মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারী ২০২৫, ০৭:২২ পূর্বাহ্ন

আপন ঠিকানায় ফিরে গেল বিশাল

  • প্রকাশ সময় মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল, ২০২৪
  • ৭৬ বার দেখা হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক: আন্তর্জাতিক বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা কারিতাস বাংলাদেশ রাজশাহী অঞ্চলের আলোকিত শিশু প্রকল্পের মাধ্যমে প্রতিনিয়ন শিশু সুরক্ষা ও শিশুদের সঠিকভাবে মানুষ হয়ে গড়ে তুলতে কাজ করে যাচ্ছে। শুধু তাইনয় একের পর এক হারানো শিশুদের তার পরিবারের নিকট ফিরিয়ে দিয়ে সেই সকল পরিবারের মুখে হাসি ফুটিয়ে যাচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার বিশাল(১২) নামে এক শিশুকে তার পরিবারের নিকট তুলে দেন। আলোকিত শিশু প্রকল্পের ডিআইসি সূত্রে জানা যায় বিশাল নীলফামারী জেলার, কিশোরগঞ্জ থানার নিতাই সেলিমের মোড় এলাকার পিতা মংলু ইসলাম ও মাতা- মনি বেগমের ছেলে বিশাল।

ডিআইসি থেকে আরো জানা যায় শিশুটির বাবা ছিলেন মাদকাশক্ত। মাদকাসক্ত অবস্থায় তিনি পরিবারের সদস্যদের অনেক মারধর করতেন। শুধু তাইনয় তার পিতা দ্বিতীয় বিয়েও করেন এবং এরপর থেকে বিশালের মা এর উপর অনেক নির্যাতন শুরু করে তার পিতা। নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে তার মা কোর্টে মামলা করলে দুই বছর মামলা চলার পরে তাদের বিচ্ছেদ হয়ে যায়। এ অবস্থ্য়া তার মা অন্যের বাসাবাড়ীতে কাজ শুরু করেন। ক্ষুধার জ¦ালা সহ্য করতে না পেয়ে বিশাল অন্য পথশিশুদের সাথে ট্রেনে করে ঢাকায় চলে যায় এবং রেল স্টেশনে কুলিগিরি ও ভিক্ষা করে সে ৭ মাস অতিকষ্টে জীবনধারন করে।

এরপর কমলাপুর স্টেশন থেকে ট্রেনে করে বিশাল রাজশাহীর শিরোইল স্টেশনে চলে আসে। এখানে আসারপর সে ঠিকমত খাওয়া এবং থাকার জায়গাও পায়নি। রাত্রে স্টেশনে ঘুমালে পুলিশে রাতে স্টেশনে তাকে ঘুমাতে দেয়নি। পেটের ক্ষুধা মেটানোর জন্য বিশাল ভাংড়ি কুড়ানোর কাজ শুরু করেন। ভাংড়ি কুড়ানোর এক পর্যায়ে ভদ্রা বস্তির রনি নামের আরেক ভাংড়ি কুড়ানো লোকের সাথে তার পরিচয় হয় এবং তাদের মধ্যে শ্যালক দুলা ভাই সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সেই থেকে বিশাল তার সাথে থাকতে শুরু করে।

কারিতাস বাংলাদেশ রাজশাহী অঞ্চলের আলোকিত শিশু প্রকল্পের জুনিয়র কর্মসূচি কর্মকর্তা ফরিদুর ইসলাম বলেন, তারা পথ শিশু ও বস্তির শিশুদের নিয়ে তারা কাজ করেন। এই সূত্র ধরে তিনি ও তার অন্যান্য সহকর্মীরা বিশালের সাথে আলোকিত শিশু প্রকল্পের ডিআইসির সেবা সমুহ আলোচনা করে এবং ডিআইসিতে যাওয়ার জন্য বলে। তাদের পরার্মশ অনুযায়ী বিশাল ডিআইসিতে আসতে শুরু করে। আলোকিত শিশু প্রকল্পের কর্মীরা বিশাল এর সাথে ব্যক্তিগত যোগাযোগ করে জানতে পারেন বিশাল তার পরিবারে ফিরে যেতে চায়। তার মা ছাড়া আর কেউ নাই।

এ কথা শোনার পরে অনেক চেষ্টা করে ১৩ এপ্রিল তার মায়ের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হয় এবং তাকে রাজশাহীতে এসে তার ছেলেকে নিয়ে যেতে বলা হয়। সেই সূত্র ধরে তার মা মঙ্গলবার রাজশাহী আসেন এবং অত্র প্রকল্পের স্টাফ এবং বস্তির লোকের উপস্তিতিতে তিনি তার ছেলেকে গ্রহন করেন।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো নিউজ দেখুন
© All rights reserved © 2021 dailysuprovatrajshahi.com
Developed by: MUN IT-01737779710
Tuhin