নিজস্ব প্রতিবেদক: ২০০২ সালের ১৫ডিসেম্বর গঠিত হয়েছিলো রাজশাহী মহানগরীর একেবারেই কোল ঘেষে গড়ে ওঠা পবা উপজেলা। পবা উপজেলার দুইটি পৌরসভার মধ্যে অন্যতম নওহাটা পৌরসভা। এটি এক নম্বর পৌরসভা হিসেবে স্বীকৃতিও পেয়েছে। এ পর্যন্ত বেশ কয়েকজন মেয়র এসেছেন এবং চলেও গেছেন। সর্বশেষ নির্বাচন হয় ২০২১ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারী। এই নির্বাচনে বিজয়ী হন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী হাফিজুর রহমান হাফিজ। তিনি মেয়র হয়েই রাবন বনে যান।
নওহাটা পৌরবাসীরা জানান হাফিজ মেয়র হওয়ার পর থেকে এলাকার সব উন্নয়ন বন্ধ হয়ে গেছে। পূর্বের মেয়রের করা টেন্ডার এর কাজ বন্ধ। পূর্বেও মেয়রের সময়ের চলমান কাজ যে ভাবে ছিলো সেগুলো সেভাবেই পরে আছে। নামোপাড়া থেকে শিয়াল বের পর্যন্ত রাস্তা এবং ফুলসুতলা থেকে শিয়ালবের স্কুল পর্যন্ত কার্পেটিং আজও করা হয়নি। ফলে জনগণ রয়েছেন অনেক ভোগান্তিতে।
পৌরবাসী আরো অভিযোগ করে বলেন, সদ্য সাবেক মেয়র হাফিজ কোন সময়ে পৌরসভার কথা ভাবেন নি। তিনি কোন কাজ করেননি। ফলে উন্নয়নও হয়নি পৌরসভার। তবে এতে কিছুই যায় আসেনা তাঁর। তবে উন্নয়ন কিন্তু ঠিকই হয়েছে। পৌরসভার নয়, মেয়রের। তিনি এই সাড়ে তিন বছরে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। করেছেন স্থাবর সম্পদ। রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন ও সাবেক এমপি আসাদুজজামান আসাদ এর আস্থাভাজন হওয়ায় তাঁকে কেউ কিছু বলতে পারেনি। এমনও কথা আছে তিনি, ব্রীজ এর কাজ না করেই শুধুমাত্র রং করে টাকা উত্তোলন করেছেন।
পৌরবাসী আরো জানান তিনি এই সাড়ে তিন বছরে ক্রয় করেছেন নওহাটা পৌর বাজারে বর্তমান অগ্রণী ব্যাংকের পশ্চিম পার্শের জায়গা এক কোটি ছিয়ানব্বাই লাখ টাকায়। ঐ জমির উপরে করেছেন মার্কেট। এছাড়াও নওহাটা বীজ্র পার হয়ে গরু হাটের পার্শে জমি ক্রয় করেছেন এক বিঘা ২কাঠা, যার মূল্য পঁচাশি লাখ টাকা। শুধু তাইনয় রহমান কোল্ড ষ্টোরেজ এর পশ্চিম পার্শে এক কোটি সাতাশ লক্ষ টাকা দিয়ে ক্রয় করেছেন জমি। এছাড়াও তার পার্শেই ক্রয় করেছেন আরেক জমি। এটা ক্রয় করেই ক্ষান্ত হননি তিনি। একই স্থানে আরো পনের কাঠা জমি ক্রয় করেছেন। এর মূল্যও এক কোটি সাতাশ লক্ষ টাকা। এছাড়াও বাগধানীতে রয়েছে তার আরো ছয় বিঘা জমি এবং ২০০বিঘা পুকুর। এর সবগুলোই ক্রয় করেছেন তিনি মেয়র হওয়ার পরে। এরমূল্য অনেক বলে জানান তারা।
পৌরবাসী আরো বলেন, নওহাটায় রয়েছে গরু ছাগলের হাট। এই হাটটি মেয়র হওয়ার পর থেকে তিনি নিজের লোকের নামে নিয়ে সব অর্থই লোপাট করেছেন। ঐ টাকা কোন প্রকার টেন্ডার ছাড়াই শুধুমাত্র বিল ভাইচার করে সব টাকা আত্মস্বাত করেছেন। এছাড়াও ভিজিএফ ও টিআর প্রকৃত লোকদের না দিয়ে নিজের লোককে দেয়ার অভিযোগ করেন তারা। পৌরবাসী এই অর্থলোভি, দুর্নীতিবাজ মেয়রকে আটক করে দ্রুত আইনের আওতায় এনে বিচারের মাধ্যমে কঠোর শাস্তির দাবী জানান তারা।
এ সব অভিযোগের সত্যতা সম্পর্কে জানতে সাবেক মেয়র হাফিজুর রহমান হাফিজকে মোবাইলে করলে তার মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়। মূলত ৫ আগস্টে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট পরিবর্তন হওয়ায় আওয়ামী লীগের সভানেত্রী খুনি শেখ হাসিনার সাথে সাথে তার দোসররা পালিয়ে যাওয়াদের মধ্যে হাফিজ একজন। এজন্য তাঁর কোন প্রকার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।