নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহী এডভোকেট বার সমিতি নির্বাচনের ৬মাস পর দায়িত্বভার বুঝে পেলো জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য প্যানেল। রোববার দুপুর ২টায় রাজশাহী এডভোকেট বার এসোসিয়েশন ভবনের কার্যনির্বাহী কমিটির কক্ষে দায়িত্ব হস্তান্তর করা হয়।
চলতি বছর ২৯ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হওয়া নির্বাচনে সংগঠনটির নির্বাচিত কমিটির হাতে দায়িত্বভার বুঝিয়ে দেন নির্বাচন কমিশনার জাহাঙ্গীর আলম সেলিম। ২১ সদস্যের এডভোকেট বার সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটির সভাপতি পদে দায়িত্ব বুঝে পান আলহাজ্ব এডভোকেট আবুল কাশেম ও সাধারণ সম্পাদক পদে এডভোকেট জমসেদ আলী। দায়িত্ব গ্রহনকালে নব গঠিত কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক গণমাধ্যমকে বলেন, নির্বাচন পরবর্তী সময় কিছু দুষ্কৃতিকারী ব্যক্তির কারণে নির্বাচিত হয়েও ক্ষমতার হস্তান্তর হয়নি। তবে, দেশের বর্তমান প্রেক্ষাপট বিবেচনায় নির্বাচন কমিশন দীর্ঘ ৬মাস পর তাদের কমিটির দায়িত্ব বুঝিয়ে দেন। পূর্বের ঘটে যাওয়া বিষয়গুলোকে আলোকপাত করতে চান না বলেও জানান নির্বাচিত কমিটির শীর্ষ নেতারা। শেষে, রাজশাহী এডভোকেট বার এসোসিয়েশনের প্যাডে নির্বাচন কমিশনার জাহাঙ্গীর আলম সেলিম, কমিশন সদস্য শামীম হায়দার দারা ও মনোয়ারুল ইসলাম সাক্ষরিত ২পাতা সম্বলিত নির্বাচনী ফলাফল ও নতুন কমিটির অনুমোদনপত্র প্রকাশ করা হয়।
২১ সদস্যের কার্যনির্বাহী কমিটির অন্যান্যরা হলেন, সহ-সভাপতি মজিজুল হক, সানোয়ার কবির খান ঈসা, জানে আলম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক রানা, ইমতিয়ার মাসরুল আল আমিন, হিসাব সম্পাদক আদীব ইমাম ডালিম, লাইব্রেরী সম্পাদক সেলিম রেজা মাসুম, অডিট সম্পাদক মাহবুর জুবেরী রাজু, প্রেস এন্ড ইনফরমেশন শাহ জাহান আলী ফাহিম, ম্যাগাজিন এন্ড কালচার এস.এম জ্যোতিউল ইসালাম সাফি, সদস্য- ইয়াসিন আলী, অলিউল ইসলাম, সাহাবুর রহমান, সাদেক মিয়া, ফাইসাল আলম নয়ন, নাবিলা রিজভী, হুমায়ুন কবির শাম্মী, জান্নাতুল ফেরদৌস রুপু ও জাকির হোসেন।
এ সময়ে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি রাজশাহী মহানগনের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা এডভোকেট এরশাদ আলী ঈশা, আইনজীবী ফোরাম কেন্দ্রীয় সংসদের সহ-সভাপতি এডভোকেট পারভেজ তৌফিক জাহেদী, বাংলাদেশ ল’ইয়ার্স কাউন্সিলর কেন্দ্রীয় সংসদের সহ-সভাপতি এডভোকেট আবু মোহাম্মদ সেলিম, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম রাজশাহীর শাখার সহ-সভাপতি এডভোকেট আলী আশরাফ মাসুম, এডভোকেট মুন্সি আবুল কালাম আজাদ, এডভোকেট মাহমুদুর রহমার রুমন, এডভোকেট আব্দুল মতিন চৌধুরী রুমী ও সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট রইসুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট এজাজুল হক, সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট আল-আমিন, জেলা মহিলা দলের সভাপতি এডভোকেট সামসাদ বেগম মিতালী, এডভোকেট সোহাগ বান্না ও সিরাজুল করিম মাসুম।
উল্লেখ্য এবারের নির্বাচনে মোট ভোটার ছিলেন ৬৮৩ জন। এরমধ্যে ৬৩৭ জন ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। ভোটগ্রহণের পর রাতে গণনা শুরু হয়। ১১টি টেবিলে তিনজন করে ভোট গণনা শুরু করেন। এই তিনজনের মধ্যে দুই প্যানেল থেকে দুইজন এবং নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে একজন ছিলেন। গণনার পর বিভিন্ন টেবিল থেকে আসা ফল একত্রিত করছিলেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার জ্যেষ্ঠ আইনজীবী শেখ জাহাঙ্গীর সেলিম। রাত সাড়ে ১০টার দিকে তিনি ফল ঘোষণার প্রস্তুতি নেন। ইতোমধ্যে এজেন্টদের দেয়া তথ্য ও লিখিত ফল প্রকাশের পেপার্স অনুযায়ী দুইটি সদস্য পদ বাদে মোট ১৯টি পদে জাতীয়তাবাদী আইনঝীবী ঐক্য প্যানেলের প্রার্থীরা বিজয়ী হন। এ অবস্থা দেখে আওয়ামীপন্থী আইনজীবীরা হট্টগোল শুরু করেন এবং নির্বাচন কমিশনারকে আবারও ভোট গণনার কথা বলেন। কিন্তু প্রধান নির্বাচন কমিশনার এতে রাজি হয়েছিলেন না।
এ সময় দুইপক্ষের আইনজীবীদের মধ্যে ধাক্কাধাক্কিও শুরু হয়। একপর্যায়ে আওয়ামীপন্থী আইনজীবীরা লাথি দিয়ে ব্যালট বক্স ভেঙে ফেলেন। এ সময় তারা প্রধান নির্বাচন কমিশনারের পদত্যাগ দাবি করতে থাকেন। চাপের মুখে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ফল ঘোষণা না করে রাত ১টার দিকে পদত্যাগের ঘোষণা দেন। এর আগে তিনি জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদকে ফোন করেন। পরে জেলা প্রশাসক একজন কর্মকর্তাকে পাঠালে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ব্যালটগুলো অন্য একটি বক্সে ঢুকিয়ে তার হাতে তুলে দেন বলে জানা যায়।