নিজস্ব প্রতিবেদক: ৭ নভেম্বর, ঐতিহাসিক জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস। বাংলাদেশের রাজনীতিতে এ দিনটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। ১৯৭৫ সালের এই দিনে সিপাহি-জনতার ঐতিহাসিক বিপ্লব ঘটেছিল, যা দেশের তৎকালীন রাজনীতির গতিধারা পাল্টে দিয়ে দেশ ও জাতিকে নতুন পরিচয়ে অভিষিক্ত করেছিল। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট পরবর্তী সেনা অভ্যুত্থান ও পাল্টা অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে দেশে যখন চরম নৈরাজ্যজনক পরিস্থিতি বিরাজ করছিল, তখন সিপাহি-জনতা মিলিত ঐক্যের এই বিপ্লব দেশ ও জাতিকে অনাকাংক্ষিত শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতি থেকে মুক্তি দিয়েছিল। অভূতপূর্ব সেই বিপ্লব-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে সাময়িক বন্দিদশা থেকে মুক্ত হন তৎকালীন সেনাপ্রধান মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান।
ঐতিহাসিক জাতীয় বিপ্লব ওসংহতি দিবস উপলক্ষে বর্ণাঢ্য র্যালি ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। মঙ্গলবার বেলা ১১টায় জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরাম রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয় শাখার আয়োজনে সিনেট ভবনের সামনে থেকে শিক্ষক নেতৃবৃন্দ ও অন্যান্য শিক্ষক এবং ছাত্রদলের নেতৃত্ব র্যালিতে অংশগ্রহন করেন। তাঁরা র্যালি নিয়ে রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয়ের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুণরায় সিনেট ভবনের সামনে এসে শেষ করেন। সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরাম রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয় শাখার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি প্রফেসর ড. তোফাজ্জল হোসেন। জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরাম রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক
প্রফেসর ড. মাসুদুল হাসান খান (মুক্তা) এর সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের উপদেষ্টা প্রফেসর ফজলুল হক, প্রফেসর আমজাদ হোসেন, প্রফেসর সাহেদ জামান, প্রফেসর মতিয়ার রহমান, কোষাধ্যক্ষ প্রফেসর নুরুল হক মোল্লা, নির্বাহী সদস্য প্রফেসর খন্দকার ইমামুল হক সানজিদ, প্রফেসর হাবিবুর রহমান, প্রফেসর মামুনুর রশিদ, প্রফেসর হাছানাত আলী ও প্রফেসর হাসনাত কবির।
বিশেষ অতিথি হিসেবে আরো উপস্থিত ছিলেন প্রফেসর আব্দুল আলীম, প্রফেসর আমিনুল হক, অধ্যাপক সাজ্জাদুর রহিম সাজিদ, প্রফেসর সাবিরুজ্জামান সুজা, প্রফেসর পারভেজ আজহারুল হক প্রিন্স, প্রফেসর আতিকুল ইসলাম, প্রফেসর মোজাফফর হোসেন, প্রফেসর মোস্তাফিজুর রহমান মন্ডল, প্রফেসর খালিদ আলম, প্রফেসর শেরেজ্জামান, প্রফেসর আক্তার হোসেন, প্রফেসর জেসমিন আরা, প্রফেসর নাজমা আফরোজ, প্রফেসর পাপিয়া সুলতানা, প্রফেসর কামরুজ্জামান, প্রফেসর শরীফুল ইসলাম, প্রফেসর শাহাদত হোসেন, প্রফেসর তারিকুল ইসলাম, প্রফেসর আরিফুল ইসলাম, প্রফেসর হারুন অর রশীদ ও প্রফেসর কুদরতই জাহান।
এছাড়াও প্রফেসর আনিসুর রহমান, প্রফেসর মইজুর রহমান, প্রফেসর মতিউর রহমান, প্রফেসর আনোয়ারুল কবির ভুঁইয়া, প্রফেসর মাহবুবুর রহমান, প্রফেসর দেলোয়ার হোসেন, প্রফেসর খালেকুজ্জামান, প্রফেসর নেছার উদ্দিন, প্রফেসর আরিফুল হক উপল, প্রফেসর আলামিন সরকার, প্রফেসর সারোয়ার জাহান, প্রফেসর আবু সায়ীদ জুয়েল, প্রফেসর শামছুজ্জোহা এছামি, প্রফেসর মতিউর রহমান সরলসহ অফিসার সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি নজরুল ইসলাম শেলী, আসলাম রেজা, রিয়াজ উদ্দিন, মাজিবর রহমান, বোরহান উদ্দিন, তারেক হোসেন, সাধারণ কর্মচারী পরিষদের হানিফ শেখ, শহিদুল বাবু, ফরিদ আলী, সহায়ক কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি সইজুদ্দিন ও সেক্রেটারি পিয়ারুল ইসলাম মানিক, চান্দ মিয়া, আমজাদ হোসেন, ওহাব, মামুন ও আনোয়ারসহ প্রায় দেড় শতাধিক শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
উপস্থিত নেতৃবৃন্দরা বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ড এবং ৩ নভেম্বর ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে জাতীয় চার নেতাকে হত্যার ঘটনার ধারাবাহিকতায় ঐ দিনই সেনাবাহিনীর উপপ্রধান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল খালেদ মোশাররফ তার অনুসারী সেনাসদস্যদের নিয়ে এক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সেনাপ্রধান মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমানকে ঢাকা ক্যান্টনমেন্টে বন্দী করেন। স্বঘোষিত পদোন্নতি নিয়ে খালেদ মোশাররফ মেজর জেনারেলের ব্যাজ ধারণ এবং সেনাপ্রধানের পদ দখল করেন। ৬ নভেম্বর খালেদ মোশাররফ বঙ্গভবনে গিয়ে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট খন্দকার মোশতাক আহমদকে গ্রেফতার করে মন্ত্রিসভা বাতিল ও জাতীয় সংসদ ভেঙে দেয়ার ঘোষণা দেন। একই দিনে তিনি প্রধান বিচারপতি আবু সা’দাত মোহাম্মদ সায়েমকে দেশের প্রেসিডেন্টের পদে বসান।
একপর্যায়ে ৬ নভেম্বর গভীর রাতে সেনাবাহিনীর সাধারণ সিপাহিরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। সেই অভ্যুত্থানে স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থন দিয়ে সর্বস্তরের জনতা রাজপথে নেমে আসে। সিপাহি-জনতার মিলিত সেই বিপ্লবে বন্দী অবস্থা থেকে মুক্ত হন জিয়াউর রহমান। পাল্টা অভ্যুত্থান ঠেকাতে গিয়ে প্রাণ হারান খালেদ মোশাররফ ও তার কিছু অনুসারী। পরদিন ৭ নভেম্বর সর্বস্তরের সৈনিক ও জনতা সম্মিলিতভাবে নেমে আসে ঢাকার রাস্তায়, ছড়িয়ে পড়ে সারা দেশে। অভূতপূর্ব এক সংহতির নজির সৃষ্টি হয় দেশের রাজনীতিতে। তার পর থেকেই ৭ নভেম্বর পালিত হচ্ছে ‘জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস’ হিসেবে। বিএনপি সরকারের আমলে এ দিনটিতে ছিল সরকারি ছুটি। কিন্তু বর্তমান সরকার সেই ছুটি বাতিল করে দিয়েছে বলে উল্লেখ করেন তারা।
তাঁরা আরো বলেন, এই দিনটি সোনার বাংলা গড়ার কারিগর শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মুক্তি দিনটিকে বিএনপি শুরু থেকে নানা আয়োজনে দিনব্যাপি পালন করে আসছিলো। কিন্তু এই স্বৈরাচার সরকার নিজেদের গদি ঠিক রাখতে এবং আবার ভোটার বিহিন নির্বাচন করার লক্ষে দেশব্যাপি শুরু করেছে বিরোধীদল নিধন কার্যক্রম। চলছে অবৈধভাবে আটক এবং ষড়যন্ত্রমূলক মামলা। কিন্তু এভাবে আর চলতে দেয়া হবেনা। প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের দেশপ্রেমকে মনে ধারণ ও লালন করে দেশের মানুষের মুক্তি ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে সক্রিয় আন্দোলনে সবাইকে রাজপথে নামার আহ্বান জানান তারা।