নিজস্ব প্রতিবেদক: সাদপন্থীদের নিষিদ্ধ করাসহ পাঁচদফা দাবি তুলে ধরে রাজশাহী মহানগরীর উলামা মাশায়েখ ও সর্ভস্তরের তৌহিদী জনতার পক্ষে সংবাদ সম্মেলন করেন তাবলিগ জামায়াতের রাজশাহীর জুবায়েরপন্থীরা। টঙ্গী ময়দানে হামলাকারী সাদপন্থী ওয়াসিফুল ইসলাম ও রাজশাহীর সাদপন্থী নেতা ডা. আমিনুল ইসলাম, প্রিন্সিপাল আবু বকর, প্রফেসর নুরুল ইসলাম, ডা. গোলাম মোর্শেদ ও সিএন্ডবি মসজিদের ইমাম মাওলানা গোলাম আজম (আবদুল্লাহ) সহ অন্যান্যদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী এবং সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপের কারণে রাজশাহী মারকাজ মসজিদে প্রবেশে নিষেধসহ সাদপন্থীদের সকল কর্মকাণ্ড স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধকরণ দাবীতে এই সংবাদ সম্মেলন করেছেন ওলামা-মাশায়েখ ও তাবলিগের সাথীবৃন্দ। সেইসাথে সারাদেশের সব মসজিদে সাদপন্থীদের প্রবেশ ও আমল নিষিদ্ধ করারও দাবি তাদের।
রোববার বিকেল ৫টায় রাজশাহী নগরের উপশহর মারকাজ মসজিদ চত্বরে সংবাদ সম্মেলন লিখি বক্তব্য পাঠ করেন সুরা সদস্য আব্দুল্লাহ তালহা। তিনি উল্লেখ করেন টঙ্গী বিশ্ব ইজতিমাকে সফল করার লক্ষ্যে প্যান্ডেল তৈরী ও মাঠ প্রস্তুত করার কাজে কয়েক হাজার শুরাই নেযামের সাথী টঙ্গী ময়দানে অবস্থান করছিলেন। সরকার ও ছাত্র সমন্বয়কদের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে গত ১৮ডিসেম্বর গভীর রাতে নিরস্ত্র ও ঘুমন্ত সাথীদের উপর হামলে পড়ে সাদপন্থী সন্ত্রাসীরা। তারা দেশি বিদেশী ধারাল অস্ত্র, রড-হাতুড়ি ইত্যাদি দ্বারা নিরীহ সাথীদের উপর অতর্কিত হামলা করে। সাদপন্থীদের নৃসংশ হামলায় ইতোমধ্যে আমাদের তিনজন ভাই শাহাদাত বরণ করেছেন। অসংখ্য সাথী গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। তাদের অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
তিনি বলেন, ২০১৮ সালের পহেলা ডিসেম্বরেও সাদপন্থী সন্ত্রাসীদের নারকীয় তাণ্ডবে অনেক সাথী শহীদ ও প্রায় পাঁচ সহস্রাধিক সাথী আহত হয়েছিলেন। এ জাতীয় বর্বরতা দেশ ও বিদেশে ইসলাম ও শান্তিপ্রিয় মুসলমানদের ব্যাপারে ভুল মেসেজ পৌঁছে দিচ্ছে। তাই তাবলিগের নামে এ জাতীয় সন্ত্রাসী কার্যকলাপ বাংলাদেশের মতো একটি শান্তিপ্রিয় মুসলিম দেশে কিছুতেই চলতে দেয়া যায় না বলে উল্লেখ করে সাদপন্থীদের বর্বরতা দেশ ও বিদেশে ইসলাম এবং শান্তিপ্রিয় মুসলমানদের ব্যাপারে ভুল মেসেজ পৌঁছে দিচ্ছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
তিনি আরো উল্লেখ করেন, ভারত কখনো বাংলাদেশের ভাল চায়না। মুসলিমদের বিভ্রান্ত করতে মাওলানা সাদ কান্ধরভি কাজ করে যাচ্ছেন। বাংলাদেশের সব থেকে ঘৃণীত ও স্বৈরাচার খুনি হাসিনাকে ভারত আশ্রয় দিয়েছে। এতে আরো স্পস্ট যে ভারত সন্ত্রাসীদের আশ্রয় প্রশ্রয় দেয় বলে উল্লেখ করেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলন থেকে রাতের অন্ধকারে তাবলীগ জামাতের ঘুমন্ত নিরীহ সাথীদের উপর অতর্কিত হামলাকারী সাদপন্থী সন্ত্রাসীদের অবিলম্বে গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা, রাজশাহী মহানগর ও রাজশাহী জেলার সকল মসজিদে তাদের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা, সাদপন্থী সন্ত্রাসীদের গডফাদার ইঞ্জিনিয়ার ওয়াসিফ, তার ছেলে ওসামা, জিয়া বিন কাসিম, আব্দুল্লাহ মানসুর, রেজা আরিফ, সায়েম সহ সকল গডফাদারকে অনতিবিলম্বে গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান, রাজশাহী মহানগর ও রাজশাহী জেলা থেকে যেসব সাদপন্থী সন্ত্রাসী ১৮ ডিসেম্বর টঙ্গীর ইজতিমা ময়দানে সন্ত্রাস।
এছাড়াও লুটতরাজ ও হত্যা কার্যক্রমের সাথে জড়িত ছিল তাদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শান্তি এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এর জননিরাপত্তা বিভাগ হতে স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপন মতে কেবলমাত্র মাওলানা মোহাম্মদ জুবায়ের অনুসারী যাহা তাবলীগ জামাত বাংলাদেশ (শুরাই নেযাম) কাকরাইল মসজিদ, ঢাকায় শুবগুজারিসহ রাত্রিযাপন ও অন্যান্য কার্যক্রম চালাতে পারবে এবং ভারতের মাওলানা সাদ গ্রুপের অনুসারীরা ২৭ ডিসেম্বর হতে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা প্রদানের কারণে সারা বাংলাদেশের মসজিদ গুলিতে সাদ গ্রুপের প্রবেশ ও আমল নিষিদ্ধ করার দাবী জানানো হয়।
এ সময়ে উপস্থিত ছিলেন সমন্বয়ক মাসুম বিল্লাহ, ওলামা সদস্য মাওলানা ইমরান উদ্দিন, হাফেজ আব্দুল মান্নান, মুফতি আতিকুর রহমান, মাওলানা আবু সাইদ, মুফতি নাইমুল হাসান ও মাওলানা আবু তালহা। এছাড়াও জুবায়ের অনুসারী শত শত মুসল্লীবৃন্দ।