নিজস্ব প্রতিবেদক: ডিপ্লোমা-ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং (সার্ভেয়িং) পাশকৃতদের সার্ভেয়ার/সমমান পদে কর্মরতদের বেতন স্কেল ১০ম গ্রেডে উন্নীত করার দাবীতে রাজশাহীতে মানববন্ধন ও সড়ক অবরোধ করা হয়। মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে রাজশাহী মহানগরীর নওদাপাড়াস্থ রাজশাহী সরকারী সার্ভে ইনস্টিটিউট এর সামনে প্রথমে শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন করেন। এরপর তারা রাস্তা অবরোধ করে অবস্থান কর্মসুচি পালন করেন। এসময়ে তার কারিগরি শিক্ষার অবমূল্যায়ন মানিনা মানবোনা, কেউ পাবে কেউ পাবেনা তা হবেনা তা হবেনা, আমার সোনার বাংলায় বৈষম্যের কোন ঠাঁই নাই, ঠাই নাই, এক দফা একদাবী দশম গ্রেড দিতে হবে। এই সকল স্লোগানে মুথরিত করে তোলেন শিক্ষার্থীরা। এসময়ে রাস্তার দুই পার্শে বিশাল যানজোটের সৃষ্টি হয়।
মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচীতে উপস্থিত থেকে নেতৃত্ব দেন রাজশাহী সরকারী সার্ভে ইনস্টিটিউট এর উপদেষ্টা জাহিদুল ইসলাম, সমন্বয়ক আমিনুল ইসলাম, সাজিদ ইসলাম ও রুবা। এসময়ে অত্র প্রতিষ্ঠানের সকল শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।
তারা বলেন, ১৯৯৪ সালের ১৯ নভেম্বর সংস্থাপন মন্ত্রণালয়ের ১৬৪ নম্বর প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে সকল মন্ত্রণালয়/ বিভাগকে তাঁহাদের অধীনস্থ অফিসসমূহে উপ-সহকারী প্রকৌশলী ও সমমানের পদে কর্মরত ইঞ্জিনিয়ারিং এ ডিপ্লোমাধারীদেরকে ২য় শ্রেণির পদমর্যাদা ও বেতন স্কেল ১০ম গ্রেডে নির্ধারন করা হলেও সার্ভেয়িং ডিপ্লোমাধারীদের জন্য নির্ধারিত সার্ভেয়ার সমমানের পদে সরকার নির্ধারিত গ্রেডের কয়েকধাপ নীচে ১৪/১৫/১৬ গ্রেডে নিয়োগ যেয়া হয়, যা সম্পূর্ন বৈষম্যমূলক।
বিগত ২০০৬ সালের ১৬ মার্চ স্মারক নং কাশিঅ/প্লোইউ বিবিধ/পার্ট-২/১৫২০/২০০২/৭১ মূলে মহাপরিচালক, কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর ডিপ্লোমা ইন সার্ভেয়িং টেকনোলজি পাসকৃতদের পদমর্যাদা ও বেতন স্কেল অন্যান্য ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের ন্যায় বৃদ্ধির সুপারিশ প্রদান করলেও আজও তা বাস্তবায়ন হয়নি।
এছাড়াও ২০১৩ সালের ২২ সেপ্টেম্বর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয় যে, বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ৪ বছর মেয়াদী ডিপ্লোমা- ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং সার্ভেয়িং। এ শিক্ষাগত যোগ্যতা সম্পন্নগণ সংস্থাপন মন্ত্রনালয়ের ১৯৯৪ সালের ১৯ নভেম্বর খ্রিঃ তারিখের সম (বিধি-২) পদোন্নতি-২৭/৯৪-১৬৪ নং স্মারকের সঙ্গে সামঞ্জস্য বিধায় তাদেরকে দ্বিতীয় শ্রেণীর পদমর্যাদা প্রদান এবং বেতন স্কেল ১০ম গ্রেডে উন্নীত করায় কথা বলা হলেও তা বাস্তবায়নে সরকার উদ্যোগী হয়নি।
বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড আইন,২০১৮ তে চার বৎসর মেয়াদী সকল ডিপ্লোমা-ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং পাশকৃতদের চাকার দক্ষতার শ্রেণী করণে মধ্যম সারির ব্যবস্থাপক/ সাব-অ্যাসিস্ট্যাস্ট ইঞ্জিনিয়ার/ সমতুল্য হিসেবে বলা হলেও সার্ভেয়িং ডিপ্লোমাধারীদের তৃতীয় শ্রেনীর কর্মচারীর মর্যাদা দেয়া হচ্ছে, যা বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড আইন, ২০১৮ এর সুস্পষ্ট লংঘন, কারিগরি শিক্ষার অবমূল্যায়ন এবং ছাত্রদের সাথে প্রতারনার সামিল বলে উল্লেখ করেন তারা। প্রতারণা না করে পাইভেট বা বেসরকারি সার্ভেয়ার/সমমান পদে কর্মরতদের বেতন স্কেল ১০ম গ্রেডে উন্নীত করার দাবি জানান তারা।
তারা আরো বলেন, ডিজিটাল ভূমি জরিপ ভূমি ব্যবস্থাপনা ও ভূমি অধিগ্রহণের, নামজারি সরকারি খাস জমি চিহ্নিত ও অবৈধ দখলদার হইতে উদ্ধার নদী চিহ্নিত করণসহ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। সরকারের সকল উন্নয়ন (রাস্তা-ঘাট, ব্রীজ, কালভার্ট, বিল্ডিং, সরকারি বিভিন্ন অবকাঠামো) পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়নে কারিগর হিসেবে বিভিন্ন দপ্তরের সার্ভেয়ার/ সমমানের পদে কর্মরত থেকে সার্ভে ডিপ্লোমা প্রকৌশলীগণ প্রত্যক্ষ ভাবে সম্পৃক্ত। একই কারিকুলামে পড়াশুনা করেও তারা কেনো বৈষম্যের স্বীকার হবেন বলে সরকারের নিকট প্রশ্ন রাখেন। তাদের দাবী সমুহ দ্রুত না মানলে লাগাতার ক্লাস বর্জন সহ আরো কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবেন বলে জানান সমন্বয়কগণ।