নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহীতে ব্যক্তিমালিকানাধীন সম্পত্তি জেলা প্রশাসক কর্তৃক মির্জাপুর ইসলামিয়া কলেজকে লিজ দেয়ার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলনে করেছে মির্জাপুরের একটি ভূক্তভোগী পরিবার। ঐ সম্পত্তির মালিকগণ রাজশাহীর মির্জাপুরে বসবাস করলেও তাদের ভারতীয় দেখিয়ে জমি লিজ দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টায় রাজশাহী সিটি প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন তোজাম্মেল হোসেন। তিনি উল্লেখ করেন রাজশাহী জেলার উপজেলা- পবা, মৌজা: মির্জাপুর, জেএল নং- ১৫০, এসএ খতিয়ান নং- ৩৮৭, দাগ নং ২১৪, পরিমান: ০.৭৫০০ একর, সম্পত্তির মালিক ছিলেন অন্নদা কুমার সরদার দিং। এছাড়াও আরএস খতিয়ান নং-১০, দাগ নং- ১৭৪, জমির পরিমান- ০.৭৫০০ একর সম্পত্তির মালিক ছিলেন অবনী কুমার সাহা দিং।
গত ২৬-০৯-১৯৮৩ইং তারিখে রাজশাহী সদর সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে রেজিস্ট্রিকৃত ১৬৬১৩, ১৬৬১৪ ও ১৬৬১৫ নং বিক্রয় কবলা দলিল মূলে উক্ত আরএস রেকর্ডিয় প্রজা অবনী কুমার সরদার দিং এর নিকট হতে ০.০২৭৫ একর, ০.০২৭৫ একর, ০.০২৭৫ একর মোট ০.০৮২৫ একর সম্পত্তির মালিক হন আব্দুল জলিল। এরপর আব্দুল জলিল এর নিকট হতে গত ১৯-০৪-১৯৮৭ইং তারিখে রাজশাহী সদর সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে রেজিষ্ট্রিকৃত ৭৪৫৩ নং বিক্রয় কবলা দলিলে রেজিয়া সুলতানা উক্ত দাগে ০.০৪১২৫০ একর এবং উক্ত তারিখে ৭৪৫৪ নং বিক্রয় কবলা দলিলে উক্ত দাগে ০.০৪১২৫০ একর সম্পত্তির মালিক হন দৌলতুন্নেসা।
তিনি আরো উল্লেখ করেন রেজিয়া সুলতানা ও দৌলতুন্নেসা হতে গত ২১-০৫-১৯৯২ইং তারিখে রাজশাহী সদর সাব-রেজিষ্ট্রি অফিসে রেজিস্ট্রিকৃত ৫২২৬ নং বিক্রয় কবলা দলিল মূলে উক্ত দাগে ০.০৮২৫ একর সম্পত্তির মালিক হন খেলেজান বেগম। খেলেজান বেগম বোয়ালিয়া সেরেস্তায় ১৭৮/৯-১/৯২৯২ নং খারিজ কেসের মাধ্যমে ৩৯৫ নং প্রস্তাবিত খতিয়ান মূলে ৫৫০ নং জমি বন্দিতে বাংলা ১৪০৮ সন পর্যন্ত খাজনাদি পরিশোধ করেন।
তিনি বলেন, গত ০২-১২-৯৮ইং তারিখে রাজশাহী সদর সাব-রেজিষ্ট্রি অফিসে রেজিষ্ট্রিকৃত ১৩৯৯০ নং বিক্রয় কবলা দলিল মূলে আরএস রেকর্ডিয় প্রজা শ্রী অবনি কুমার সরকার, অরুন কুমার সরকার ও অমল কুমার সরকারের, উভয়ের পিতা- মৃত অন্নদা কুমার সরকার নিকট হতে উক্ত দাগে ০.১১৫৫ একর সম্পত্তির মালিক হন ফকির মোহাম্মদ মন্ডল, তুর্জেমা খাতুন, মর্জিনা খাতুন। উক্ত সম্পত্তি বোয়ালিয়া সেরেস্তায় ২১৭৭/৯-১/৯৮৯৯ নং খারিজ কেস মূলে ৮০৭ নং প্রস্তাবিত খতিয়ানে নিজ নাম লিপিবন্ধ করিয়া ৯৩৯ নং জমা বন্দিতে বাংলা ১৪১৫ সন পর্যন্ত খাজনাদি পরিশোধ করেন।
গত ২৬-০৯-৮৩ইং তারিখে রাজশাহী সদর সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে রেজিস্ট্রিকৃত ১৬৬১২ নং বিক্রয় কবলা দলিল মূলে আরএস রেকর্ডিয় প্রজা শ্রী অবনী কুমার দিং এর নিকট হতে উক্ত দাগের ০.০৬৬০ একর সম্পত্তির মালিক হন মোহাম্মদ ফকির মন্ডল। সেই মোতাবেক বোয়ালিয়া সেরেস্তায় ১০৫৩/৯-১/৮৩৮৪ নং খারিজ কেস মূলে ৭৪৬ নং প্রস্তাবিত খতিয়ানে নিজ নাম লিপিবদ্ধ করত: ৮৭৮ নং জমা বন্দি মূলে খাজনাদি আদায় করেন। কিন্তু এরপরেও সরকার তাদের সম্পত্তি কিভাবে ভিপি করে।
লিখিত বক্তব্যে তিনি আরো উল্লেখ করেন শ্রী অবনি কুমার সরকার, অরুন কুমার সরকার ও অমল কুমার সরকার বাংলাদেশে বসবাস করছেন। তারা কখনো ভারতে যাননি। গেছেন অমূল্য কুমার সরকার। তার সম্পত্তি ভিপি হতে পারে। কিন্তু রাজশাহী জেলা প্রশাসক অমূল্য সরকারের সাথে বাংলাদেশে বসবাসকারী ও যাদের নিকট হতে তারা জমি ক্রয় করেছেন তাদেরকেও ভারতীয় দেখিয়ে তাদের ক্রয়কৃত সম্পত্তি লিজ দিয়েছে। আর.এস রেকর্ড অনুযায়ী ঐ সম্পত্তির মালিক হচ্ছেন শ্রী অবনি কুমার সরকার, অরুন কুমার সরকার ও অমল কুমার সরকার। কিন্তু এস.এ রেকর্ডে যার খতিয়ান নং-৩৮৭, মূলে ঐ সম্পত্তির মালিক দেখিয়েছে প্রজা ঋষিকেশ সরকারকে। এরপর জেলা প্রশাসক ঐ সম্পত্তি অত্র কলেজকে লিজ দিয়েছেন। কিন্তু মজার বিষয় হচ্ছে সর্বশেষ আর.এস খতিয়ান-১০ এ ঋষিকেশ সরকারের নামে কোন সম্পত্তি নাই।
আর.এস খতিয়ান না দেখে বা জেলা প্রশাসক অসাধুপথ অবলম্বন করে তাদের সম্পত্তি কলেজের নামে লিজ দিয়েছে। যাহা সম্পূর্ন অবৈধ ও অন্যায়। তারা এই লিজের তীব্র প্রতিবাদ জানান। সেইসাথে তাদের ক্রয়কৃত জমির লিজ বাতিল করার জোর দাবী জানান।
উল্লেখ্য রাজশাহী কোর্টে লিজ প্রদানকৃত প্রতিষ্ঠা ও কলেজ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে এই সম্পত্তি নিয়ে মামলা চলমান রয়েছে। ২০১২ সরকার ভূমি সংক্রান্ত একটি গেজেট পাশ করে। সেই গেজেটে ভূলক্রমে (ক) তপশিলে উঠে যায়। এর বিরুদ্ধে আমি ট্রাইব্যুনাল কোর্টে মামলা চলামন। যার মমলা নং-১৭৬/১২ এবং লিজ বাতিল ও এনজামশান মামলা, যার নং- ১৬৭/১৫। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ভগ্নিপতি আব্দুল আলিম ও ভাতিজা হাসিবুল হাসান।