নিজস্ব প্রতিবেদক: জামায়াতে ইসলামী প্রতিশোধ নয়, দেশ গড়ার কাজে নিয়োজিত হয়েছে। বৈষম্য বিরোধীছাত্র-জনতার গণবিষ্ফোরনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের পরবর্তীতে অন্তর্বর্তী সরকারের সময় বাংলাদেশের উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলে ভয়াবহ বন্যা এবং রাজশাহীসহ দেশের সার্বিক রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক পরিবেশ পরিস্থিতি নিয়ে প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছে রাজশাহী মহানগর জামায়াতে ইসলামী। শনিবার বেলা ১১ টার দিকে নগরীর একটি রেষ্টুরেন্টে এই মত বিনিময় সভায় আমির এই কথা বলেন।
মতবিনিময় সভায় জামায়াত ইসলামীর নেতৃবৃন্দ বলেন, বিগত ১৫ বছর যে কোন দলের চেয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবির সবচেয়ে বেশী নির্যাতিত। এসময় নেতাকর্মীরা বাড়িতে ঘুমাতে পারেননি। অহেতুক মিথ্যা মামলার বেড়াজালে হয়রাণী সহ নিরাপদ নেতাকর্মীদের পুলিশ ও আওয়ামীলীগ-ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা খুন করেছে। এমনকি তাদের জানাযা পর্যন্ত তাদের পড়তে দেয়া হয়নি। এতো জুলুম নির্যাতনের পরেও প্রতিশোধের নীতি পরিহার ও সকল বিষয়ে ক্ষমা প্রদর্শন করে জামায়াতে ইসলামী ঐক্যবদ্ধ হয়ে দেশটাকে নতুনভাবে গড়তে চায়। এর ধারবাহিকতায় কেন্দ্রীয় এবং স্থানীয় ভাবে তারা তাদের কার্যক্রম শুরু করেছেন।
রাজশাহী মহানগরী জামায়াতের আমীর ও কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ড. মাওলানা কেরামত আলীর সভাপতিত্বে মূল বক্তব্য রাখেন সেক্রেটারী ইমাজউদ্দীন মন্ডল। রাজশাহী মহানগরী জামায়াতের প্রচার ও মিডিয়া সম্পাদক অধ্যাপক সারওয়ার জাহান প্রিন্সের সঞ্চালনায় আরো উপস্থিত ছিলেন, রাজশাহী মহানগরী জামায়াতের নায়েবে আমীর অধ্যক্ষ সিদ্দিক হোসেন, নায়েবে আমীর এডভোকেট আবু মোহাম্মদ সেলিম, সহকারী সেক্রেটারী অধ্যক্ষ মাহবুবুল আহসান বুলবুল, রাজশাহী মহানগর ইসলামী ছাত্রশিবিরের সভাপতি মোহাঃ সিফাত আলম, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশিবিরের সভাপতি আবদুল্লাহ মুহায়মেন সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
মতবিনিময় সভায় জামায়াতে ইসলামীর নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, দেশের মধ্যে জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্র শিবিরের নেতাকর্মীরা অবর্ণনীয় পুলিশী নির্যাতনের শিকার হলেও সব কিছু ভুলে জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্র শিবিরের নেতাকর্মীরা দ্বিতীয় স্বাধীনতা পরবর্তী সময় রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন, পুলিশ লাইন, বিভিন্ন মন্দির ও হিন্দুদের বাড়ি পাহরাসহ লুটপাট এবং চাঁদাবাজী রোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। একই সাথে আন্দোলন সংগ্রামে নিহতদের সার্বিক দায়-দ্বায়িত্ব গ্রহন সহ আহতদের ও উপযুক্ত চিকিৎসা সেবায় যথাযথ ভাবে সহযোগীতা করা হয়েছে। বন্যা কবলিত এলাকায় সর্বাত্বক ত্রান পৌছানোর ব্যবস্থা করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী রাজশাহী মহানগরী শাখা।
নায়েবে আমীর এডভোকেট আবু মোহাম্মদ সেলিম বলেন, চলমান ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় ফ্যাসিস্ট ও স্বৈরাচারী সরকার জামায়াত-শিবিরের নামে ৪৫০টি এর অধিক মামলা করেছে। আর অজ্ঞাত মামলা হিসেবে এর সংখ্যা দাঁড়ায় হাজারের অধীক। জামায়াত নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, আন্দোলনে ১১ জনকে হত্যা এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে কুপিয়ে দুইজনের পা বিচ্ছিন্ন করে ফেলা হয়েছে। এছাড়াও ৫ জনকে গুম করে রাখা হয়েছিলো। এক প্রশ্নের জবাবে রাজশাহী মহানগরী জামায়াতের আমীর ড. মাওলানা কেরামত আলী বলেন, বিভিন্ন ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং কিছু প্রকৃয়াধীন।
কিন্তু আন্দোলনের ঘটনার সকল মামলার দায়িত্ব জামায়াতে ইসলামী নেবেনা। তবে তাঁরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছেন যাতে নিরাপরাধ কোন ব্যক্তি হয়রানীর স্বীকার না হয়। এসময় তিনি সকল সাংবাদিকদের বস্তু নিষ্ঠ এবং ন্যায়-নীতির সাথে সংবাদ পরিবেশন করার আহ্বান জানিয়ে সভা শেষ করেন।