মঙ্গলবার, ১৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০১:১৩ অপরাহ্ন

সম্মিলিত ওলামা মাশায়েখ ও তাবলিগ জামায়াতের সাথীবৃন্দের মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ

  • প্রকাশ সময় বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর, ২০২৪
  • ২৭ বার দেখা হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক: সম্মিলিত ওলামা মাশায়েখ ও তাবলিগ জামায়াতের সাথীবৃন্দ রাজশাহীর আয়োজনে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। ১৭ ডিসেম্বও টঙ্গী এজতেমা ময়দানে গভীর রাতে নিরস্ত্র গুমন্ত মুসল্লিদের উপর সাদপন্থী সন্ত্রাসীদের হামলা ও নৃশংস হত্যাকান্ডের প্রতিবাদে ও খুনিদের উপযুক্ত শাস্তির দাবীতে এই মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। বুধবার সকালসাড়ে ১০টার দিকে আরএমপি বোয়ালিয়া মডেল থানার সামনে মানববন্ধন থেকে খুনিদের আইনের আওতায় এনে সর্বোচ্চ শাস্তির দাবী জানান। দাবী না মানলে আগামীতে আরো কঠোর কর্মসূচী দেয়ার হুমকী দেন তারা। সেইসাথে মারকাজ মসজিদ উন্মুক্ত করে দেয়ার দাবী জানান তারা।

কর্মসূচীতে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন বায়ার রাবেয়া বসরী মহিলা মাদ্রাসা মুহতামিম মাওলানা ইমরান উদ্দিন, মুফতি আব্দুল্লাহ তালহা, মোহনপুরের মেহেদী হাসান, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থী ও সমন্বয় মাসুম। এছাড়াও শত শত ওলামা মাশায়েখ ও তাবলিগ জামায়াতের সাথীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

বক্তারা উল্ল্যেখ্য করেন, দিল্লীর মাওলানা সাদ কান্ধলভি অনেক আগে থেকে ইসলাম ধর্ম ও শরীয়ত সম্পর্কে বিভিন্ন রকমের অসার, অযৌক্তিক ও অমূলক বক্তব্য প্রদান করে আসছেন। তিনি ইসলাম ধর্ম নিয়ে এমন কিছু মন্তব্য করেছেন যা সরাসরি কুরআন-হাদিসের সাথে সাংঘর্ষিক। কখনো কখনো বক্তব্যে তিনি প্রিয় নবী হযরত মোহাম্মদ(সা.) কে নিয়েও আপত্তিকর কথা বলেছেন। এজন্য উপমহাদেশের শীর্ঘস্থানীয় আলেমগণসহ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের বিজ্ঞ আলেমগণ মাওলানা সাদ এর বিরুদ্ধে ফতোয়া দিয়েছেন। বিশেষতঃ উত্তরপ্রদেশে অবস্থিত বিশ্ববিখ্যাত ইসলামী বিদ্যাপীঠ দারুল উলুম দেওবন্দ মাদরাসা গত ২০২৩ সালের জুন মাসে একটি ফতোয়ায় (ফতোয়া নম্বর-১১৩৬০) স্পষ্টভাবে ঘোষণা দিয়েছে, মাওলানা সাদের বয়ান শোনা, প্রচার করা এবং তার অনুসরণ করা জায়েজ নয়। সেইসাথে তারা উল্লেখ করেন দেওবন্দ মাদরাসা কর্তৃপক্ষ বলেছে, ভ্রান্ত মাওলানা সাদ সম্পর্কে এটাই তাদের সর্বশেষ অবস্থান।

তারা বলেন, জাতীয় ঐক্য ও ধর্মীয় সম্প্রীতির জন্য বাংলাদেশের বীর্ঘদিনের ঐতিহ্য রয়েছে। এদেশে প্রত্যেক ধর্মের মানুষই সুষ্ঠ স্বাধীনভাবে নিজ নিজ ধর্ম পালন করে। এই ঐক্য ও ধর্মীয় সম্প্রীতি রক্ষার জন্য সবাইকে সচেতন থাকতে হবে। একে বিনষ্ট করে এমন কোনো গোষ্ঠীর অপতৎরতাকে রুখে দিতে হবে। ছাত্র-জনতা, হাজারো আলেম ও মাদরাসা শিক্ষার্থীদের রক্ত ও জীবন দিয়ে গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে দুর্বল করার দেশীয় ও আন্তর্জাতিক সকল ঘড়যন্ত্র ও সমস্ত অপচেষ্টা রুখে দিতে হবে। একটি সুন্দর, সমৃদ্ধ ও সহার্দ্যপূর্ণ দেশ প্রত্যাশা করে তারা বিভিন্ন দাবী তুলে ধরেন, দাবী সমুহ হলো অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে টঙ্গী ইজতিমা ময়দানে ১৭ই ডিসেম্বর, ২০২৪ দিবাগত রাতে ক্লান্ত ঘুমন্ত সাথীদের উপর বর্বরোচিত হামলা ও হত্যাকাণ্ড ঘটানো ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করে উপযুক্ত শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।

তারা আরো দাবী করেন ইতিমধ্যে যে সকল চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও তাদের হুকুমদাতাদের নামে মামলা হয়েছে সে সকল আসামীদের গ্রেপ্তারপূর্বক কঠিন শাস্তি প্রদান করতে হবে। সাদ অনুসরণের দাবী করে এদেশে একদল হিংস্র মানুষ সাধারণ মানুষকে হত্যা করছে, নির্মমভাবে হামলা ও আহত করেছে সেই সাদ এর বাংলাদেশের আগমনকে চিরতরে নিষিদ্ধ করতে হবে। দিল্লীর সাদ এর অনুসারীরা ইতিমধ্যে সন্ত্রাসী হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে। সুতরাং তারা শান্তিপূর্ণ তাবলীগ জামাতের কোনো সদস্য নয়। সুতরাং, সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে তাদেরকে তালিকাভুক্ত করে এদেশে তাদের সকল কার্যক্রম স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধ করতে হবে।

তারা আরো দাবী করেন সাদ পন্থি সন্ত্রাসীদের কাকরাইল মসজিদসহ প্রতিটি জেলার মার্কাজ মসজিদ, টঙ্গী ইজতিমার মাঠসহ দেশের সকল মসজিদে যে কোনো ধরনের কার্যক্রম পরিচালনায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে হবে। এই রাজশাহী ‘অত্যন্ত শান্তি ও সম্প্রীতিপূর্ণ একটি শহর। এখানে ধর্মের নাম দিয়ে। সাদপন্থীদের সকল সন্ত্রাসীমূলক কার্যক্রমকে চিরতরে নিষিদ্ধ করতে হবে।।

মানববন্ধন ও সমাবেশ শেষে বোয়ালিয়া মডেল থানায় বীর মুক্তিযোদ্ধা হাজ্বি আবদুল মালেক, মাওলানা আতিকুর রহমান চৌধুরী, হাজী নাইজ হাসান, ইঞ্জিনিয়ার ইবাদত হোসেন ও মাওলানা আসলামুদ্দিন বাদী হয়ে বোয়ালিয়া থানায় উপস্থিত হয়ে গাজীপুর জেলার টঙ্গী পশ্চিম খানার অধীন টঙ্গীর ইজতিমার মাঠে ঘটে যাওয়া হত্যাকাণ্ডের সাথে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত থাকার অভিযোগ করে একটি সাধারণ ডায়েরী করেন। ঐ চার হলেন রাজশাহী হড়গ্রাম নতুনপাড়া পিতা: মরহুম নকিবুদ্দিন ছেলে ডা. আমিনুল ইসলাম (৭৫), রাজশাহী সিএন্ডবি জামে মসজিদ এর ইমাম মাওলানা গোলাম আজম ওরফে আব্দুল্লাহ, দড়ি খরবোনা এলাকার মুজিবর রহমানের ছেলে মোহাম্মদ আতাউর রহমান মানিক ও বোয়ালিয়া এলাকার হাদিউজ্জামান ছেলে কাযেদ ই জামান মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ (লিটন)।

ডায়েরীতে তারা আরো উল্লেখ করেন সাদপন্থীঐ ব্যক্তিগণগণ তাদের আধিপত্যকে জানান দিতে অবৈধভাবে জোরপূর্বক রাজশাহী বিভাগীয় মারকাজ ও মারকাজ- মাদরাসায় প্রতিষ্ঠার হীনলক্ষ্যে গত ১৯ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার বাদ মাগরিব আনুমানিক সন্ধ্যা ৬ টার হতে দীর্ঘ সময় ধরে ভারতের মাওলানা সাদ এর অনুসারী উপরোক্ত বিবাদীসহ আরো অজ্ঞাতনামা অনেক ব্যক্তি একত্রিত হয়ে রাজশাহী বিভাগীয় মার্কাজ মসজিদ গেটে দেশীয় বিভিন্ন অস্ত্র সস্ত্রে সজ্জিত হয়ে শুরাইনেযামের অনুসারীদেরকে মারকাজ মসজিদ ও মাদরাসা প্রবেশে বাঁধা সহ যত্রতত্র মাদরাসার শিক্ষক ছাত্রদেরকে ও শুরাইনেযামের অনুসারীদেরকে যে কোনো মূহুর্তে মারপিট করে খাম-জখমসহ হত্যাকাণ্ডের মতো ঘটনা ঘটাবে বলে হমকি দেয়ার অভিযোগ করেন। অভিযোগকারীগণ দ্রুত সময়ের মধ্যে বিবাদীদের আটক করে আইনের আওতায় আনার দাবী জানান।

 

 

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো নিউজ দেখুন
© All rights reserved © 2021 dailysuprovatrajshahi.com
Developed by: MUN IT-01737779710
Tuhin