নিজস্ব প্রতিবেদক: বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সদ্য যোগদানকৃত চেয়ারম্যান ড. এম আসাদুজ্জামানকে সংবর্ধনা প্রদান করা হয়। সোমবার বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের প্রধান কার্যালয় অত্র প্রতিষ্ঠানের আয়োজনে এই সংবর্ধনা প্রদান অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নয়া চেয়ারম্যান ড.এম আসাদুজ্জামান। সভাপতিত্ব করেন বিএমডিএ’র নির্বাহী পরিচালক শফিকুল ইসলাম (অতিরিক্ত সচিব)।
উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী আব্দুর রশীদ, শামসুল হোদা, আবুল কাশেম, জাহাঙ্গীর আলম খান, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আব্দুল লতিফ, সমসের আলী, শরীফুল হক, এটিএম মাহফুজুর রহমান, শিবির আহমেদ ও সুমন্ত কুমার বসাক, প্রকল্প পরিচালক রেজা মোহাম্মদ নূরে আলম ও বিএমডিএ সচিব এনামুল কাদির সহ বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সদর দপ্তরের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী, প্রকল্প পরিচালক, নির্বাহী প্রকৌশলী, ব্যবস্থাপক কৃষি, মনিটরিং অফিসার, হিসাব নিয়ন্ত্রক, উপ-পরিচালক (সেবা) ও সহকারী প্রকৌশলীবৃন্দ। অনুষ্ঠানের শুরুতে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের যারা মৃত্যুবরন করেন তাদের সকলের উদ্দেশ্যে দোয়া করা হয়। আলোচনা শেষে বিএমডি এর সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পক্ষে থেকে প্রধান অতিথির হাতে সম্মাননা স্বরুপ ক্রেস্ট তুলে দেয়া হয়।
সদ্য যোগদানকৃত চেয়ারম্যান ড. এম আসাদুজ্জামান এর ব্যক্তিগত জীবন সম্পর্কে জানা যায়, ১৯৪৯ সালের পহেলা নভেম্বর বরেন্দ্র অঞ্চলের গোদাগাড়ীতে রন্তগর্ভা মায়ের এ সন্তান জন্ম নেন। বড় হয়েছেন প্রকৃতির রুক্ষতা আর বৈরীতা মোকাবেলা করে। ছোট বেলায় খুব কাছ থেকে দেখেছেন খরা পীড়িত আর দারিদ্রের কষাঘাতে নিষ্পেষিত এ অঞ্চলের মানুষগুলোকে জীবন জীবীকার তাগিদে সংগ্রাম করতে। ছেলে বেলার কৃষকের সাথে মাঠে কাজ করেছেন নিজেদের জমিতে।
১৯৭২ সাল থেকে ১৯৭৭ সাল পর্যন্ত স্যার ম্যাকডোনাল্ড এ্যান্ড পার্টনার এর কনসালটেন্ট হিসেবে বিএডিসিতে চাকুরী করেন। প্রকল্পের চুক্তি শেষ হয়ে যাওয়ায় ১৯৭৭ সালে বিএডিসির সহকারী প্রকৌশলী হিসেবে তাঁর যাত্রা শুরু। সুযোগ হয় বাংলাদেশের ভূ-গর্ভস্থ ও ভূ-উপরিস্থ সেচ ব্যবস্থাপনা নীতিমালা গভীরভাবে পর্যবেক্ষনের। দেশী বিদেশী বিশেষজ্ঞরা যখন মতামত দিয়েছিল রাজশাহীর বরেন্দ্র অঞ্চলে ভূ-গর্ভস্থ পানি তুলে সেচ প্রদান সম্ভব নয়। এমন মতামতের বিপক্ষে বিষয়টাকে চ্যালেঞ্জ হিসাবে নেন। পুরো বরেন্দ্র এলাকা ঘুরে কারিগরি তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের উপস্থাপন করে দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। ১৯৮২-৮৩ সালে কারিগরি তথ্য সমৃদ্ধ রিপোর্ট তৈরি করে সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
এরপর পক্ষে বিপক্ষে মতামত সুপারিশ আর তৎকালীন বিএডিসির কর্মকর্তাদের নিয়ে সিদ্ধান্ত হয় ডিপ-টিউবওয়েল বসানোর। ১৯৮৬ সালে প্রজেক্টের উন্নয়নমূলক কাজে ভূমিকা রাখার জন্য তাঁকে নির্বাহী প্রকৌশলী হিসেবে পদোন্নতি দেয়া হয়। শুরু হয় বরেন্দ্র কর্তৃপক্ষের কর্মযজ্ঞ। আসে একের পর এক সফলতা। ঠা ঠা বরেন্দ্র হিসেবে পরিচিত এক ফসলের জায়গায় তিন ফসল উৎপন্ন হয়। সবুজে ভরে যায় চারিদিক। বৃহত্তর রাজশাহী থেকে রংপুর জেলা পর্যন্ত পুরো উত্তরাঞ্চল-জুড়ে চলে বরেন্দ্র প্রকল্পের কর্মকান্ড বিস্তৃত হয়।
বরেন্দ্রের প্রান পুরুষ খ্যাত আসাদুজ্জামান চেয়ারম্যান হিসেবে আসার খবরে উল্লসিত বরেন্দ্রের সাধারণ মানুষ। আসাদুজ্জামান এর বড় ভাই বিএনপির প্রয়াত ভাইস চেয়ারম্যান সাবেক ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী ব্যারিস্টার আমিনুল হক, আরেক ভাই সাবেক সেনা কর্মকর্তা, আরেক ভাই পুলিশের সাবেক বড় কর্মকর্তা। ছোট ভাই ডাক্তার। এ কারনেই তার মাতা রত্নগর্ভা হিসেবে ভূষিত হয়েছিলেন।