নিজস্ব প্রতিবেদক: বুকের তাজা রক্ত দিয়ে আমাদের সন্তানরা বলে গেল, তাদের কোটা সংস্কারের দাবী যৌক্তিক ছিলো। তারা মরে নাই, তারা শহীদ, তারা ইতিহাসের পাতায় উজ্জীবিত থাকবে। মঙ্গলবার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মানববন্ধন ও র্যালীতে এমন আবেগঘন বক্তব্যে ভারি হয়ে ওঠে পুরো রাবি ক্যাম্পাস। শিক্ষকদের সাথে ছাত্ররা কর্মসূচীতে অংশগ্রহণ করতে চাইলে শিক্ষকরা জানান, এটি তোমাদের কর্মসূচী। সারাদেশে শিক্ষার্থীদের হত্যার বিচারসহ ছাত্রদের চলমান আন্দোলনের ৯ দফা দাবীর সাথে একাত্মতা ঘোষণা করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা।
এদিন বেলা সাড়ে ১১ টায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মুল ফটকের সামনে মানববন্ধনে দাঁড়িয়ে শিক্ষার্থীদের ৯দফা দাবির সাথে একাত্মতা ঘোষণা করেন রাবি শিক্ষকরা। প্রতিবাদ কর্মসূচীর শুরুতে প্রসাশনিক ভবনের সামনে থেকে র্যালী বের করেন নিপিড়ন বিরোধী শিক্ষক সমাজ। র্যালী নিয়ে ক্যাম্পাসের কয়েকটি একাডেমিক ভবন প্রদক্ষিণ শেষে রাবির মুল ফটকে মানববন্ধন করা হয়। মানববন্ধন থেকে অনতিলম্বে ছাত্র হত্যাকান্ডের সাথে যারা জড়িত তাদের সকলকে আইনের আওতায় আনার দাবী জানানো হয়।
এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের প্রফেসর ড. ইফতেখায়ের আলম মাসুদের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন, রাবির ভেটেনারি এন্ড এ্যানিমেল সায়েন্স বিভাগের প্রফেসর ড. ইসমতআরা বেগম, অর্থনীতি বিভাগের প্রফেসর ড. ফরিদ খান, পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের প্রফেসর ড. সালেহ উদ্দিন নকিব। আরো বক্তব্য রাখেন আইবিএ বিভাগের প্রফেসর ড. হাসানাত আলী, ফোকলোর বিভাগের সভাপতি প্রফেসর ড. জাহাঙ্গীর হোসেনসহ আরো অনেক শিক্ষক। দেশের কোথাও যেন শিক্ষার্থীদের উপর আর গুলি না চলে, দেশব্যাপী শিক্ষার্থীদের হত্যা, ক্র্যাকডাউনের নামে গণহারে গ্রেফতার ও ছাত্রদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবী জানানো হয়। ডিবি অফিসে আটক রাখা শিক্ষার্থীদের খাবারের ছবি ভাইরাল হওয়ায় সেই অফিসকে ভাতের হোটেলের সাথে তুলনা করেন শিক্ষকরা।
শিক্ষকরা বলেন, সারাদেশে ইন্টারনেট বন্ধ করে সরকার অন্ধকারের দিকে জাতিকে ঠেলে দিয়েছে। সকল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বন্ধ করেছে। যা রীতিমতো মানবাধিকার লঙ্ঘন। তবে সাধারণ মানুষ ফেসবুক ব্যবহার করতে না পারলেও এমপি-মন্ত্রীরা কিন্তু ঠিকই মাসাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করছেন বলে দুঃখ প্রকাশ করেন। এসময় ছাত্রদের ৯ দফা দাবীর সাথে একাত্মতা ঘোষণা করে আজ বুধবার আবারও উন্মুক্ত আলোচনার ডাক দিয়েছে নীপিড়ন বিরোধী শিক্ষক সমাজ।