বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫, ০৩:৩৯ অপরাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ
সাংবাদিক মাসুদ’র মৃত্যুতে রাজশাহী সিটি প্রেস ক্লাবের শোক বরেন্দ্র অঞ্চলে কৃষি, সেচ ও সার্বিক উন্নয়ন বিষয়ক মতবিনিময় সভা সাংগঠনিক ২নং ওয়ার্ড বিএনপি’র শীতবস্ত্র বিতরণ বেগম জিয়াকে তিলে তিলে মেরে ফেলার উদ্দেশ্যই ছিলো খুনি হাসিনার: ঈশা নওহাটায় দারিদ্র সমাজ উন্নয়ন সংস্থার উদ্যোগে শীতবস্ত্র বিতরণ জয় বাংলা লেখায় গোদাগাড়ীতে যুবদলের প্রতিবাদ মিছিল বিএমডিএ’র প্রধান কার্যালয় ভবন’র ভিত্তি প্রস্থর স্থাপন করেন চেয়ারম্যান ড.এম আসাদুজ্জামান রাজশাহীতে ভলিবল ও ব্যাডমিন্টন প্রতিযোগিতা সমাপ্ত গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে দ্রুত নির্বাচনের কোন বিকল্প নাই:রিজভী সাংগঠনিক ২২ নং ওয়ার্ড বিএনপি’র কর্মীসভা

রাবি’র স্কুল “শিক্ষিকার বিরুদ্ধে নৈতিক স্খলনের” অভিযোগ

  • প্রকাশ সময় সোমবার, ১৮ নভেম্বর, ২০২৪
  • ৪০ বার দেখা হয়েছে

 

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় স্কুল এন্ড কলেজের গার্হস্থ্য বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষিকা প্রভাষক শিউলি খাতুন’র বিরুদ্ধে নৈতিক স্খলনের অভিযোগ উঠেছে। তিনি ২০১৮ সালের ২৬ ডিসেম্বর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় স্কুল এন্ড কলেজে গার্হস্থ্য বিজ্ঞান বিভাগে প্রভাষক পদে যোগদান করেন। শিউলি খাতুন তার পিজিডিএড অথবা বি.এড ডিগ্রী না থাকায় ২০২১/২২ সেশনে ১৯ তম ব্যাচে বিএড ডিগ্রী অর্জনের জন্য ভর্তি হোন। সেখানে পরীক্ষায় নকল করতে গিয়ে বহিস্কৃত হোন। তখন তিনি পিজিডিএড ও বি.এড ডিগ্রী অর্জন না করেই তার চাকরি স্থায়ী করনের জন্য আদালতে রিট আবেদন করেন।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আব্দুস সোবহান’র আপন শালিকার ছেলের বউ হওয়ার কারণে শিউলি খাতুন’কে গার্হস্থ্য বিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক পদে নিয়োগ দেন। কিন্তু সে সময়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় স্কুল ও কলেজে একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণিতে গার্হস্থ্য বিজ্ঞান সাবজেক্টটি অনুমোদন ছিল না।

শিউলি খাতুন’কে নিয়োগ দেয়ার পরে তড়িঘড়ি করে সাবজেক্টটি অনুমোদন করে নিয়ে আসেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আব্দুস সোবহান। অত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শুধুমাত্র একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণিতে ক্লাস নেয়ার অনুমোদন দেন তাঁকে।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল এন্ড কলেজ শিক্ষক নিয়োগ সার্কুলারে উল্লেখ করা হয় যে, একজন শিক্ষক’কে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় হতে এম.এড অথবা পিজিডিএড অথবা বি.এড ডিগ্রী কমপক্ষে জিপিএ ২.৫০ (৪.০০) অথবা ২য় শ্রেণি থাকতে হবে। এম.এড অথবা পিজিডিএড অথবা বি.এড ডিগ্রী না থাকে তবে নিয়োগ প্রাপ্তির ২ বছরের মধ্যে স্ব-উদ্যোগে উক্ত ডিগ্রী অর্জন করতে হবে। অন্যথায় চাকুরী স্থায়ীকরণ করা হবে না।

মুঠোফোনে শিউলি খাতুন’র সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, তাঁর বি.এড পরীক্ষার আগের দিন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইআর)’র বর্তমান স্কুল এন্ড কলেজ’র পরিদর্শক প্রফেসর ড.খালেদউজ্জামান(মিজান) তাঁকে মুঠোফোনে কল দেন। এ সময়ে তিনি বলেন ভাবি আগামীকাল আপনি সাবধানে পরীক্ষা দিতে আসবেন। আপনি জানেন গতকাল একজনকে বহিস্কার করা হয়েছে। আপনাকেও করা হতে পারে।

এরপর তিনি পরীক্ষার রুমে প্রবেশ করলে, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইআর)’র বর্তমান পরিচালক প্রফেসর ড. আক্তার বানু ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইআর)’র স্কুল এন্ড কলেজ পরিদর্শক প্রফেসর ড.খালেদউজ্জামান(মিজান)সহ আরও একজন শিক্ষক ডিউটি’রত ছিলেন। তাঁরা তিনজনই রুম থেকে বের হয়ে গিয়ে ৭/৮ মিনিট পরে আক্তার বানু রুমে প্রবেশ করেন। তাঁর এক মিনিট আগ মুহূর্তে গাফফার নামে একজন পিওন ছিলেন। তিনি পরীক্ষার হলরুমে সকল’কে সচেতন করে দেন। তিনি আরো বলেন, প্রফেসর ড. আক্তার বানু রুমে এসেই তাঁর দুই হাত চেপে ধরেন এবং বহিস্কার করেন। তাঁর ধারণা তাঁর সাথে এই ঘটনা টি পূর্ব-পরিকল্পিত ভাবে ঘটানো হয়েছিল বলে উল্লেখ করেন।

তিনি আরও বলেন, তাঁর চাকরী স্থায়ী করণে কোনো সমস্যা আছে বলে তিনি মনে করেন না। কারণ তাদের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় স্কুল অধ্যাদেশ,-২০১০ এ বলা আছে যে ৪০ অধিক বয়সি বর্তমানে কর্মরত কোনো শিক্ষক’কে পিজিডিএড, বি.এড ডিগ্রী অর্জন করা লাগবে না। সেই কারণে তিনি উচ্চ আদালতে রিট আবেদন করেছেন। তাঁর চাকরী স্থায়ী করনের জন্য রিট আবেদনটি আদালতে চলমান আছে বলে জানান তিনি।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইআর)’র বর্তমান স্কুল এন্ড কলেজ’র পরিদর্শক প্রফেসর ড.খালেদউজ্জামান(মিজান)’র সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এটা সম্পন্ন মিথ্যাচার। তিনি সকল পরীক্ষার্থীদের হলে সতর্ক কওে বলেন আপনারা কেউ নকল করবেন না। আপনাদের ফাস্ট ক্লাস পেতেই হবে এমন কিছু না। এটা সন্ধ্যা কালীন কোর্স করতে এসেছেন, এই কথা বলে তিনি সতর্ক করেন। শিউলি খাতুন তিনি একজন পরীক্ষার্থী ছিলেন। তিনি নকল করছিলেন সেই মুহূর্তে তাকে প্রফেসর ড. আক্তার বানু, নকলসহ ধরেন। ইনিস্টিউট কমিটির ১৬১তম সভায় নকল করনের বিষয়ে অফিসিয়ালি অবগত করে তাকে পরীক্ষা থেকে বহিস্কার করা হয় বলে জানান তিনি।

এব্যাপারে, অত্র শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানের একাধিক শিক্ষক’কের সাথে কথা হলে তারা নাম না প্রকাশ করার শর্তে প্রতিবেদককে বলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় স্কুল এন্ড কলেজে একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণিতে গার্হস্থ্য বিজ্ঞান বিভাগের সাবজেক্ট টি অনুমোদন ছিল না। শিউলি খাতুনকে নিয়োগ দেয়ার পরে তড়িঘড়ি করে সাবজেক্টটি অনুমোদন করে নিয়ে আসেন। সেইসাথে শুধুমাত্র একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণিতে ক্লাস নেয়ার অনুমোদন দেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আব্দুস সোবহান।

তারা আরা আরো বলেন, শিউলি খাতুন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আব্দুস সোবহান’র আপন শালিকার ছেলের বউ হওয়ায় তিনি নিয়মিত ক্লাস নিতে আসতেন না। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তখন শিক্ষক’দের শতভাগ উপস্থিতির জন্য শিক্ষক’রা ডিজিটাল ফিঙ্গার ডিভাইস বসানোর জন্য মৌখিক ভাবে আহবান করেন অধক্ষ্য’র কাছে। বিষয়টি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আব্দুস সোবহান জান্তে পারলে তিনি ডিভাইসটি বসাতে নিষেধাজ্ঞা দেন শুধু মাত্র ঐ শিক্ষিকার জন্য।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় স্কুল এন্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধক্ষ্য ড. আমিনুল ইসলাম বলেন, তিনি নতুন দায়িত্বে আছেন। এবিষয়ে বেশি কিছু বলতে পরাবেন না। শুনেছেন শিউলি খাতুন, পিজিডিএড বি.এড পরীক্ষা দিতে গিয়ে বহিস্কার হয়েছিলেন। এর বেশি তিনি কিছু বলতে পরাবেন না বলে জানান।

এ বিষয়ে শিক্ষার্থীদের অভিভাবক’রা বলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় স্কুল এন্ড কলেজ রাজশাহী মধ্যে সুনামধন্য একটি শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠানের একজন শিক্ষিকা পরীক্ষা দিতে গিয়ে বহিস্কার হয়েছিল এটা এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য লজ্জাজনক বিষয়। আর একজন নকল করতে গিয়ে বহিস্কার হওয়া শিক্ষিকা তাদের সন্তানদের কি শিক্ষা দেবেন তা তাদের বোধগম্য নয়। নকল কান্ডে জড়িত শিক্ষিকার ব্যাপারে শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ভাবা উচিত বলে মন্তব্য করেন তারা।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো নিউজ দেখুন
© All rights reserved © 2021 dailysuprovatrajshahi.com
Developed by: MUN IT-01737779710
Tuhin