নিজস্ব প্রতিবেদক: ৫ই আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে বিলুপ্ত হয় আওয়ামী সমর্থিত রাজশাহীর দলিল লেখক সমিতির মত গুরুত্বপূর্ণ সমিতিসহ অনেক প্রতিষ্ঠানের কমিটি। সেই সাথে গা ঢাঁকা দেয় যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা কর্মীরা। কিন্তু অপ্রিয় হলেও সত্য যে আওয়ামী ঘরানার অনেকেই আবার এলাকায় ফিরে এসে নৈরাজ্য সৃষ্টি করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এর উৎকৃষ্ট প্রমান হচ্ছে চলতি বছরের ২নভেম্বর রাজশাহী কাঁঠালবাড়িয়া এলাকার সংঘর্ষের ঘটনা।
এলাকাসুত্রে জানা যায়, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার কনিষ্ঠ সন্তান আরাফাত রহমান কোকো একজন ক্রীড়াবিদ ও সংগঠক ছিলেন। মহানগরীর কাঁঠালবাড়িয়া এলাকাবাসী ও যুব ও তরুন সমাজ আরাফাত রহমান কোকো স্মৃতি ফুটবল টুর্নামেন্টের আয়োজন করে। আর এই খেলা নিয়ে সাহাজীপাড়া এলাকার সাবেক আওয়ামীলীগ নেতা ও দলিল লেখক সমিতির সাবেক প্রচার সম্পাদক শামিম হাসান সাধারণ মানুষের সেজে স্থানীয় ও জাতীয় গণমাধ্যমগুলোতে দিয়েছেন সাক্ষাৎকার। এই শামীম হাসানের আসল পরিচয় না জেনে অনেকেই তাকে সাধারণ মানুষ হিসেবে বিবেচনা করেছেন।
রাজশাহী দলিল লেখক সমিতির সাবেক প্রচার সম্পাদক শামীম হাসানের বিভিন্ন সময়ে আওয়ামী লীগ নেতাদের সাথে ছবি ও র্যালিতে উপস্থিত থাকার ছবিও গণমাধ্যম কর্মীদের হাতে এসেছে যেখানে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে তিনি আওয়ামী কর্মী ছিলেন এবং আছেন।
অনুসন্ধানে জানা যায়, রাজশাহী কাঠালবাড়িয়া ফুটবল মাঠ দীর্ঘ দিন সাবেক কাউন্সিলর রজবের নিয়ন্ত্রণে ছিল। সেখানে আওয়ামী লীগ সংশ্লিষ্ট ব্যতীত কেউ কোনদিন কোন অনুষ্ঠান কিংবা দলীয় প্রোগ্রাম ও খেলাধুলা করতে পারত না। ৫ আগস্ট ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানে দখল মুক্ত হয় সেই মাঠ। আর সেই মাঠে ফুটবল টুর্নামেন্টের আয়োজন করেন রাজশাহী মহানগর যুবদলের নির্বাহী সদস্য আকলেসুর রহমান সাজিম। আর এই টুর্নামেন্ট কে বানচাল করতে উঠে পড়ে লাগেন আওয়ামী লীগ নেতা ও রাজশাহী দলিল লেখক সমিতির প্রচার সম্পাদক শামীম হাসান। শামীম হাসানের নির্দেশে সর্বপ্রথম সাজিমের লোকজনের উপর হামলা চালায় কানন, ডাবলু ও জনি নামের কতিপয় যুবলীগ কর্মী।
পহেলা নভেম্বর রাতে সাজিম কাশিয়াডাঙ্গা থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। এ নিয়ে শামীম হাসান তার দলবল নিয়ে রাজশাহী কাঠালবাড়িয়া সাহাজিপারা এলাকায় বাড়ির সামনে একটি মানববন্ধন করেন। এই মানববন্ধন নিয়ে যুবদলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। একজন আওয়ামী পন্থী নেতা ও আওয়ামী সমর্থিত দলিল লেখক সমিতির সাবেক প্রচার সম্পাদক শামীম হাসান কিভাবে, কার অনুমতিক্রমে এই মানববন্ধনের আয়োজন করল সেটাই এখন সব থেকে বড় প্রশ্ন হয়েদেখা দিয়েছে।
তবে আরাফাত রহমান কোকো স্মৃতি সংঘ আয়োজিত ফুটবল টুর্নামেন্ট ও খেলার মাঠকে নিয়ে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের বিভিন্ন নেতাও কর্মীর ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
এ বিষয়ে তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন রাজশাহী মহানগর যুবদলের আহ্বায়ক মাহফুজুর রহমান রিটনসহ রাজশাহী জেলা যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক ফায়সাল সরকার ডিকো। তারা বলেন স্বৈরাচারী হাসিনার বাহিনী এখনও সাধারন মানুষের ছদ্মবেশে বিভিন্ন এলাকায় নাশকতা সৃষ্টি করার পাঁয়তারা চালাচ্ছে। তারা পাড়ায় মহল্লায় ছোট ছোট করে গ্রুপ তৈরী করে নাশকতা তৈরীর প্রস্তুতি চালাচ্ছে। এর অন্যতম উদাহরন আওয়ামী সমর্থিত দলিল লেখক সমিতির সাবেক প্রচার সম্পাদক শামীম হাসান।
সে আওয়ামীলীগের লোক হয়ে প্রাকাশ্যে ছাত্র জনতার উদ্ধার করা মাঠ নিয়ে যে নৈরাজ্য চালাচ্ছে তা বরদাস্ত করা হবেনা। আর এই সকল ব্যাক্তিদের যারা সহায়তা করবে তারাও সাবেক স্বৈরাচারী সরকারের দোসর বলে উল্লেখ করেন তারা। সেইসাথে নেতৃবৃন্দ ও এলাকাবাসী শামীম হাসানসহ তার গ্রুপকে দ্রুত সময়ের মধ্যে আইনের আওতায় এনে শাস্তির দাবী জানান তারা।