নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের প্রাচীনতম দৈনিক ইত্তেফাক এর ৭২তম বর্ষে পদার্পন উপলক্ষ্যে রাজশাহীতে সূধী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার বেলা ১১টায় নগরীর অলকার মোড়স্থ একটি রেস্টুরেন্টের হল রুমে সূধী সমাবেশের পর কেক কাটা হয়। অনুষ্ঠানে ইত্তেফাকের প্রতিষ্ঠাতা মরহুম তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া ও সম্পাদক মন্ডলীর সাবেক সভাপতি মরহুম ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনকে গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণ, বাঙালির স্বাধিকার আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধে শহিদ এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্রআন্দোলনসহ সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলনের শহিদদের স্মরণ ও তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করা হয়। এছাড়া যাদের ত্যাগ, পরামর্শ ও ভালোবাসায় দৈনিক ইত্তেফাক কয়েক প্রজন্ম পেরিয়ে এসেছে, তাদেরও বিনম্র শ্রদ্ধায় স্মরণ করা হয়।
ইত্তেফাকের রাজশাহীস্থ স্টাফ রিপোর্টার আনিসুজ্জামান ও ফটো সাংবাদিক আজাহার উদ্দিনের যৌথ সঞ্চালনায় সুধি-সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার প্রফেসর ড. ইফতেখার উল আলম মাসউদ। বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপির কেন্দ্রীয় ত্রাণ ও পুনর্বাসন বিষয়ক সম্পাদক, রাজশাহী মহানগর কমিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট শফিকুল হক মিলন, রাজশাহী সরকারী মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. জোবাইদা আয়েশা সিদ্দিকা, রাজশাহী সরকারি নিউ গভ. ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. কালা চাঁদ শীল, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক প্রফেসর ড. আখতার হোসেন মজুমদার, রাজশাহী এডিটরস ফোরামের সভাপতি ও দৈনিক সোনালী সংবাদের সম্পাদক লিয়াকত আলী এবং বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর রাজশাহী মহানগর কমিটির প্রচার ও মিডিয়া সম্পাদক আশরাফুল আলম ইমন প্রমুখ বক্তব্য দেন।
এছাড়া দৈনিক সোনার দেশের সম্পাদক আকবারুল হাসান মিল্লাত, দৈনিক বার্তার স্টাফ রিপোর্টার ফজলুল করিম বাবলু,স্টাফ রিপোর্টার জাহিদ হাসান পলাশ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাবের সভাপতি জোবায়ের জামিল, দৈনিক জনকণ্ঠের ফটো সাংবাদিক সেলিম জাহাঙ্গীর, দৈনিক কালেরকণ্ঠের ফটো সাংবাদিক সালাহউদ্দিন, বিশিষ্ট পরিবহণ ব্যবসায়ী সেলিম রেজা, দৈনিক ইত্তেফাকের বাঘা উপজেলা প্রতিনিধি নুরুজ্জামান, চারঘাট উপজেলা প্রতিনিধি নজরুল ইসলাম বাচ্চু, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি আশিকুল ইসলাম ধ্রুব প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, ‘বাংলাদেশের ইতিহাস বিনির্মাণের যে পথচলা, তার সূচনা করেছিলেন মরহুম তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া। ইত্তেফাকের যাত্রা বাংলাদেশ জন্মের জন্য একটি উল্লেখযোগ্য মাইলফলক। সংবাদপত্র আমাদের দৈনন্দিন জীবনের একটি অংশ। সংবাদপত্র না পড়লে আমরা পৃথিবী থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাই। অথচ বর্তমানে অনেক সংবাদপত্র জনগণের বিপক্ষেও কাজ করছে। অনেক গণমাধ্যমকর্মী সাম্রাজ্যবাদে জড়িত, তাদের নিয়ন্ত্রণ করেছে কিছু সাম্রাজ্যবাদী মানুষ। তবে ইত্তেফাক শুরু থেকে এখনো সঠিক পথরেখায় কাজ করছে। ইত্তেফাক এখনো জনস্বার্থ রক্ষায় সাংবাদিকতা করছে। ইত্তেফাকে কখনো জনস্বার্থ বিরোধী সংবাদ সচরাচর দেখা যায় না।
বক্তারা আরো বলেন, ‘১৯৪৭ সালের দেশ ভাগের পর পশ্চিম বাংলার ইতিহাস, ঐতিহ্য, স্বাধীকার আন্দোলন সবকিছু মিলিয়ে মুসলিম বাঙালি সংস্কৃতিকে তুলে ধরার জন্য ইত্তেফাকের ভূমিকা অপরিসীম। ১৯৬৬ সালে ইত্তেফাক অনেকবার বন্ধ হয়েছে। বাংলাদেশের জন্ম বা স্বাধীনতা সংগ্রামে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে ইত্তেফাক। একাত্তরের ২৫ শে মার্চের কালরাতে ইত্তেফাক হানাদার বাহিনীর আক্রমণের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়। ইত্তেফাক এখনো যে বৈশিষ্ট্য ধারণ করে, তা বজায় রেখে আগামীতেও মানুষের প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি অবিরতভাবে তুলে ধরবে বলে আশা প্রকাশ করেন তারা। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠনের পক্ষে ইত্তেফাকের ৭২তম বর্ষে পদার্পন উপলক্ষ্যে শুভেচ্ছা জানানো হয়।