নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহীর গোদাগাড়ী ও তানোর উপজেলা বিএনপি’র আয়োজনে শনিবার দুপুর ১২টায় রাজশাহী প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। গোদাগাড়ী উপজেলা বিএনপির নির্বাচিত সভাপতি আব্দুস সালাম শাওয়াল, সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুল ইসলাম এবং তানোর পৌরসভার সাবেক মেয়র ও রাজশাহী জেলা বিএনপির সদস্য মিজানুর রহমান মিজান এর বিরুদ্ধে মিথ্যা, বানোয়াট ও উদ্দেশ্যপ্রনিত অভিযোগ এবং ভুল তথ্যের ভিত্তিতে প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদে এই সংবাদ সম্মেলন করেন তারা।

লিখিত বক্তব্যে পর্যায়ক্রমে উভয়ে উল্লেখ করেন, গোদাগাড়ী-তানোর উপজেলা নিয়ে রাজশাহী-১ নির্বাচনী এলাকা গঠিত। এই নির্বাচনী এলাকায় বিএনপির সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মরহুম ব্যারিস্টার আমিনুল হক বার বার নির্বাচিত হয়েছেন এবং মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন। পাশাপাশি এই দুই উপজেলায় জাতীয়তাবাদী শক্তিকে শিখরে পৌছিয়েছেন। তারা এই উপজেলা সমুহে দীর্ঘদিন ধরে বিএনপির রাজনীতি করে আসছেন। বিএনপির গঠনতন্ত্র ও সাংগঠনিক কাঠামোর ভিত্তিতে দলের প্রতি আনুগত্য থেকে বিএনপির চেয়ারপার্শন বেগম খালেদা জিয়া, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নির্দেশনা মোতাবেক স্থানীয়, রাজশাহী জেলা পর্যায়ে, রাজশাহী বিভাগীয় পর্যায়ে এবং ঢাকায় জাতীয় পর্যায়ে সকল রাজনৈতিক কর্মসূচীতে নেতৃত্ব দিয়ে সরাসরি অংশগ্রহণ করেছেন।

ওয়ান ইলেভেন থেকে শুরু করে অদ্যবধি পর্যন্ত তারা বার বার কারান্তরীন হয়েছেন এবং পুলিশ ও আওয়ামী হায়েনা কর্তৃক প্রতিটি হামলার স্বীকার হয়েছেন। বার বার বাড়ী ছাড়া হতে হয়েছে তাদেরকে। তবুও শহীদ জিয়ার আদর্শ থেকে এক পা পেছনে সরে যাননি। তারা মনে করেন ওয়ান ইলেভেন থেকে গত ০৫ আগষ্ট পর্যন্ত দলের ভিতরে স্বার্থান্বেষী কুচুক্রি মহল যারা দলের কোন সাংগঠনিক কার্যক্রমে ছিলনা বরং তারা সুবিদাবাদী সুবিদাভোগী এবং গত ৫ আগষ্ট যারা বিভিন্ন জায়গায় অরাজকতা করেছে তাদের অপকর্ম ঢাকতেই তাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার ও মিথ্যা অভিযোগ উপস্থাপন করেছে। তারা পরিস্কার করে বলেন বিএনপি তাদের রাজনৈতিক শেষ ঠিকানা।

এ বিষয়ে আব্দুস সালাম শাওয়াল বলেন, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের বিএনপি গঠিত হওয়ার সময় থেকে অদ্যবধি বিএনপিতে আছেন এবং জীবনের শেষ পর্যন্ত থাকবেন। তিনি ছাত্রদল এবং দেওপাড়া ইউনিয়ন বিএনপির নেতৃত্বে ছিলেন, গোদাগাড়ী উপজেলার বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক, সাধারন সম্পাদক, সভাপতি ছিলেন এবং বর্তমানে একজন নির্বাচিত সভাপতি। আপনারা সবাই তাঁকে চেনেন ও জানেন এবং বুঝেন, আপনারা সবাই বিএনপির সকল প্রোগ্রামে উপস্থিতি দেখেছেন। অতিত রাজনৈতিক সম্পর্কেও সকলে অবহিত আছেন। রাজনৈতিক জীবনে দলবাজ, চাঁদাবাজ, স্বজনপ্রীতি, কোন কিছু দখল বা কারো প্রতি হামলা, কোন অভিযোগ আপনারা কখনো শোনেননি এমনকি কোন পত্রিকায় প্রকাশিত হয়নি। তিনি পরিছন্ন, স্বচ্ছ এবং বিবেকবান রাজনীতিতে বিশ্বাসী। তাঁর বিরুদ্ধে যে সকল অভিযোগ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে এবং কেন্দ্রীয় বিএনপিতে অভিযোগ করা হয়েছে তাহা মিথ্যা, বানোয়াট, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। মূলতঃ তাঁর সামাজিক রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক মজবুত ভিত্তিকে হেয়প্রতিপন্ন করার জন্যই এই জাতীয় অভিযোগ করা হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের বিএনপি গঠিত হওয়ার সময় থেকে অদ্যবধি বিএনপিতে আছেন এবং জীবনের শেষ পর্যন্ত থাকবেন। তারা ছাত্রদল থেকে বিএনপির নেতৃত্বে এসেছেন। তারা সকল কর্মসূচীতে অংশ গ্রহন কওে আসছেন। তারা রাজনৈতিক জীবনে দলবাজ, চাঁদাবাজ, স্বজনপ্রীতি, কোন কিছু দখল বা কারো প্রতি হামলা তারা করেননি। এমনকি কোন পত্রিকায় প্রকাশিত হয়নি। তাদের বিরুদ্ধে যে সকল অভিযোগ হয়েছে তা মিথ্যা, বানোয়াট, ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রনোদিত বলে উল্লেখ করেন।

এর মধ্যে আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, গোদাগাড়ী উপজেলার বিএনপির নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক ও পাকড়ী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান। আমি আমার শিক্ষা জীবনের শুরু থেকেই জাতীয়তাবাদীর সাথে সরাসরি জড়িত ছিলাম এবং বর্তমানেও আছেন। তিনি গোদাগাড়ী সরকারি কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি ছিলেন। সেইসাথে পাকড়ী ইউনিয়নের যুবদলের সভাপতি গোদাগাড়ী উপজেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক গোদাগাড়ী উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক এবং বর্তমানে উপজেলা বিএনপির নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক, ফলে বিএনপির প্রতিটি স্তরে ধাপে ধাপে আজকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। আমার সাংগঠনিক দক্ষতার কারণে কতিপয় কুচুক্রি মহল ইর্ষান্বিত হয়ে এবং আমার জয়প্রিয়তাকে নষ্ট করার জন্য আমার বিরুদ্ধে সাজানো, মিথ্যা, বানোয়াট ও উদ্দেশ্যপ্রনিত অভিযোগ কেন্দ্রীয় বিএনপিতে উপস্থাপত্র করা হয়েছে।

ডলখিত বক্তব্যে মিজানুর রহমান মিজান বলেন, তিনি তনোর পৌরসভার সাবেক মেয়র। মরহুম মামা ইমরান আলী মোল্লা তানোর পৌরসভার সাবেক মেয়র ও তানোর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান ছিলেন। বংশীয় ভাবেই শহীদ জিয়ার আদর্শের সাথেই আমরা সরাসরি জড়িত। তিনি বার বার ঢাকা-রাজশাহীতে পুলিশ ও আওয়ামী বাকশালী কর্তৃক মামলায় প্রেপ্তার হয়েছেন এবং কারাবরণ করেছেন। তানোর পৌরনির্বাচনে বার বার তাঁকে প্রতক্ষ্যভাবে ফলাফল কেড়ে নিয়ে পরাজিত করা হয়েছে। তবুও বিএনপির একজন অত্মদর্শ কর্মী হিসাবে সকল আন্দোলন সংগ্রামে নিজেকে নিয়োজিত রেখেছেন। এমন কোন বিএনপির প্রোগ্রাম নাই যেখানে তাঁর উপস্থিতি ছিল না। প্রত্যেকটা জায়গায় তাঁর নেতৃত্বে তানোর উপজেলা ও তানোর পৌরসভা বিএনপি অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের উপস্থিতি নিশ্চিত করেছেন।

জ্ঞাতস্বরে এ পর্যন্ত বিএনপির নেতৃত্বে বা তানোর পৌরসভার পরিচালনায় কোন অভিযোগ তাঁর বিরুদ্ধে নেই। কিন্তু হঠাৎ করে গত ৫ আগস্ট জালিম সরকারের পতনের পর বিএনপি ধারী কতিপয় নেতা যারা এতোদিন বিএনপির কোন কর্মকান্ডে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন নি এমনকি বিএনপি’র বিভিন্ন দিবসও পর্যন্ত পালন করেন নি, তারা নিজেদের অপরাধ অসাংগঠনিক কার্যক্রম ধামাচাপা দেওয়ার জন্য উদ্দেশ্যপ্রনিত হয়ে কেন্দ্রীয় বিএনপিতে অভিযোগ উপস্থাপন করে এবং পত্রিকায় প্রকাশিত করিয়েছেন। তিনিও সকল অভিযোগের তীব্রনিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। পাশাপাশি কেন্দ্রীয় বিএনপির নিকট যারা এই মিথ্যা ও বানোয়াট ও উদ্দেশ্যপ্রনিত অভিযোগ করেছে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আবেদন জানান তিনি।

এ সময়ে অন্যদের মধ্যে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট শিল্পপতি ও সমাজসেবক এবং গোদাগাড়ী উপজেলা বিএনপির সদস্য এডভোকেট সুলতানুল ইসলাম তারেক, জিয়া পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির সহকারী মহাসচিব ও রাজশাহী বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এবং গোদাগাড়ী উপজেলা বিএনপির সদস্য অধ্যক্ষ আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ সালাম বিপ্লব, গোদাগাড়ী পৌর বিএনপির সভাপতি মজিবুর রহমান ও সাধারণ গোলাম কিবরিয়া রুলু ও সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম বাবু।