নিজস্ব প্রতিবেদক: আগে ছাত্রীরা বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়ার পথে বখাটেরা যৌন হয়রানি করলে মুখ বন্ধ করেই থাকত। তবে এখন আর কেউ মুখ বন্ধ করে বসে থাকে না। সোজা বিদ্যালয়ে গিয়ে জানিয়ে দেয় শিক্ষকদের। তারপর শিক্ষকেরা ঐ বখাটের অভিভাবককে ডেকে অভিযোগ করেন। রাজশাহী জেলার ৪৭টি বিদ্যালয়ের প্রায় ১২ হাজার ছাত্রীকে এমন প্রতিবাদী করে তুলেছে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাকের অগ্নি প্রকল্প।
রোববার সকালে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এই প্রকল্পের সার্ভিস ম্যাপিং ও শেয়ারিং সভায় এমন কথা জানানো হয়। ব্র্যাকের সোশ্যাল কমপ্লায়েন্স প্রোগ্রাম আয়োজিত এই সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক আফিয়া আখতার। সভায় অগ্নি প্রকল্পের আঞ্চলিক ব্যাবস্থাপক মেহেদী হাসান এর সঞ্চালনায় প্রকল্পের সার্বিক চিত্র তুলে ধরেন- অগ্নি প্রকল্পের টেকনিক্যাল ম্যানেজার ইজাজ আহমেদ চৌধুরী।
সভায় উপস্থিত ছিলেন, স্থানীয় সরকার শাখার উপপরিচালক জাকিউল ইসলাম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (উন্নয়ন ও মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা) উম্মে কুলসুম সম্পা, অগ্নি প্রকল্পের কর্মকর্তা মিতা রানী সরকার, প্রকল্প কর্মকর্তা তাওহীদ হোসেন, প্রকল্প কর্মকর্তা সাবির হোসেন, প্রকল্প কর্মকর্তা মিজানুর রহমান পারভেজ, আইন ও সালিস কেন্দ্রের ডিস্ট্রিক্ট ম্যানেজার হাসিবুল হাসান পল্লবসহ জেলার সমন্বয়ক কমিটির সদস্যবৃন্দ।
সভায় জানানো হয় ইউরোপীয় ইউনিয়নের অর্থায়নে পরিচালিত অগ্নি প্রকল্প রাজশাহী জেলার ৪৭টি স্কুলের ১২ হাজার শিক্ষার্থীদের নিয়ে কাজ করছে। এই প্রকল্প শুরু হয়েছিল ২০২২ সালের মার্চ মাসে এবং চলবে ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত। এই প্রকল্পের মূল লক্ষ্য হলো- নাগরিক সমাজ সংগঠন (সিএসও), নারী ও মেয়ে শিশুদের ক্ষমতায়নের মাধ্যমে পাবলিক স্পেসে এবং কর্মক্ষেত্রে জেন্ডার-ভিত্তিক সহিংসতা প্রতিরোধ ও সুরক্ষার জন্য মানবাধিকার, জেন্ডার সমতা এবং প্রতিরোধ ও সুরক্ষার জন্য একটি উপযুক্ত পরিবেশ তৈরী করা।
সভায় জানানো হয় অ্যাওয়ারনেস, অ্যাকশন, অ্যান্ড অ্যাডভোকেসি ফর জেন্ডার ইক্যুয়াল অ্যান্ড সেইফ স্পেসেস ফর উইমেন অ্যান্ড গার্লস বা অগ্নি প্রকল্পটি মূলত রাজশাহী জেলার স্থানীয় সরকার, জনপ্রতিনিধি ও সুশিল সমাজের প্রতিনিধি এবং স্থানীয় সংগঠনকে সম্পৃক্ত করে মাধ্যমিক স্কুল ও মাদ্রাসা, গণপরিবহন, ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম, স্থানীয় কমিউনিটিতে যৌন হয়রানী ও জেন্ডার ভিত্তিক সহিংসতা প্রতিরোধে গণসচেতনতা তৈরী, রিপোর্টিং ও প্রতিকার এবং প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো তৈরিতে কাজ করছে। সেই লক্ষ্যে শিক্ষার্থীদের সচেতনতামূলক সেশন, স্কুল পর্যায়ে যৌন হয়রানী কমিটি গঠন, ফলোআপ, কমিউনিটি পর্যায়ে অভিভাবক সভা ও টি-স্টল মিটিং এর মাধ্যমে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে।