নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহীর পুঠিয়ার দাশমাড়িয়া গ্রামে জমি দখলকে কেন্দ্র করে মারটিপ করে একই পরিবারের তের থেকে চৌদ্দ জনকে গুরুতর আহত এবং বাড়িতে আগুন ও জমির ফসল নষ্ট করেছে ভূমিদস্যুরা। গত ১২ নভেম্বর ২০২৩ইং তারিখে সকাল ৯টায় অতর্কিতভাবে হামলা চালিয়ে তাদের আহত করেছে। এ নিয়ে বৃহস্পতিবার দুপুর ২.৩০টায় দিকে নগরীর পঞ্চবটি এলাকায় ভূক্তভোগি পরিবারের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য রাখেন অত্র গ্রামের জমির এক মালিক মারপিটে আহত মকবুল হোসেনের ছেলে গোলাম মোস্তফা (২৮)।
তিনি বলেন, তার দাদী ছামেদা বেওয়া মৃত কেয়ামত সেখ এর নিকট হতে জেলা-রাজশাহ, উপজেলা-পুঠিয়া, মৌজা-দাশমাড়িয়া, খতিয়ান নং-১০৩, দাগ নং-৭৫৩, জমির পরিমান- ০.১৪ একর (১৪ শতক) ১৯৭৫ সালের ১৩ মার্চ ক্রয় করেন। এরপর থেকে ঐ জমি তিনি ভোগ দখল করতে থাকেন। তার দাদী মারা গেলে ঐ সম্পত্তির ওয়ারিশ হন তিনিসহ তার অন্যান্য ওয়ারিশগণ। ওয়ারিশ সুত্রে তারা জমি ভোগদখল ও চাষাবাদ করে খেয়ে আসছেন। হঠাৎ করে এই মারপিটের মূলহোতা একই গ্রামের বাবুর ছেলে সোহেল তাদের জমি দখল করার জন্য বিগত দুই বছর ধরে নানা ভাবে হয়রানী ও হুমকী ধামকী দিয়ে আসছিলো। এ বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে বিগত দিনে পুঠিয়া থানায় একটি মামলাও করেন তিনি। থানার নিস্কৃয়তায় ভূমিদস্যুরা আরো বেপরোয়া হয়ে ওঠে।
মোস্তফা আরো উল্লেখ করেন তাদের জমির মিমাংশা করার জন্য এসিলান্ড ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান অতিতে বার বার সোহেল গংদের তাদের কাগজপত্র নিয়ে দেখা করার কথা বললে তারা দেখা করেননি। অথচ হঠাৎ করে গত রোববার সকাল ৯টার দিকে কোন কিছু বুঝে ওঠার আগেই সোহেল তার সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে তাদের উপরে দেশীয় ধারালো অস্ত্র ও লাঠিসোটা ও হাতুরি নিয়ে অতর্কিত হামলা চালায় এবং মারপিট করে। এসময়ে আব্দুস সাত্তার, বাক্কার ও তিনি নিজে বাড়িতে ছিলেন। আর সবাই মাঠে কাজ করতে গিয়েছিলেন। মারপিট ও চিৎকারের শব্দ এবং বাড়িতে আগুন দেয়া দেখে তার অন্যান্য ভাই ও ভাতিজারা এগিয়ে আসলে সন্ত্রাসীরা তাদের উপরেও হামলা করে। গুরুতর আহত অবস্থায় গ্রামের লোকজন তাদের উদ্ধার করে প্রথমে পুঠিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। অবস্থার অবনতি হলে তাদেরকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয় বলে জানান মোস্তফা।
অন্যান্য আহতরা হলেন, তার ভাই বাক্কার(৪০), আকতার হোসেন(৪৫), মুক্তার(৩২) মুক্তারের স্ত্রী মুর্শিদা খাতুন(৩০) তারা চিকিৎসা শেষে সন্ত্রাসীদের ভয়ে রাজশাহীতে লুকিয়ে আছেন। তারা নিজ বাড়িতে যেতে সাহস পাচ্ছেন না। প্রতিনিয়ত তাদের হত্যার হুমকী দিচ্ছে বলে জানান তিতিনসহ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত সকলেই। তিনি আরো বলেন, তার আরেক ভাই আব্দুস সাত্তার (৪২) ও তার স্ত্রী নেহারা বেগম (৩৫), রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালে এখনো চিকিৎসাধীন আছেন। তাদের অবস্থা ভাল নয় বলে জানান মোস্তাফা। এছাড়া মারপিটে আহত হয়েছেন আব্দুস সাত্তারের ছেলে কলেজ পড়ুয়া ছাত্র শাহীন(১৭) কুদরত এর ছেলে আলামিন(১৭)। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে বাড়িতে আছেন দুলাল এর ছেলে সুমন(১৭) শিশু নাইম, নাসিমাও শিখা আকতার।
এ নিয়ে পুঠিয়া থানায় মামলা করতে গেলে থানা কর্তৃপক্ষ তাদের মামলা নেননি। এতে করে সোহেল গংরা আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। প্রতিনিয়ত মোবাইলে তাদের প্রাণ নাশের হুমকী দিচ্ছে। সেইসাথে তাদের জমিতে থাকা ফসলাদি প্রতিদিন কেটে ফেলছে বলে জানান তিনি। প্রতিপক্ষের নির্মম আঘাতে আহত হওয়ার বিচার এবং জানমাল রক্ষার্থে তিনি বাদি হয়ে বুধবার জেলা রাজশাহী বিজ্ঞ পুঠিয়া থানা জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে মোট একুশ জনকে এবং অজ্ঞাত আরো ৫০/৬০জনকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেছেন বলে সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করেন মোস্তাফা। আসামীদের দ্রুত আটক করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানানো হয় সংবাদ সম্মেলন থেকে। সেইসাথে তাদের ফসলাদি নষ্ট এবং বাড়ি ঘরে আগুন ও ভাঙ্গচুরের ক্ষতিপূরণ দাবী করেন।