নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহী জেলা অ্যাডভোকেসি প্লাটফর্মের আয়োজনে ও বাংলাদেশেস্থ সুইজারল্যান্ড দূতাবাস ও হেকস এর সহযোগিতায় রাজশাহী বিভাগীয় পর্যায়ে অধিপরামর্শ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্রধান অতিথি হিসেে উপস্থিত থেকে রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ুন কবীর, উন্মুক্ত আলোচনায় বিভিন্ন জেলা থেকে আগত ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠি ও হরিজন নেতৃবৃন্দের সমস্যার কথা শোনেন। এরপর তিনি বলেন, তিনি রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন এলাকায় বসবাসরত হরিজন সম্প্রদায়ের জন্য কলোনী তৈরী করা হবে। কারণ তিনি এখন রাসিক মেয়রের দায়িত্বে আছেন।
তিনি আরো বলেন, ৫ আগস্ট দেমেল স্পট পরিবর্তন হওয়ায় ছাত্র-জনতা ক্ষিপ্ত হয়ে দেশের বিভিন্ন থানা, ও আওয়ামীলীগ ও তার জোটের নেতাকর্মীদের বাড়িতে এবং দলীয় কার্যালয় ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা করে ভাঙ্গচুর ও অগ্নিসংযোগসহ নানা ধরনের তান্ডব চালায়। কিন্তু বিচ্ছিন্ন দুই একটি ঘটনা ভিন্নতা ছিলো। যদি রাজনৈতিক নেতাদের বাড়িতে হামলা কারে থাকে তাহলে বিষয়টি ভিন্ন। আর যদি অন্য কারনে হামলা ও লুটতরাজ হয় সে বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়ার জন্য আইন শৃংখলাবাহিনীরকে বলবেন বলে তিনি উল্লেখ করেন তিনি।
প্রধান অতিথি আরো বলেন, বর্তমান সরকার বৈষম্যবিরোধী সরকার। এই সময়ে অদিকারগুলো আদায়ে কাজ করার জন্য উপস্থিত ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠির এবং হরিজন সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দদের পরামর্শ দেন। যে কোন বিষয়ে নির্দিষ্ট করে বললে সে কাজ দ্রুত করা যায় উল্লেখ করে তিনি বলেন, কোথাও যদি কোন সম্প্রদায়ের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে উপরে হামলা হয়, আর এই কাজ যারা করেছে বা করবে তাদের কোনভাবেই ছাড় দেয়া হবেনা। সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীতে যেন প্রকৃত মানুষ প্রবেশে করেত পারে সেদিকে তার বিশেষ নজর রয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
তিনি আরো বলেন, রাজশাহী একটি খরা প্রবন এলাকা। এই এলাকার ভূগর্ভস্থ পানির লেয়ার দিন দিন নিচে নেমে যাচ্ছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে আগামী কয়েক বছরে মধ্যে সুপেয় পনির সংকট প্রকোট আকার ধারন করার সম্ভাবনা রয়েছে। এ অবস্থা থেকে রাজশাহী বিভাগকে বাঁচতে আটটি জেলার ২০হাজার পুকুর খনন করে তা পানি সংরক্ষনের জন্য কাজে লাগানো হবে। এই পুকুরগুলো আর কাউকে লিজ দেয়া হবেনা বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, মাদক কারো জন্যই ভাল নয়। এটা পরিহার করা ভালো। জাল জালিয়াতির হাত থেকে রক্ষা পেতে জমি ক্রয় বিক্রয়ের ক্ষেত্রে নিয়ামানুযায়ী অনুমতি নেয়ার জন্য ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠির জনগণের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠির বর্ণমালা নিয়ে সরকার কাজ করছে। তবে কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠি কিংবা হরিজনদের সন্তানদের ভর্তি না নিলে সেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন বলে উল্লেখ করেন। সেইসাথে জেলা অ্যাডভোকেসী প্লাটফরমের কাজের প্রসংসা করে বক্তব্য ষে করেন বিভাগীয় কমিশনার।
সমতলের প্রান্তিক, ক্ষুদ্র নৃগোষ্টি ও দলিতত জনগোষ্ঠির সামাজিক সুরক্ষা ও অধিকার সহজলভ্য করার জন্য রাজশাহী বিভাগীয় পর্যায়ে অধিপরামর্শ সভায় সভাপতিত্ব করেন জেন্ডার ডাইভারসিটি এন্ড এডভোকেসী প্রোগামের পার্টনারশীপ ম্যানেজার এন্ড সিনিয়র প্রোগ্রাম এডভাইজার সাইবুন নেসা। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী রেঞ্জ ডিআইজি আলমগীর রহমান, আদিবাসী উন্নয়ন গবেষক ও রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয়ের ফোকলোর বিভাগের সহযোগি অধ্যাপক ড. হাবিবুর রহমান, অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার(সার্বিক) তরফদার আক্তার জামীল, অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (রাজস্ব) মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান, গেইন এর কান্টি এডভাইজার ডাক্তার মোহাম্মদ মনিবুল হাসান।
বিশেষ অতিথি হিসেবে আরো উপস্থিত ছিলেন সিনিয়র সহকারী কমিশনার আরাফাত আমান আজিজ, হেকস এর কান্ট্রি ডিরেক্টও ডোরা চৌধুরী।
এছাড়াও জেলা প্লাটফরম এর সভাপতি বিমল চন্দ্র রাজোয়ার, রাজশাহী জেলা অ্যাডভোকেসি প্লাটফর্মের সদস্য আশরাফুল হক তোতা ও আলমগীর কবীর তোতাসহ বিভিন্ন দাতা সংস্থা ও বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থার প্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন।