নিজস্ব প্রতিরেবদক: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী আয়োজিত মিছিল থেকে শিক্ষার্থীদের কয়েকজনকে আটকের চেষ্টার সময় ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটে। তবে শিক্ষকদের বাধার মুখে শেষ পর্যন্ত আন্দোলনরত ঐ শিক্ষার্থীদের আটক করতে পারেনি পুলিশ। শিক্ষক শিক্ষার্থীরা তাদের ছাড়িয়ে নিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ বুদ্ধিজীবী চত্বরে কয়েকজন শিক্ষার্থীকে চ্যাংদোলা করে তুলে নিয়ে যাওয়ার সময় এ ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটে। তবে ঘটনার পর পুলিশ জানিয়েছে- তাদের ওপর চড়াও হওয়ার চেষ্টা করলে তাদের নিবৃত্ত করা হয়েছে মাত্র। সেখান থেকে পুলিশ কাউকে আটক করেনি।
এদিকে বৃহস্পতিবার সকালে ছাত্র হত্যার প্রতিবাদে মুখে লাল কাপড় মুখে বেঁধে মৌন মিছিল করছিলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষক নেটওয়ার্ক। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয় ও স্কুল কলেজের কিছু শিক্ষার্থী মৌন মিছিলে অংশ নেন। ঐ মৌন মিছিলে অংশ নেওয়ায় মিছিল শেষে শিক্ষার্থীদেরকে জোর করে তুলে নেওয়ার চেষ্টা চালান সাদা পোশাকে কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ে মৌন মিছিলে অংশ নেওয়া গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আল মামুন আইনশৃঙ্খলার বাহিনীর সদস্যদের উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘ওয়ারেন্ট ছাড়া কাউকে আটক বা গ্রেপ্তার করা আইনসিদ্ধ নয়। আপনাদের কাছে শিক্ষার্থীদেরকে আটক করার কোনো নথিপত্র নেই। কেবল সন্দেহের বশে কাউকে আটক করা অন্যায়। আপনারা এমনটা কখনোই করতে পারেন না। এর পরে যদি কোনো ছাত্রের গায়ে হাত পড়ে এবং আমার সহকর্মীদের গায়ে আঘাত লাগে এটা কিন্তু আমরা মেনে নেবো না। শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে আসবে, তাই বলে পুলিশ প্রশাসন কোনো শিক্ষার্থীকে এভাবে তুলে নিয়ে যেতে পারে না। কারণ তাদের নামে কোনো মামলা নেই যে, তারা আসামি। ‘
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. আসাবুল হক বলেন, তারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের রাবি ক্যাম্পাসের বাইরেই অবস্থান করতে বলেছেন। তবে বহিরাগত কোনো শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসে প্রবেশ করলে তারাও ক্যাম্পাসে প্রবেশ করবেন। আর বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ। তাই তাদের শিক্ষার্থীরা বাড়ি চলে গেছে। কেউই এখানে নেই। এরপরও ক্যাম্পাসে আন্দোলন কর্মসূচি চলছে। তবে তারা চাননা যে কোনো শিক্ষার্থীই হয়রানি হোক। তাই বুধবার সকালে বিষয়টি জানার পরপরই সকল শিক্ষার্থীকে তারা ক্যাম্পাসের কাজলা গেইট পর্যন্ত নিয়ে যান এবং গাড়িতে তুলে দেওয়া হয় বলেও জানান রাবি প্রক্টর।
এদিকে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন) মোহাম্মদ হেমায়েতুল ইসলাম জানিয়েছেন, কর্মসূচি চলার সময় মিছিল থেকে পুলিশের ওপর চড়াও হওয়ার চেষ্টা করলে আন্দোলনরত কয়েকজন শিক্ষার্থীকে নিবৃত্ত করা হয়েছে মাত্র। সেখান থেকে পুলিশ কাউকে আটক করেনি। পুলিশ ক্যাম্পাসের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে তাদের কর্তব্য পালন করে যাচ্ছে। কাউকে হয়রানি করা তাদের উদ্দেশ্য নয় বলে উল্লেখ করেন তিনি।