বুধবার, ২১ মে ২০২৫, ১২:১৩ পূর্বাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ
রাজশাহীতে বিশ্ব মেট্রোলজি দিবস পালন পবায় বিশ্ব মৌ-পতঙ্গ সুরক্ষার দাবিতে কৃষকবন্ধন রাজশাহী জেলা বিএনপি’র সদস্য মুন্টুকে কমিটি গঠনের সদস্য পদ থেকে অপসারনের দাবী গোদাগাড়ীর কাঁকনহাট হাট-বাজার টাকা পরিশোধ ছাড়াই ইজারা দেয়ার অভিযোগ রাজশাহী মহানগীর ১৯নং ওয়ার্ড(উত্তর-দক্ষিণ) যুবদলের কর্মী সভা মোহনপুরে বিএনপি নেতা ইউনুচ আলীর মায়ের ইন্তেকাল রাজশাহীর দুইটি ফেরীঘাটে ইজারা ছাড়াই চলছে পারাপার রাজশাহীর পবায় গভীর নলকূপ জোরপূর্বক দখলে রাখার অভিযোগ আওয়ামীলীগের দোসর মুকুলের বালিঘাট ইজারার বাতিলে ৪৮ঘন্টা আল্টিমেটাম প্রধান বিচারপতির ১২ দফা নির্দেশনা বাস্তবায়নে প্রয়োজন সৎ, দক্ষ, কর্তব্যপরায়ণ ও দেশপ্রেমিক বিচারক

নারীদের ক্ষমতায়ন ও উন্নয়নে কাজ করছে মহিলা সহায়তা কর্মসূচী

  • প্রকাশ সময় রবিবার, ২৮ জুলাই, ২০২৪
  • ৬৪ বার দেখা হয়েছে
OLYMPUS DIGITAL CAMERA

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশের জনসংখ্যার অর্ধেক হচ্ছে নারী। কিন্তু বেশীর ভাগ নিরক্ষরতা, কুসংস্কার, অভাব, বেকারত্ব, জেন্ডার বৈষম্যের কারনে সমাজের অর্ধেক নারী নির্যাতিত, নিপিড়িত ও অবহেলিত। যুগে যুগে নারীর প্রতি সহিংতার প্রভাব বেশী পরিলক্ষিত হয় পরিবারে। এই নির্যাতন শুধু স্বামী-স্ত্রীর মধ্যেই নয়, সন্তানদের মধ্যেও বিস্তার লাভ করে। অনেক ক্ষেত্রেই নারী সমাজ এখনো সচতেন নয়। এ কারনে ধর্ম, সমাজ ও রাষ্ট্র কর্তৃক স্বীকৃতি অধিকার গুলো সনম্পর্কে তারা ওয়াকিভাল নয়। এজন্য তারা তাদের প্রাপ্য অধিকার গুলো আদায়ে ব্যার্থ হন।

এ ক্ষেত্রে যদি নারীদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন করা হয় এবং তাদের বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ দিতে পারলে নারীরা জীবন জীবিকার সাথে সম্পৃক্ত হতে পারবে। এতে করে নারী স্বাবলম্বী হবে। আর স্বাবলম্বী হলে পরিবার ও সমাজ থেকে অনেক ক্ষেত্রে নারী নির্যাতন বন্ধ হবে। তবে বর্তমান সময়ে মেয়েরা বেশী শিক্ষিত হচ্ছে। সেইসাথে তারা বিভিন্ন সরকারী-বেসরকারী চাকুরীতে অন্তর্ভূক্ত হচ্ছে। শুধু তাইনয় নিজেরা উদ্যোক্তা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করছেন। এ সত্ত্বেও গ্রামীন অনেক নারী এখনো বিভিন্ন কুসংস্কারের মধ্যেই পড়ে আছেন। তাদেরকেও সচেতন করতে হবে।

এই সকল অবহেলিত নারীদের উন্নয়নে এবং ন্যায্য অধিকার আদায়ে পাশে থেকে সহযোগিতা করে আসছে মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের মহিলা সহায়তা কর্মসূচী। এই কর্মসূচী ১৯৯৫ সালে দেশের ছয়টি বিভাগে প্রথমে শুরু হয়। যার ধারাবাহিকতায় ১৯৯৬ সালের পহেলা জুলাই রাজশাহী বিভাগীয় কার্যালয়ে এর যাত্রা শুরু হয়। সেই থেকে অদ্যবধি এই সহায়তা করে এই দপ্তর।
রাজশাহী বিভাগীয় মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের অন্তর্গত মহিলা সহায়তা কর্মসূচী উপপরিচালকের কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মাহবুবা সুলতানা বলেন, এই কর্মসূচীর কার্যক্রমগুলো হলো, অসহায় নির্যাতিতা নারীদের বিনা খরচে আইনী পরামর্শ প্রদান, নির্যাতিতা ও অসহায় নারীদের অভিযোগ গ্রহন এবং নিস্পত্তিকরণ, বিনামূল্যে আইনী সহায়তা প্রদান, উভয় পক্ষের মধ্যে সালিশ/কাউন্সিলিং এর মাধ্যমে পারিবারিক কলহ মীমাংশা করা, পারিবারিক নির্যাতনের শিকার নারীদের ভরন-পোষন আদায়, নির্যাতিতা ও তালাকপ্রাপ্তা নারীদের দেনমোহর ও ইদ্দতকালীন ভরণ-পোষণ আদায়, নাবালক সন্তানদের খোরপোষ আদায় ও যৌতুক প্রথাকে নিরুৎসাহিত করা।

তিনি আরো বলেন, কার্যক্রমের মধ্যে আরো রয়েছে বাল্য বিবাহ নিরোধে কাজ করা, বিনা খরচে আইনজীবীর মাধ্যমে আদালতে মামলা পরিচালনায় সহায়তা করা, মামলার ফলো-আপ, পত্রিকায় প্রকাশিত নারী নির্যাতন সংক্রান্ত ঘটনায় তথ্য সংরক্ষণ এবং ফলো-আপ, নির্যাতিত ও আশ্রয়হীন নারীদের বিনা খরচে ছয়মাস দুটি সন্তানসহ (১২ বছরের নিচে) সহায়তা কেন্দ্রে আশ্রয় প্রদান, সহায়তা কেন্দ্রে আশ্রিত নারী ও শিশুদের বিনামূল্যে খাদ্য, বস্ত্র, চিকিৎসা প্রাথমিক শিক্ষা প্রদান ও সহায়তা কেন্দ্রে অবস্থানকালীন সময়ে নিা খরচে সেলাই প্রশিক্ষণ প্রদান। এই সকল কার্যক্রম বাস্তবায়ন এবং বিভিন্নভাবে প্রচারনার ফলে পূর্বের তুলনায় এই কর্মসূচীর মাধ্যমে নির্যাতিত নারীরা সহযোগিতা বেশী পচ্ছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

সহকারী পরিচালক আরো বলেন, মহিলা সহায়তা কর্মসূচীর মাধ্যমে জুলাই ২০১৮-জুন ২০১৯ অর্থ বছরে অভিযোগ গৃহীত হয় ৬৩টি। এর মধ্যে নিস্পত্তি হয় ৫২টি। আর আইনগত পরামর্শ পেয়েছেন ৩৫জন। সেইসাথে দেনমোহরানা ও খোরপোষ বাবদ আদায় ও প্রদান করা হয় তিন লক্ষ বত্রিশ হাজার একশত টাকা এবং নিরপদ আশ্রয়ে পাঠানো হয় ২৭জনকে। জুলাই ২০১৯-জুন ২০২০ অর্থ বছরে অভিযোগ আসে মোট ৬৬টি। এর মধ্যে নিস্পত্তি হয় ৪১টি। আইনী সহায়তা পান ৪২জন। আর দেনমোহরানা ও খোরপোষ বাবদ আদায় হয় দুই লক্ষ ছাপ্পান্ন হাজার তিনশত টাকা এবং নিরাপদ আশ্রয়ে পাঠানো হয় ১৫জনকে।

মাহবুবা সুলতানা বলেন, জুলাই ২০২০-জুন২০২১ অর্থ বছরে অভিযোগ গৃহীত হয় ৯০টি। নিস্পত্তি হয় ৯২টি। আইনগত পরামর্শ প্রদান করা হয় ৪৬জনকে। সেইসাথে দেনমোহরানা ও খোরপোষ বাবদ আদায় করে প্রদান করা হয় সাত লক্ষ বিশ হাজার টাকা এবং নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্রে পাঠানো হয় ৩০জনকে। জুলাই ২০২১-জুন২০২২ অর্থ বছরে মোট অভিযোগ গ্রহন করা ৮৩টি। নিস্পত্তি করা হয় ৮৬টি। আইনগত পরামর্শ প্রদান করা হয় ১১৫জনকে। দেনমোহরানা ও খোরপোষ বাবদ আদায় তের লক্ষ, তিন হাজার, একশত টাকা। নিরাপদ আশ্রয়ে পাঠানো হয় ৪৮জনকে। জুলাই ২০২২-জুন ২০২৩অর্থ বছরে অভিযোগ গ্রহন করা হয় ১৮৭টি। নিস্পত্তি করা হয় ১৩৭টি, আইনগত সহায়তা প্রদান করা হয় ২৮৬জনকে। দেনমোহরানা ও খোরপোষ বাবাদ আদায় করে প্রদান করা হয় ঊনত্রিশ লক্ষ, একানব্বই হাজার, পাঁচশত টাকা এবং নিরাপদ আশ্রয়ে পাঠানো হয় ৪৮জনকে। এছাড়াও জুলাই ২০২৩-জুন ২০২৪ অর্থ বছরে সর্বোচ্চ অভিযোগ গ্রহন করা হয় ২৬৭টি, নিস্পত্তি করা হয় ১১৩টি। আইনগত পরামর্শ প্রদান করা হয় ২৫২জনকে। আর দেনমোহরানা ও খোরপোষ বাবদ আদায় করে প্রদান করা হয় বাষট্টি লক্ষ, তিরাশি হাজার, আটশত টাকা এবং নিরাপদ আশ্রয়ে প্রদান করা হয় ৮২জনকে।

পর্যায়ক্রমে অভিযোগ এবং অর্থের অংকের বৃদ্ধির কারন সম্পকের্ জানতে চাইলে মাহবুবা সুলতানা বলেন, এই প্রতিষ্ঠানে অত্র কর্মসূচীর মাধ্যমে নির্যাতিতদের বিনামূল্যে সহায়তা সঠিকভাবে প্রদান করা হয়, তা নির্যাতিতরা জানতে পেরেছে। এজন্য অন্য ঝামেলায় না যেয়ে নির্যাতিতারা এখানে আসছেন সঠিক বিচার পাওয়ায় আশায়। অত্র প্রতিষ্ঠানের সকল কর্মকর্তা সম্পূর্ণ সততা ও নিষ্ঠার সাথে নির্যাতিতাদের পাশে দাঁড়িয়ে কাজ করায় প্রতি বছর অভিযোগ ও নিস্পত্তি এবং দোনমোহরানা ও খোরপোষের অর্থের পরিমান বৃদ্ধি পাচ্ছে। তিনি নির্যাতিতা এবং তাদের পরিবারকে সঠিক বিচারের জন্য অত্র কার্যালয়ে আসার জন্য আহ্বান জানান তিনি। সেইসাথে এই ধরনের সহযোগিতা সম্পর্কে সবাইকে প্রচার করার পরামর্শ দেন এই সহকারী পরিচালক।

 

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো নিউজ দেখুন
© All rights reserved © 2021 dailysuprovatrajshahi.com
Developed by: MUN IT-01737779710
Tuhin