মঙ্গলবার, ১৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১২:১৮ অপরাহ্ন

দাদন ব্যবসায়ীর খপ্পরে সর্বশান্ত রাজশাহীর মৎস্য ব্যবসায়ী মিজান

  • প্রকাশ সময় বুধবার, ২৩ অক্টোবর, ২০২৪
  • ৩০ বার দেখা হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক: হারিয়ে যাওয়া চেকের মামলায় দিশেহারা মৎস্য ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান মিজান। মিজানের বাড়ি রাজশাহী মহানগরীর নওদাপাড়া এলাকায়। প্রায় ১০ বছর যাবৎ তিনি মৎস্য ব্যবসার সাথে যুক্ত। তিনি বর্তমানে বায়া মৎস্য আড়ৎ সমিতির সভাপতি। মিজান চেকের মামলায় মাসে ২-৩ বার হাজিরা দিচ্ছেন রাজশাহী আদালতে। কিন্তু সরেজমিন অনুসন্ধানে জানা যায়, তিনি প্রতারনার শিকার হয়েছেন।

এ বিষয়ে রাজশাহী বায়া মৎস্য আড়ৎ সমিতির সদস্য ও ব্যবসায়ী জানান, বায়া বাজারের স্থানীয় ব্যবসায়ী আলিম এর নিকট থেকে লাভের উপরে ১০ লাখ টাকা ঋন করেন মিজান। এই ১০ লাখ টাকার বিপরীতে তিনি ব্যবসায়ী আলীমকে তার স্বাক্ষরকৃত ২টি ব্ল্যাংক চেক প্রদান করেন। পরবর্তীতে আলিম ঐ টাকার বিনিময়ে ৪ বছরে প্রায় ৫০ লক্ষ টাকা সুদসহ পরিশোধ করেছেন মিজান।

ব্যবসায়ী আলিম ও মিজান একই এলাকার ব্যবসায়ী তাই তারা কোন প্রকারের স্ট্যাম্পে কিংবা কাগজে চুক্তিনামা করেন নাই। এই টাকা লেনদেনের সময় সাক্ষী হিসেবে বায়া মৎস্য সমিতির সকল সদস্য উপস্থিত ছিলেন। মিজান, আলিমের সকল টাকা শোধ করলেও তার স্বাক্ষর করা ব্যাংকের চেক ফেরত দেন নাই। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে আলিম ২০২১ সালে ও ২০২২ সালে মিজানের ব্যাংক চেক ডিজওনার করে ১টি এনজিও ও একজন নারীকে দিয়ে পৃথক পৃথক ২টি মামলা দায়ের করান।

তবে মামলার কাগজ পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, ২০২১ সালের মামলায় চেক ডিজওনার মামলার বাদী রাজশাহী মহানগরীর সাহেব বাজারে ফেইথ সেভিং এন্ড ক্রেডিট কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিঃ এবং ২০২২ সালের মামলার বাদী রাজশাহী রাজপাড়া থানা এলাকার শারমিন আক্তার। অথচ মামলার ২ বাদীর সাথে মৎস্য ব্যবসায়ী মিজানের কোন সম্পর্ক নেই। এমনকি ২ মামলার বাদীর সঙ্গে মোবাইল আলাপ কিংবা স্ব-শরীরের দেখা পর্যন্ত মিজানের হয় নাই।

তাই তো রাজশাহী বায়া মৎস্য পাইকাড় কমিটির সাধারন সম্পাদক কলম আলী বলেন, ব্যবসায়ী হয়ে অন্য ব্যবসায়ীকে বিপদে ফেলা উচিত নয়। মিজানের বিরুদ্ধে করা এই মামলা গুলো আরোও তদন্ত হলে সত্য ও প্রকৃত ঘটনা বের হয়ে আসবে। সেই সাথে মৎস্য ব্যবসায়ী মিজানের সাথে কার কি সম্পর্ক তা পরিষ্কার হয়ে যাবে। যারা বলছে ৪৫ লাখ টাকা মিজানকে দিয়েছে তাদের আদৌ ৪৫ লাখ টাকা দেওয়ার ক্ষমতা আছে কিনা তা বিবেচনা করা উচিত।

রাজশাহী বায়া মৎস্য আড়ত কমিটির সাধারণ সম্পাদক রাসেল বলেন, মিজান একজন সৎ ব্যবসায়ী। তার বিরুদ্ধে কোন প্রকারের অভিযোগ নেই। কিন্তু ২০১৮ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত মিজানের সাথে একজন ম্যানেজার থাকতো যার নাম জামিউল ইসলাম। এই জামিউল ইসলাম মৎস্য ব্যবসায়ী মিজানকে বিপদে ফেলেছেন। জামিউল ইসলাম ব্যবসায়ী আলিমের শ্যালোক। তাই পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী মিজানকে সুপরিকল্পিতভাবে ফাঁসানো হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

তবে রাজশাহী বায়া মৎস্য আড়ত কমিটির প্রায় প্রায় দুই শতাধিক সদস্য সাফ জানিয়ে দিয়েছেন মিজানের বিরুদ্ধে অন্যায় ভাবে যে মামলা দায়ের করেছে তার বিরুদ্ধে তারা প্রতারণা মামলা, মানববন্ধনসহ বৃহত্তর কর্মসূচি ঘোষণা করবেন। এ বিষয়ে ব্যবসায়ী আলিমকে ফোন করলে তিনি ঢাকাতে আছেন এবং মিজানের মামলার বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না বলে জানান।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো নিউজ দেখুন
© All rights reserved © 2021 dailysuprovatrajshahi.com
Developed by: MUN IT-01737779710
Tuhin