নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহীর লক্ষ্মীপুর বাকীর মোড়ে এক বাড়িতে রাতের অন্ধকারে হামলা, ভাঙ্গচুর, অগ্নিসংযোগ ও মারপিটের অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভূক্তভোগি পরিবারের সদস্যরা। শুক্রবার বাদ আসর বাকীর মোড় নিজ বাড়িতে সংবাদ সম্মেলন করেন ছাত্রদল রাজপাড়া থানার সাবেক সভাপতি, মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি, যুবদল মহানগর সাবেক সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমানে রাজপাড়া থানা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক রুহুল আমীন বাবলু।
বাবলু বলেন, তিনি ছোটবেলা থেকে জাতীয়তাবাদী দলের বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃত্ব দেন। এখনো তিনি নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন। পতিত আওয়ামী লীগ আমলে প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রামে তিনি সক্রিয় ছিলেন। মামলা, হামলায় তিনি জর্জড়িত। আওয়ামী লীগ ও পুলিশের অত্যাচার ও নির্যাতনে তিনি রাতে বাড়িতে ঘুমাতে পারেননি। তিনি ছাত্রজীবন থেকে জাতীয়তাবাদী দলের আদর্শে আদর্শিত হয়ে নানা ঘাত প্রতিঘাট পেড়িয়ে দল করে আসছেন। অথচ এই সময়ে এসে তাঁর বাড়িতে হামলা, মুলত তাঁকে এবং তাঁর পরিবারের সকলকে মেরে ফেলার জন্যই এই ঘঠনা ঘটিয়েছে নেতা নামধারী ঐ সন্ত্রাসীরা।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি উল্লেখ করেন বর্তমান রাজপাড়া থানা বিএনপির কমিটি গঠনের পর কিছু আওয়ামী লীগের এজেন্ট নতুন কমিটিতে স্থান পায়। তাদের বিষয়ে প্রতিবাদ করায় বিএনপির কিছু পদধারী নেতা যারা আওয়ামী লীগের দোসর ও ক্যাডার তাদের নেতৃত্বে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত আনুমানিক ১২টার দিকে তাঁর বাসায় অতর্কিতভাবে সংঘবদ্ধ ৩০-৪০ জনের একটি সন্ত্রাসী দল ধারালো অস্ত্র, পেট্রোল, আগ্নেয়াস্ত্র, লাঠি ও পাইপ ইত্যাদি নিয়ে তাঁর ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের উপর হামলা চালিয়ে, ভাংচুর, অগ্নি সংযোগ করে তাঁর ছেলে-মেয়ে, স্ত্রীসহ সকলকে পিটিয়ে আহত করে এবং অকথ্য ভাষায় গালাগালাজ ও লুটপাট চালায়।
পরে তারা তাঁর বাসায় থাকা ইউনিকর্ন মোটর সাইকেল যাহার নম্বর রাজ মেট্রো ল-১১০৮০৯ পুড়িয়ে দেয় এবং পেট্রোল দিয়ে বাড়িতে আগুন জ্বালিয়ে দেয়। সে সময়ে তারা বলে বাবলুর বাড়ীর সকল সদস্যকে পুড়িয়ে মেরে ফেলবে বলে চিৎকার করতে থাকে। যা আশে পাশের প্রতিবেশীরা শুনতে পায়। এক পর্যায়ে প্রতিবেশীরা এগিয়ে আসলে তারা ৩ থেকে ৪ রাউন্ড গুলি করে এবং গালাগালাজ করতে করতে পালিয়ে যায় বলে তিনি উল্লেখ করেন। তাঁর বাড়িতে এসি, ইন্টারনেট এর মেশিন, আসবাবপত্র ভাঙ্গচুরসহ, সোনার চেইনসহ অন্যান্য মালামাল ও নগদ অর্থসহ মোট সাড়ে চৌদ্দ লক্ষ টাকার ক্ষতি ও নগদ অর্থ তারা নিয়ে যায় বলে জানান তিনি।
সাংবাদিক প্রশ্নের জবাবে বাবলু বলেন, রাজপাড়া থানা পুলিশ রাতেই তার বাড়িতে আসেন এবং ভিডিও করে নেন। এ ঘটনায় ঘটনায় সরাসরি জড়িতদের আসামী করে রাজপাড়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন বলে জানান বাবুল। আসামী কারা কারা জানতে চাইলে তিনি বলেন, রাজপাড়া থানা বিএনপি’র সদস্য সচিব আমিনুল ইসলাম, রাজপাড়া থানা বিএনপি’র সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও বর্তমান আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মুরাদ পারভেজ পিন্টু, যুগ্ম আহ্বায়ক শাহিন, আওয়ামী লীগের দোসর তুহিন, নাঈম ও খিচ্চুসহ মোট সাত জনের নাম এজাহার ভূক্ত এবং আরো ১৫-২০জনকে অজ্ঞাতদের আসামী করে এই মামলা দায়ের করেছেন বলে উল্লেখ করেন তিনি। দ্রুত সময়ের মধ্যে আসামীদের আটক করে আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তির দাবী জানান তিনি।
শেষ খবর লেখা পর্যন্ত মামলার বিষয়ে মোবাইলে জানতে চাইলে রাজপাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ আশরাফুল আলম বলেন, মামলা হয়েছে কিনা তিনি এই মুহুর্তে বলতে পারছেন না। অফিসে গিয়ে দেখবেন। মামলা হলে তদন্ত সাপেক্ষে দ্রুত ব্যবস্থা নেবেন। তবে ঘটনাস্থল পুলিশ পরিদর্শন করেছেন বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।
এ সময়ে উপস্থিত ছিলেন রুহুল আমিন বাবলুর স্ত্রী নাদিরা বেগম ও মেয়ে সহ বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগি সংগঠনের অন্যান্য নেতাকর্মীবৃন্দ।