতি হুমায়ন কবীর, কাঁকনহাট পৌর যুবলীগ সভাপতি কল্লোল হোসেন মোল্লা, দিনাজপুর ফুলবাড়ি উপজেলা পারগানা চুন্নু টুডু ও সাঁওতাল গবেষক রামদাস চাঁদ হাঁসদা।
বিশেষ অতিথি হিসেবে আরো উপস্থিত ছিলেন বৃহত্তর সিলেট বিভাগীয় সাঁওতাল ছাত্র ও যুবকল্যাণ পরিষদের সভাপতি দুলাল হাঁসদা, খাগড়াছড়ি পানছড়ির সাঁওতাল স্টুডেন্টস ফোরামের সভাপতি মানিক মুর্মু, গোদাগাড়ীর জয়কৃষ্ণপুর রাজশাহীর ভদ্দর লালন হেমরম ও সমাজসেবক নরেন মার্ডি। এছাড়াও সাঁওতাল সম্প্রদায়ের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ ও সাধারণ আদিবাসী জনগণ উপস্থিত ছিলেন। বক্তব্য শুরুর পূর্বে আয়োজক কমিটির পক্ষ থেকে মাঞ্জহী হারাম ও অতিথিদের ফুল ও পাগড়ী দিয়ে সম্মাননা প্রদান করা হয়।
সাঁওতাল সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দ বলেন, কোন জাতিকে টিকে থাকতে হলে এবং সামনের দিকে এগিয়ে নিতে শিক্ষার কোন বিকল্প নাই। তবে এই শিক্ষা প্রাথমিক পর্যায়ে অবশ্যই মাতৃভাষায় হতে হবে। সাঁওতাল সম্প্রদায়ের ভাষা ও বর্ণমালা টিকিয়ে রাখতে হলে অলচিকি বর্ণমালা চালুর জন্য সরকারের নিকট অনুরোধ করেন। সেইসাথে এই ধরনের সম্মেলন প্রতি বছর দেশের বিভিন্ন স্থানে করার জন্য আয়োজক কমিটির প্রতি অনুরোধ করেন তারা।
প্রধান অতিথি তাঁর বক্তব্যে বলেন, বর্তমান সরকার ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠি জনগণের উন্নয়নের জন্য সাংবিধানিক স্বীকৃতি প্রদান করেছেন। তারা এখন সকল প্রকার সরকারী সুবিধা পাচ্ছে। শুধু তাই সংখ্যাগরিষ্ঠ সম্প্রদায়ের জনগণের ন্যায় নয় দেশের অন্যান্য জাতীগোষ্ঠীর অধিকার নিশ্চিত করেছেন। তিনি আরো বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যেমন করে সকল সম্প্রদায়কে নিয়ে দেশ গড়ার জন্য কাজ শুরু করেছিলেন। তেমনি করে তাঁর সুযোগ্য কন্যা সফল প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনাও তাঁর বাবার ন্যায় কাজ করে যাচ্ছেন বলে উল্লেখ করেন তিনি।
তিনি আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী হাসিনার কারনেই দেশ এত এগিয়ে গেছে। ২০৪১ সালে বাংলাদেশ উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত হতে যাচ্ছে। এই ধারা অব্যাহত রাখতে আসছে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আবারও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতিকে ভোট দেয়ার আহ্বান জানান তিনি। সেইসাথে সাঁওতাল সম্প্রদায়ের এই ধরনের সম্মেলন করার জন্য সহযোগিতা প্রদান করার আশ^াস প্রদান করেন প্রধান অতিথি। উল্লেখ্য সম্মেলনে নানা বিষয়ের আলোচনার সাথে সাথে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। আজ শনিবার নানা আয়োজনের মধ্যে দিয়ে তিন দিনের সম্মেলন শেষ হবে বলে আয়োজক কমিটি জানান।