নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহী মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের নবনিযুক্ত উপাচার্য প্রফেসর ডা. মোহা: জাওয়াদুল হক এর সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ বিষয়ে রাজশাহীতে কর্মরত প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সম্পাদক, বার্তা সম্পাদক, ব্যুরো চিফ ও প্রতিনিধিবৃন্দের সাথে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। রোববার বেলা ১১টায় রাজশাহী মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় অস্থায়ী কার্যালয়ঃ বিভাগীয় কন্টিনিউইং এডুকেশন সেন্টার (ডিসিইসি ভবন) রাজশাহী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল ক্যাম্পাসে এই মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় নবনিযুক্ত উপাচার্য বক্তব্যের শুরুতে তিনি মহান মুক্তিযুদ্ধ এবং সাম্প্রতিক ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে যারা জীবন দান করেছেন তাদের প্রতি অকুণ্ঠ শ্রদ্ধা ও সালাম জানান। সেইসাথে সকল বীর শহীদদের রুহের মাগফিরাত এবং আহতদের দ্রুত নিরাময় কামনা করেন। বৈষম্যহীন এবং দুর্নীতি ও অনাচারমুক্ত দেশ গড়ার স্বপ্নে দায়িত্ববোধে প্রাণিত হয়েই এই মতবিনিময় সভার আয়োজন করেছেন বলে উল্লেখ করেন তিনি। তিনি বলেন, ছাত্র-জনতার এই অভ্যুত্থানের ধারাবাহিকতায় সরকার তাঁকে রাজশাহী মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলরের গুরুদায়িত্ব অর্পণ করেছে। গত ১০সেপ্টেম্বর ২০২৪ তারিখ তিনি এই দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন।
তিনি উল্লেখ করেন ২০১৬ সালের ১২ই মে প্রকাশিত ২০১৬ সালের ১৮ নং আইন দ্বারা রাজশাহী মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়। এর উদ্দেশ্য ছিল প্রধানত তিনটা- রাজশাহী জেলা এবং তার আশেপাশের প্রায় ২ কোটি মানুষকে স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের লক্ষ্যে ১২০০ শয্যাবিশিষ্ট একটি বিশেষায়িত হাসপাতাল নির্মাণ করা, চিকিৎসক, নার্স ও অন্যান্য স্বাস্থ্যবিষয়ক জনবল তৈরি ও তাদের দক্ষতা বৃদ্ধি এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে ১০টি ফ্যাকাল্টি চালু করা এবং চিকিৎসাসেবার মানকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে উন্নীত করার লক্ষ্যে গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করা। ইতোমধ্যে আট বছর অতিবাহিত হয়েছে কিন্তু এখনও এই তিনটি লক্ষ্য বাস্তবায়নের প্রাথমিক কাজও সম্পন্ন করা সম্ভব হয়নি। এ অবস্থায় তাঁর কাঁধে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্ব অর্পণ করা হয়েছে। তিনি যেন এইসব লক্ষ্য অর্জনে অত্যন্ত স্বচ্ছতা, সততা ও নিষ্ঠার সাথে কাজ করতে পারেন সেজন্য রাজশাহী অঞ্চলের সর্বস্তরের মানুষ, বিশেষ করে সাংবাদিকদের পরামর্শ ও সহযোগিতা প্রয়োজন জানান।
রাজশাহী মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রম শুরু হয় ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষ থেকে। প্রথমে রাজশাহী, রংপুর এবং খুলনা বিভাগ এই বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতাভুক্ত ছিল। ২০২১ সালে খুলনা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়। তখন খুলনা বিভাগে অবস্থিত চিকিৎসা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো ২০২১-২০২২ শিক্ষাবর্ষ থেকে রাজশাহী মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পৃথক হয়ে যায়। অবশ্য যেসব শিক্ষাবর্ষের কার্যক্রম রাজশাহী মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে শুরু হয়েছিল সেগুলো শেষ হওয়া পর্যন্ত এই বিশ্ববিদ্যালয়ে অধীনেই পরিচালিত হবে বা হচ্ছে ও উল্লেখ করেন তিনি।
তিনি আরো বলেন, এটা অস্থায়ী কার্যালয়। নিজস্ব কার্যালয় প্রতিষ্ঠা করার লক্ষে ইতোমধ্যে জমি অধিগ্রহন শেষ হয়েছে। অনেক দরপত্র দেয়া হয়েছে। সামনে আরো দেয়া হবে। দ্রুততার সাথে অত্র বিশ^বিদ্যালয়ের কাজ শেষ করা হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, অণেক অভিযোগ রয়েছে। সেগুলে খতিয়ে দেখে তার পরে বিশ^বিদ্যালয়ের আইন ও নীতি অনুযায়ী পদক্ষেপ গ্রহন করা হবে। সেইসাথে আগামীতে দক্ষ জনবল স্বচ্ছতার সাথে নিয়োগ প্রদান করা হবে। সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি আরো বলেন, অনেক সিদ্ধান্ত নেয়া সম্ভব হচ্ছেনা। কারন সিন্ডিকেট এর অনেক সদস্যকে এখন পাওয়া যাচ্ছেনা। এজন্য কার্যক্রম পরিচালনা ব্যহত হচ্ছে। এ বিষয়ে মন্ত্রণালয় ও রাষ্ট্রপতির সাথে আলোচনা করে ব্যবস্থা গ্রহন করবেন বলে উল্লেখ করেন উপাচার্য।
এ সময়ে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী মেডেকেল বিশ^বিদ্যালয়ের রেজিষ্টার প্রফেসর ডাক্তার আব্দুস সালাম, প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী সিরাজুম মনির ও পরিচালক অর্থ ও হিসাব ডাক্তার জাকির হোসেন। এছাড়াও অত্র বিশ^বিধ্যালয়ের অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারী ও সাংবাদিকবৃন্দ।