নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহী তানোর-গোদাগাড়ী আসনের বিতর্কিত এমপির নাম ফারুক চৌধুরী। যাকে নিয়ে একাধিক গণমাধ্যমগুলোতে অনেক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। চাষির টাকা থেকে শুরু করে শিল্পপতির টাকা, ধর্ষণ থেকে শুরু করে মাদকের টাকা। এমন কোন সেক্টর নাই যে যেখানে সাবেক এমপি ফারুক চৌধুরীর ছোবল পড়েনি। শুধু তাইনয় শিক্ষক-কর্মচরী নিয়োগের হাতিয়ে নিয়েছে কোটি কোটি টাকা। তিনি তার সংসদীয় এলাকার অন্যান্য জাতিগোষ্ঠির সাথে সাথে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠির কিছু নেতাদের দিয়ে করিয়েছেন এমন কাজ। এরমধ্যে অন্যতম হচ্ছে গোদাগাড়ীর কৃষকলীগ নেতা হুরেন মুর্মু। এই হুরেন মুর্মু নানা অনিয়ম ও ভূমি জবর দখল করে এখনো বহাল তবিয়তে রাজশাহী শহরের বসবাস করছেন। তিনি বিগত ১০ বছরে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ মনে গেছেন।
রাজশাহী গোদাগাড়ীতে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠির ট্যাগ লাগিয়ে সাবেক এমপি ফারুক চৌধুরীর ডান হাত বনে যান হুরেন মূর্মু। এই চেরাগ পেয়েই তিনি ও তার পরিবার দখল করে চলেছেন বিঘার পর বিঘা জমি। তার জমি দখল থেকে মুসলিম, এতিম ও প্রতিবন্ধী কেউ ছাড় পায়নি। শুধু তাই না ক্ষমতা ও টাকার জোরে ২০২৪ সালের গোদাগাড়ী উপজেলা নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান পদে দাঁড়িয়ে হুরেন প্রায় ২ কোটি টাকা ব্যয় করেছেন বলে কথিত আছে।
আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে হুরেন মূর্মু ও তার আপন ভাই বিরেন, নিরেন, রুবেল ও খুবেন মিলে গোদাগাড়রী কুন্দুলিয়া এলাকায় জোর পূর্বক মুসলমানদের জায়গা ও রাস্তা দখল করে বছর দশেক আগে থেকে বসবাস শুরু করেছেন। অনেক চেষ্টা কওে জমিরি মালিকগণ তার উদ্ধার করতে পারেনি বলে জানান ঐ জমির মালিকগণ। হুরেন প্রভাব খাটিয়ে সবাইকে দমিয়ে রেখেছে বলে অভিযোগ করেন তারা। ইতিপূর্বে কুন্দুলিয়ার ঐ জমির জাল দলিল তৈরি করে জেল খেটেছেন হুরেন মূর্মুর অন্যান্য ভাইয়েরা।
যে জমি দখল করে হুরেন মূর্মু ও তার পরিবারের সকল সদস্য যে জায়গায় জোরপূর্বক বসবাস করছেন সেই জায়গার প্রকৃত মালিক হচ্ছে রাজশাহী মহানগরীর কাশিয়াডাঙ্গা এলাকার মিজানুর রহমান, রাজিব হোসেন, মাহাবুল আলম, বুলবুলি, মনোয়ার হোসেন ও মৃত জরিনা বিবি।
ঐ সম্পত্তির প্রকৃত মালিকদের মধ্যে একজন মাহাবুল আলম। তিনি বলেন, হুরেন মূর্মুরা চার ভাই তাদের জায়গা ও রাস্তা দখল করে আছে দুই যুগের অধিক সময় ধরে। তাদের বিরুদ্ধে গোদাগাড়ী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) অফিসে অভিযোগ দিলেও তারা সাবেক এমপি ফারুক চৌধুরীর সহযোগিতা নিয়ে এসিল্যান্ড অফিসে মিমাংশার দিনে হাজির হননি। পরবর্তীতে তারা স্থানীয় চেয়ারম্যান ও মেম্বারের সহযোগিতা নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদে অভিযোগ করলেও সেখানেও তারা উপস্থিত হননি বলে অভিযোগ করেন।
মনোয়ার হোসেন বলেন, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠির হওয়ায় তাদের প্রতি সহানুভূতিশীল হয়ে হুরেন মুর্মুর পরিবারকে বসবাসের জন্য ৫ কাঠা জায়গা দেয়ার কথা বলেন। এ সময়ে অত্র এলাকার অনেক গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। সেইসাথে চলাচলের জন্য রাস্তা এবং একটি মন্দিরের জন্য এক কাঠা জায়গা দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু এতওে তারা রাজী হননি। শুধু তাই নয় তারা একটি জাল দলিলও তৈরি করেছেন বলে জানান তিনি। দলিল নং ৪১ ৬৬১ /৭৬ তারিখ – ৩০/১২/১৯৭৬। যে দলিল পরবর্তীতে আদালতে ও এসিল্যান্ড অফিসে জাল বলে প্রমাণিত হয়। তারা সকলেই তাদের সম্পত্তি উদ্ধার করে তাদের নিকট ফিরিয়ে দেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট অনুরোধ করেন।
এ বিষয়ে রাজশাহী গোদাগাড়ী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান এখন সংস্কার কজ চলছে। কেউ জোর জুলুম করে মানুষের সম্পত্তি জবরদখল করে রাখতে পারবেনা। অভিযোগ দিলে তাকে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
এ বিষয়ে হুরেন মূর্মুর সাথে মুঠোফোনে বার বার কল দিয়ে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন কল রিসিভ করেননি। এমনকি তার মুঠোফোনে মেসেজ দিলেও তিনি কোন প্রতিউত্তর না করায় তার কোন প্রকার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।