নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহী বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা বলেন, প্রশাসন ও পুলিশ শিক্ষার্থীদের নির্বিচারে হত্যা করে শহীদ করেছে। তারা তাজা প্রাণ ঝড়িয়েছে। অফিসিয়ালভাবে তাদের সবার হাত রক্তে রঞ্জিত। প্রায় এক মাস তারা নির্ঘূম রাত কাটিয়েছেন। এখনো কাটাচ্ছেন। তারা রাত জেগে এলাকা ও সরকারী-বেসরকারী প্রতিষ্ঠান ও জনগণের বাড়ি পাহারা দিচ্ছেন। রাস্তায় বিশৃংখলা এড়াতে ট্রাফিকিং এর কাজ করছেন। এছাড়াও রাস্তা ও ভাঙ্গচুর এবং অগ্নিসংযোগকৃত বিভিন্ন অফিস সমুহ পরিস্কার করছেন। বর্তমানে আইন শৃংখলা অবস্থা অনেকটাই লাজুক। এজন্য দেশে পুলিশ বাহিনীকে নামাতে হবে। শনিবার দুপুরে রাজশাহী জেলা প্রশাসক সম্মেলন কক্ষে জেলা প্রশাসনের আয়োজনে আলোচনা সভায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ এই কথা বলেন।
তারা বলেন, পুলিশ নিজেই তাদের ভামুর্তি ক্ষুন্ন করেছে। তারা খুুনি হিসেবে চিন্থিত হয়েছে। পুলিশের খারাপ আচরণ, অন্যায়, অত্যাচার ও নির্যাতনের কারনেই বিক্ষুদ্ধ জনগণ, বিভিন্ন থানা, ফাঁড়ি ও পুলিশ সদর দপ্তরে ভাঙ্গচুর করেছে এবং আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে। সেইসাথে মালামাল লুট করেছে। কিন্তু এটা ঠিক হয়নি। আইন শৃংখলা রক্ষাতে যারা নির্দোশ পুলিশ তাদের মাঠে নামানোর কথা বলেন তারা। তারা আরো বলেন, পুলিশ ও প্রশাসনের মধ্যে যারা দোষি তাদের আইনের আওতায় এনে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হবে।
সমন্বয়করা জেলা প্রশাসকসহ উপস্থিত প্রশাসনের কর্মকর্তাদের উদ্যেশ্যে বলেন, যে সরকারই আসুক, কেউ যেন তাদের গোলামী না করেন। সব কিছু তার নিজস্ব গতিতে চলবে। প্রশাসন ও আইন শৃংখলা বাহিনীকে জনগণের পাশে এসে দাঁড়ানোর কথা বলেন তারা। বৈষম্য বিরোধীদের স্বরণ করা যেন আদর্শীক হয় উল্লেখ করে তারা আরো বলেন, দীর্ঘ পনের বছরসহ ৫৩ বছরের জনজাল তারা পরিস্কার করবেন। আর এগুলো পরিস্কার করা পর্যন্ত কাজ করে যাবেন বলে উল্লেখ করেন তারা।
তারা বলেন, দীর্ঘ পনের বছর তারা ভোট দিতে পারেননি। তারা স্বাধীন নির্বাচন কমশিন গঠন করে ভোট প্রদানসহ একটি গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা করা পর্যন্ত সততা ও নিষ্ঠার সাথে জনগণের সেবা করে যাবেন বলে জানান। সেইসাথে বিচার বিভাগ ও নির্বাচন কমিশনসহ সকল প্রতিষ্ঠান তারা দুর্নীতি মুক্ত করবেন। তারা বলেন, পুলিশ আওয়ামী লীগের ক্যাডারে পরিণত হয়েছিলেন। সরকার যা বলেন তাই করতেন। এ অবস্থা থেকে ফিরিয়ে আনতে পুলিশ বিভাগ ও প্রশাসনে ব্যাপক সংস্কার কাজ করতে হবে। তারা আরো বলেন, দেশ দ্বিতীয়বার স্বাধীন ও হায়না মুক্ত হলেও এখন স্বাধীনতার তারা উৎসব করেননি। কারন দুস্কৃতিকারীরা এখনো সংখ্যালঘুদের উপরে হামলা করছে। যেদিন সব কিছু ঠিক পর্যায়ে আসবে সেদিনই তারা আনন্দ মিছিল করবেন বলে উল্লেখ করেন। দেশের উন্নয়নে সবাইকে সততা ও নিষ্ঠার সাথে কাজ করারো আহ্বান জানান তারা।
রাজশাহী জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ এর সভাপতিত্বে সভায় উপস্থিত ছিলেন লেপ্টেনেন্ট কর্ণেল শামীম, রাজশাহী পুলিশ সুপার সাইফুর রহমান পিপিএম(বার) অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) কল্যাণ চৌধুরী, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়ক গোলাম কিবরিয়া চৌধুরী মিশু, মাসুদ রানা, মেহেদী হাসান মুন্না, নওসাজ জামান, তানভীর আহমেদ রিদম, মেহেদী সজীব, আকিল বিন তালেব, ফুয়াদ উল ইসলাম ভুইয়া রাতুল, এফ.আর.এম ফাহিম রেজা, তাসিন খান, মেহেদী হাসান মারুফ, ফৌজিয়া নৌরিন, সালাহউদ্দিন আম্মার, মৃত্তিকা, মাহাদী হাসান মাহির, নুরুল ইসলাম শাহিদ ও আতাউল্লাহসহ বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ।
সভাপতি সহ উপস্থিত বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাবৃন্দ দেশ সংস্কারে কিভাবে পাশে থাকবেন সে বিষয়ে তুলে ধরেন। সেইসাথে দোষি ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনার আশ^াস প্রদান করেন।