রবিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:২০ পূর্বাহ্ন

সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা আপাতত বহাল

  • প্রকাশ সময় বৃহস্পতিবার, ৪ জুলাই, ২০২৪
  • ৪১ বার দেখা হয়েছে

এস.আর ডেস্ক: সরকারি দপ্তর, স্বায়ত্তশাসিত বা আধা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান ও বিভিন্ন কর্পোরেশনের চাকরিতে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে (৯ম থেকে ১৩তম গ্রেড) মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের পরিপত্র অবৈধ ঘোষণার রায় স্থগিত হয়নি। বৃহস্পতিবার মামলাটি শুনানির জন্য উপস্থাপিত হলে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন ৬ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ কোনো সিদ্ধান্ত দেননি।

এর আগে রিটকারীদের আইনজীবী মনসুরুল হক চৌধুরী উপস্থিত নেই জানিয়ে শুনানি না করার আরজি জানান আইনজীবী জহিরুল ইসলাম। তিনি আদালতকে বলেন, ‘সিনিয়র আইনজীবী উপস্থিত নেই। তাই নট টুডে রাখার আরজি জানাচ্ছি।’

তবে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন উঠে দাঁড়ালে আপিল বিভাগ তাঁকে লিভ টু আপিল করতে বলেন। আদালত তাকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘রাস্তায় এত আন্দোলন কীসের? আন্দোলনের কারণে হাইকোর্টের রায় পরিবর্তন করতে হবে?’ পরে আদালত ‘নট টুডে’ আদেশ দেন। এর ফলে ৯ম থেকে ১৩ তম গ্রেডে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা আপাতত বহাল থাকল বলে জানান আইনজীবীরা।

এই পাঁচটি গ্রেডে নিয়োগের ক্ষেত্রে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিল চেয়ে করা রিট আবেদনের প্রেক্ষিতে ২০২১ সালে জারি করা রুল যথাযথ ঘোষণা করে বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি খিজির হায়াতের বেঞ্চ গত ৫ জুন এ পরিপত্রকে অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন।

পরে হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে চেম্বার আদালতে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। গত ৯ জুন চেম্বার বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম রাষ্ট্রপক্ষের আবেদন শুনানির জন্য ৪ জুলাই ২০২৪ ইংতারিখ দিন ঠিক করে দেন।

এদিকে কোটা বহাল রেখে হাইকোর্টের রায়ের পর থেকে সারা দেশে আন্দোলন করছেন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে একটি প্রতিনিধি দল বৃহস্পতিবার পদক্ষেপ নিতে অ্যাটর্নি জেনারেলকে স্মারকলিপিও দিয়েছিলেন।

স্মারকলিপিতে বলা হয়, ‘২০১৮ সালে সারা বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের গণ-আন্দোলনের প্রেক্ষিতে সরকারি চাকরি (নবম থেকে ত্রয়োদশ গ্রেড) থেকে কোটা পদ্ধতি বিলুপ্ত করা হয়। কোটা সংস্কার ছিল শিক্ষার্থী ও চাকরি প্রত্যাশিতদের প্রাণের দাবি। বৈষম্যমুক্ত ও মেধাভিত্তিক বাংলাদেশ নির্মাণে চাকরিতে কোটা পদ্ধতির পুনর্বিবেচনা করে কোটার যৌক্তিক সংস্কার চেয়েছিলেন শিক্ষার্থীরা। সরকার সার্বিক বিবেচনায় নবম থেকে ত্রয়োদশ গ্রেডে কোটার বিলুপ্তিকে সমাধান মনে করেছিল।’

এতে আরও বলা হয়, ‘আমরা মনে করি, হাইকোর্টের রায়ে বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের আশা, আকাঙ্ক্ষা প্রতিফলন ঘটেনি। পুনরায় কোটা ফিরে আসা মানে দেশের লাখ লাখ তরুণ-তরুণীর দাবি ও আন্দোলনের সঙ্গে রাষ্ট্রযন্ত্রের প্রহসন। মুক্তিযুদ্ধের যে মূলমন্ত্র-সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচার-তা নিশ্চিত করতে এবং একটা দক্ষ প্রশাসন গড়তে মেধাভিত্তিক নিয়োগের কোনো বিকল্প নেই।’

২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর জারি করা পরিপত্রে বলা হয় নবম গ্রেড (পূর্বতন প্রথম শ্রেণি) এবং ১০ম থেকে ১৩ তম গ্রেডের (পূর্বতন দ্বিতীয় শ্রেণি) পদে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়া হবে এবং নবম গ্রেড (পূর্বতন প্রথম শ্রেণি) এবং ১০ম থেকে ১৩ তম গ্রেডের (পূর্বতন দ্বিতীয় শ্রেণি) পদে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে বিদ্যমান কোটাপদ্ধতি বাতিল করা হলো।

পরে ওই পরিপত্র চ্যালেঞ্জ করে রিট করেন অহিদুল ইসলামসহ সাত শিক্ষার্থী। ওই রিটের পরিপ্রেক্ষিতে ২০২১ সালের ৭ ডিসেম্বর রুল জারি করেন হাইকোর্ট। সরকারি চাকরির প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিল করে জারি করা পরিপত্র কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয় রুলে। শুনানি শেষে রুল যথাযথ ঘোষণা করে রায় দেওয়া হয়।

 

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো নিউজ দেখুন
© All rights reserved © 2021 dailysuprovatrajshahi.com
Developed by: MUN IT-01737779710
Tuhin